ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

বিপ্লব কুমার সরকারের দেশত্যাগ নিয়ে ধোঁয়াশা

লালমনিরহাট ও পাটগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৪, ০৫:২৬ পিএম

বিপ্লব কুমার সরকারের দেশত্যাগ নিয়ে ধোঁয়াশা

বিপ্লব কুমার সরকার । ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

বিপ্লব কুমার সরকার বাংলাদেশ পুলিশের একজন বিতর্কিত কর্মকর্তা যিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। ছাত্র আন্দোলনে তার নেতৃত্বেই ছাত্রদের উপর ঢালাউ ভাবে গুলি চালানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আর কারো নজরে আসেনি পুলিশের এই কর্মকর্তা। সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিক গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে অবৈধ পাচারকারীদের সহায়তায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের সীমান্ত পথ দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার। এতে বলা হয়েছে গত সোমবার ৯ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। যার কোনো সত্যতা পাটগ্রাম থানা পুলিশ পায়নি। এদিকে পাচারকারীদের কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (ফেসবুকে) ছড়িয়ে পড়লে এ ঘটনা নিয়ে পুরো জেলাজুড়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠে। পরে এ ঘটনায় সন্দেহভাজন জড়িত ব্র্যাক ব্যাংকের পাটগ্রাম শাখার ম্যানেজার পঙ্কজ কুমার মদনকে মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে আটক করে স্থানীয়রা। আটকের পর তাকে পাটগ্রাম থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয় । পুলিশ রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো তথ্য না পেলে রাতেই তাকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। 

এদিকে বিষয়টি নিয়ে নিবিড়ভাবে খতিয়ে দেখছেন বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ৫১ রংপুর ব্যাটালিয়নের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপের কথোপকথন থেকে জানা যায়, সোমবার বিকেলে দহগ্রামের ডাঙ্গাপাড়া ওলেরপাড় এলাকার ওসমান গণির ছেলে মানব পাচারকারী শুভ (২৮) রংপুরে টাকা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে। ওই সময় স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ টেলিফোনের মাধ্যমে পাটগ্রামের বিএনপির কয়েকজন নেতার সাথে শুভর ব্যাপারে কথা বলেন। এ সময় শুভও মোবাইলে কথা বলেন। কথা বলার একপর্যায়ে শুভ বলেন, ‘সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সরকারকে দহগ্রামের সীমান্ত দিয়ে ভারতে পার করে দেওয়া হয়েছে। এ সময়  ব্র্যাক ব্যাংক পাটগ্রাম শাখার ম্যানেজার পঙ্কজ ও দহগ্রামের মমিন, ফারুক, শামীম,আকছেদুল রাজিব, মকছেদুল ও লম্বু শাহীনের সহায়তায় বিপ্লবকে সীমান্ত দিয়ে দেশ ত্যাগ করানো হয়। পার্শ্ববর্তী জেলা নীলফামারীর জলঢাকা মীরগঞ্জের রুবেল, মিঠু, নিশাদ, বিপ্লবকে পাটগ্রামে আনতে সহায়তা করেন। পাটগ্রামে আসার পর বিপ্লব প্রায় এক ঘন্টা পঙ্কজ কুমার মদনের বাড়িতে অবস্থানও করেন। প্রায় দেড় লাখ টাকার চুক্তিতে বিপ্লবকে দহগ্রামের সীমান্ত দিয়ে পার করা হয়েছে বলে ওই অডিও ক্লিপ থেকে জানা গেছে।

পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাঈদ চৌধুরী এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘ইতিমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি দৈনিকে যে সংবাদ প্রকাশ করেছে এর সত্যতা আমরা খুঁজে পাইনি। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রাখছি। বিজিবিও তদন্ত শুরু করেছে। ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি তাই শর্ত সাপেক্ষে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে যখনই ডাকা হবে তিনি তখনই আসবেন। পুরো বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি, তদন্ত রিপোর্টে এর সত্যতা পাওয়া গেলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। 

আরবি/জেডআর

Link copied!