ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দেখানেই বৃষ্টির, ভাদ্রের খরায় ব্যয় বেড়েছে আমন চাষিদের

হাসানুজ্জামান হাসান, কালীগঞ্জ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৪, ০৭:২৫ পিএম

দেখানেই বৃষ্টির, ভাদ্রের খরায় ব্যয় বেড়েছে আমন চাষিদের

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

‘‘আষাঢ়ের ঝরা, শ্রাবণের ধারা” কোনটারই দেখা মেলেনি এবছর। ভাদ্র মাসে কড়া খরা তার নমুনা বুঝতেই পারছেন কৃষকরা। বর্ষা মৌসুমে সেচবিহীন হওয়ায় রোপা আমন ধান চাষিদের জন্য ছিলো লাভ জনক মৌসুম। কিন্তু এ বছর ভাদ্রের তীব্র খরা আর তাবদাহে লালমনিরহাটের আমন চাষিদের ব্যায় বেশি হওয়া কৃষকের কপালে পড়ছে চিন্তার ভাঁজ। শুধু ধাঁন ক্ষেতই নয়, তীব্র খরায় পুড়ছে  আগাম জাতের  শীতকালীন শাক সবজীসহ বিভিন্ন ফসলি জমি।

সরেজমিনে দেখা যায়, লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলায় প্রায় এক মাসের অধিক সময় ধরে বেশিরভাগ এলাকায় দেখা মেলেনি বৃষ্টির। এতে সেচ খরচ বেড়েছে। কোথাও ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হলেও ভেজাতে পারেনি তপ্ত মাটি।  এ বছর তীব্র খরা আর অনাবৃষ্টির কারণে ডিজেল চালিত ইঞ্জিন দিয়ে ক্ষেতে সেচ দিতে হচ্ছে কৃষকদের। তীব্র খরা আর তাবদাহের প্রভাব পড়েছে রোপা আমন ধাঁনক্ষেত সহ শীতকালীন সবজি ক্ষেতে।

কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা চাঁপারতল এলাকার কৃষক আহেদুল ইসলাম জানায়, এই মৌসুমে রোপা আমন ধান আবাদ কৃষকের জন্য লাভজনক মৌসুম। আমি ৩ বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি। সেচ দিচ্ছি শ্যালো মেশিন দিয়ে। এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প আর ডিজেল চালিত ইঞ্জিন দিয়ে সেচ দিতে হচ্ছে অনেক কৃষককে। ঠিকমত বিদ্যুৎ না থাকায় ডিজেল চালিত ইঞ্জিনের চাহিদা বাড়ছে। এতে অনেকটা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে আমাদের। ধানের বাজার দর ভাল না থাকলে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের কৃষক হারেচ মিয়া বলেন, চলতি আমন ফসলের শুরু থেকে সেচের ব্যবস্থা সচল রাখতে হচ্ছে আমাদের। জ্বালানি তেল ডিজেল ও রাসায়নিক সারের মূল্যবৃদ্ধিতে ফসল উৎপাদনের তুলনায় খরচের পাল্লা ভারী। এবার বৃষ্টি না থাকায় খুব দুশ্চিন্তায় পড়েছি। মানুষের সেচপাম্প থেকে ঘণ্টায় ১০০ টাকা দরে জমিতে পানি দিচ্ছি।

আমি এবছর ৭ দোন জমিতে রোপা আমন ধাঁন রোপণ করেছি। কিন্তু এবছর বৃষ্টি কম থাকায় আমাদের সার ও সেচ বাবদ কিছুটা বাড়তি খরচ হচ্ছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে ফসলে পোকার আক্রমণ। ঘন ঘন কীটনাশক স্প্রে দিতে হচ্ছে। এসব কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষরা।

কালীগঞ্জ উপজেলার চলবালা ইউনিয়নের কৃষক মোজাম মিয়া বলেন, এবছর অতিরিক্ত রোদ আর গরমে ধানক্ষেতের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। যারফলে বাড়তি সেচ দিতে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে ধানক্ষেতে সার, ঔষুধ কম লাগবে।

লালমনিরহাট কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) মোঃ আলীনূর রহমান জানায়, এ বছর জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৮৬ হাজার ৬‍‍`শ ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষ হয়েছে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছি। আমন মৌসুমে বৃষ্টি হওয়ায় এই মৌসুম ছিলো কৃষকদের জন্য লাভ জনক একটি মৌসুম। কিন্তু এ বছর তীব্র খরা আর তাবদাহ বেশি হওয়ার কারণে জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে কিছুটা বেশি। এ জন্য কিছুটা বাড়তি খরচ হচ্ছে কৃষকদের। তবে এই খরায় ধাঁনের তেমন কোন ক্ষতি হবেনা বলে জানান তিনি।

আরবি/জেডআর

Link copied!