রংপুর মহানগরীর একটি মাদ্রাসা থেকে সিয়াম (১১) নামের এক শিশু শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বলাৎকারের পর ওই শিক্ষার্থীকে হত্যা করার অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেছে নিহতের পরিবার। এ ঘটনায় তিনজন শিক্ষকসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) রাতে নগরীর বকুলতলা জান্নাতবাগ মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের তৃতীয় তলার টয়লেট থেকে ওই মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তের উদ্ধৃতি দিয়ে মহানগর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান জানান, ওই মাদ্রাসা থেকে খবর পেয়ে রাতেই আমরা মাদ্রাসায় অভিযান চালাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারি মরদেহ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। সেখানে গিয়ে মর্গ থেকে আমরা মরদেহটি উদ্ধার করি এবং ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাই।
তিনি আরও জানান, শিশু সিয়াম মিঠাপুকুরের বালারহাটের বুজরুক ঝালাই খন্দকারপাড়ার মনোয়ার হোসেন ভুট্টুর পুত্র। সে ওই মাদ্রাসায় লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে থাকতো এবং নাজেরা শাখায় পড়তো। সুরতহাল রিপোর্টে শিশুটির পায়ুপথে রক্ত এবং শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত ও জখমের চিহ্ন রয়েছে।
পুলিশের ধারণা, বলৎকারের পর তাকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তবে সব কিছু ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় মাদ্রাসাটির শিক্ষক বোরহান উদদীন, আব্দুর রহমান, মনোয়ার হোসেন মাহমুদ ও ছাত্র মিজানুর রহমান ও মোখলেছ উদ্দিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এদিকে ঘটনাস্থল রেকি করেছে সিআইডির বিশেষ টিম। সেখান থেকে বিভিন্ন ধরণের আলামত জব্দ করেছে তারা।
গোলাম রসুল নামে মাদ্রাসাটির এক শিক্ষক জানান, মাদ্রাসাটির মক্তব শাখা শিক্ষককের ভাতিজা হলেন নিহত সিয়াম। প্রথতে তিনিই তাকে টয়লেটে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বোরহান উদ্দিন নামের তার এক সহপাঠি বলেন, আমরা আসরের নামাজের পর একসাথে খেলেছি। মাগরিবের নামাজের আগে দোয়াও করেছি একসাথে। কিন্তু মাগরিবের নামাজের দোয়ার পর দেখি সিয়াম নাই। তারপর হুজুর শাপলা পর্যন্ত ওকে খুঁজে এসেছে। পরে আমরা খোঁজাখুঁজি করি। পরে হুজুর তিনতলার টয়লেটে এসে দেখে সিয়াম পড়ে আছে। এসময় তার মাথা মোচড়ানো এবং জিহবা বের করা ছিল।
এ ঘটনায় পিতা মনোয়ার হোসেন ভুট্টু বাদি হয়ে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটা থেকে সন্ধা সাড়ে ৬টার মধ্যে যেকোন সময় জোরপূর্বক বলৎকারের পর গলাটিপে হত্যা করেছে। এরপর ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে অন্য পায়জামা ও জামা পরিয়ে তিনতলার টয়লেটে গিয়ে রাখে এবং অসুস্থ হওয়ার কথা বলে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসির দাবি করেছেন তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :