শুরুতেই যাত্রী সংকটে বন্ধ হয়ে গেলো প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনগামী পর্যটকবাহী জাহাজ। আজ বৃহস্পতিবার জাহাজ চলাচলের দিনক্ষণ ঠিক করা হলেও যাত্রী সংকটের কারণে তা পিছিয়ে ১ ডিসেম্বর জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাহাজ মালিক কর্তৃপক্ষ।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সালাহ উদ্দিন আহমেদ জানান, কেয়ারী সিন্দাবাদ নামের একটি জাহাজ কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক নিয়ে যাতায়াতের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছে। জাহাজের ফিটনেস এবং কাগজপত্র পর্যালোচনা করে কেয়ারী সিন্দাবাদকে কক্সবাজার সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কেয়ারী সিন্দাবাদের কক্সবাজার ইনচার্জ নুর মোহাম্মদ সিদ্দিকী বলেন, ‘সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে পর্যটন নিয়ে তাদের জাহাজ সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে যাবে।’
এদিকে, সরকারি সিদ্ধান্তের আলোকে প্রতিদিন সেন্টমার্টিন যেতে পারবেন দুই হাজার পর্যটক।
সম্প্রতি নাফ নদীতে ডুবোচর জেগে ওঠার কারণে নাব্যতার সংকট এবং মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলির কারণে নিরাপত্তার অভাবে আপাতত টেকনাফ থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
গত ১৯ নভেম্বর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সাবরীনা রহমান স্বাক্ষরিত পৃথক অফিস আদেশে সেন্টমার্টিনের পর্যটন নিয়ন্ত্রণে কমিটি গঠন হয়। এই কমিটির সদস্যদের নিয়ে গত ২৭ নভেম্বা সদর উপজেলা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিন্ধান্তে শহরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে’ই সেন্টমার্টিনের জাহাজ যাবে। ওইসময় ঘাট ও জাহাজ পরিদর্শন করেন। সব ঠিক থাকলে আগামী ১লা ডিসেম্বর জাহাজ যাবে।
এদিকে যাতায়ত সীমিতকরণ, ক্রটিপূর্ন ড্রেজিং সহ নানা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও দ্বীপবাসী।
কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী জানান, গঠিত তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে ঘাট পরির্দশন করেছি।সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সেন্টমার্টিনকে রক্ষা করেই পর্যটক ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হবে। সরকার পলিথিন এবং দূষণমূক্ত সেন্টমার্টিন প্রতিষ্ঠা করতে চায় বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সালাহউদ্দিন আরও জানান, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত এবং জাহাজ চলাচলের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মেনে কক্সবাজার শহরে জাহাজ চলাচলের ঘাট নির্ধারণ করা হয়েছে। আর অনুমতি দেওয়া হয়েছে একটি জাহাজকে। আরও জাহাজ অনুমতির জন্য আবেদন করলে যাচাই-বাছাই শেষে একাধিক জাহাজকে অনুমতি দেওয়া যেতে পারে।
সেন্টমার্টিনগামী জাহাজে ওঠার আগে এন্ট্রি পয়েন্টে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের তৈরি করা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে ট্রাভেল পাস নিতে হবে।
ট্রাভেল পাসধারী পর্যটকদের অনুমোদিত জাহাজে ভ্রমণ নিশ্চিত করবে গঠিত কমিটি। পর্যটক ও অনুমোদিত জাহাজে পলিথিন ব্যাগ ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের পণ্য পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পর্যটকেরা সেন্টমার্টিন দ্বীপে পৌঁছার পর কোন হোটেলে থাকবেন, তা লিপিবদ্ধ করার পাশাপাশি রেজিস্টারে সংরক্ষণ করা হবে। এসব বিষয় না মানলে গুনতে হতে হবে জেল-জরিমানা।
আপনার মতামত লিখুন :