বৃহস্পতিবার, ০৩ এপ্রিল, ২০২৫
আন্ত:ধর্মীয় সংলাপে বক্তারা

ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় স্থানীয় পর্যায়ে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে হবে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২৪, ০৫:০২ পিএম

ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় স্থানীয় পর্যায়ে শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে হবে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পৃথিবীর সকল মানুষই এসেছে একই যায়গা থেকে, সেক্ষেত্রে বৈষম্য করার কোন সুযোগ নেই। একটা সময় ছিলে যখন কেউ ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করতো না, আমাদেরকে পূর্বের যায়গায় ফিরে যেতে সকলকে প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া দরকার, প্রকৃত ধার্মিক কখনো সহিংস হতে পারে না। এ করণে ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষায় স্থানীয় পর্যায় পর্যন্ত ধর্মের শান্তির বাণী ছড়িয়ে দিতে হবে।

ঠাকুরগাঁওয়ে সার্ভিস ইমারজেন্সি ফর রুরাল পিপল এর উদ্যোগে আন্তঃধর্মীয় সংলাপে বক্তরা এসব কথা বলেন। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

সার্প এর নির্বাহি পরিচালক হিমাংসু চন্দ্র চন্দের সভাপতিত্বে ও মো. মনিরুজ্জামানের সঞ্চালনায় সংলাপে আলোচক ছিলেন- ঠাকুরগাঁও কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব আলহ্জা মো. খলিলুর রহমান, হিন্দু মহাজোট ঠাকুরগাঁওয়ের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সত্যজিত কুন্ডু, ব্যাপ্টিস্ট চার্চ’র পাস্টর পিন্টু দাস, বৌদ্ধভিক্ষু সমানন্দ ভিক্ষু, রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান পৃষ্টপোষক বাসুদেব ব্যানার্জিসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।

বিশেষ অতিথী ছিলেন কার্ক ইন এক্টি এর পোর্টফোলিও কোঅর্ডিনেটর ম্যাটিল্ডা টিনা বৈদ্য।  প্রধান আতিথী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব খাদিজা তাহিরা।    

খলিলুর রহমান বলেন, পৃথিবীর সকল মানুষই এসেছে একই যায়গা থেকে, সেক্ষেত্রে বৈষম্য করার কোন সুযোগ নেই। একটা সময় ছিলে যখন কেউ ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করতো না, আমাদেরকে পূর্বের যায়গায় ফিরে যেতে সকলকে প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া দরকার, প্রকৃত ধার্মিক কখনো সহিংস হতে পারে না। সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু না বরং সকলকে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দেখতে হবে।

সত্যজিত কুন্ড বলেন, রাজনীতিতে ধর্মের ব্যাবহার শুরু হয়েছে, যা সম্প্রীতি বজায় রাখতে বাধার সৃষ্টি করছে। রাজনীতির মধ্য দিয়ে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করা হয়েছে। সাধারণ জনগনকে যুক্ত করে আন্তঃধর্মীয় সংলাপগুলি প্রত্যান্ত গ্রামে নিয়ে যাওয়া জরুরি।

সমানন্দ ভিক্ষু বলেন, মানবজাতির ধর্ম একটাই, কোন ভেদাভেদ সৃষ্টি না করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। নৈরাজ্য ও বিভেদ সৃষ্টি যেন না হয় সেজন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। ধর্ম, বর্ণ বিভাজন করলে শুধুই বিভাজন তৈরী হবে, বিগত দিনে কি হয়েছে সেটি বিবেচনা না নিয়ে বরং শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে যাওয়ার জন্য কাজ করতে হবে। 

বাসুদেব ব্যানার্জি বলেন, কোন ধর্মই সহিংসতাকে সমর্থন করে না, কোন ভেদোভেদ করে না। ২/৩% মানুষ ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ঠের চেষ্টা করছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয় প্রয়োজন।

বিশেষ অতিথি ম্যাটিল্ডা টিনা বলেন, মানুষের যে বৈচিত্র রয়েছে সেটিই আমাদের শক্তি, আমাদের ভেদাভেদ ভুলে মানবিক হতে হবে। এ ধরনের কর্মসূচী ভুল-ভ্রান্তি দূর করে, সহনশীলতা বৃদ্ধি করে, এধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়নে সরকার, স্থানীয় সংগঠনসহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

খাদিজা তাহিরা বলেন, এসমস্য সমাধানে পরিবার থেকে সম্প্রীতির শিক্ষা দেয়া প্রয়োজন। শিুশুকে বিনীত, শ্রদ্ধা ও সহনশীলতার শিক্ষা দিতে পারলে সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি বৃদ্ধি পাবে ও জাতি এগিয়ে যাবে।

আরও উপস্থিত ছিলেন- মুক্তিযোদ্ধা আনিসুল হক চৌধূরী, বিশ্ব ইসলামী মিশনের মো. সাবেদ আলী, বৌদ্ধ বিহার মন্দিরের সভাপতি লক্ষী নারায়ন ওরাও, সালন্দর বিদ্যাপিঠের পৃষ্টপোষক চঞ্চল চৌধুরী, ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির যুগ্ম সভাপতি ওবাইদুল্লাহ মাসুদ, ন্যাজারিন চার্চের পাস্টর ফ্যান্সিস দাসসহ গণমাধ্যমের কর্মীবৃন্দ।

আরবি/ এইচএম

Link copied!