কুষ্টিয়ার নানারকম সবজি বিক্রি করছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্ররা। সবজির বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙতে এবং ন্যায্যমূল্যে কেনাবেচায় ক্রেতা-বিক্রেতাদের উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার হলবাজার-থানামোড় সড়কের পৌর তহবাজারের পাশে ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রির অস্থায়ী দোকান বসিয়েছেন তারা। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। গত মঙ্গলবার থেকে চলছে দোকানটি। এতে ব্যাপক খুশি ক্রেতা ও ছাত্ররা।
জানা গেছে, সড়কের পাশে হরেকরকম শাক ও সবজির পসরা সাজিয়েছেন একঝাঁক ছাত্র। ব্যানারে লেখা ‘ন্যায্যমূল্যে সবজি বিক্রয়’। ন্যায্যমূল্যে সবজি কিনতে ভিড় করেছেন ক্রেতারা।
এসময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্র ফাবিহা ইবনাথ বলেন, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ক্রেতাদের জিম্মি করে চড়া দামে সবজি বিক্রি করে। বাজারে গেলেই ক্রেতাদের নাভিঃশ্বাস উঠে যাচ্ছে। সেজন্য বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে এবং ক্রেতা-বিক্রেতাদের উৎসাহ প্রদানে ন্যায্যমূল্যে সবজির অস্থায়ী দোকান দেওয়া হয়েছে।
রিপন হোসেন নামের আরেক ছাত্র বলেন, প্রতি কেজিতে মাত্র ২ টাকা লাভে সবজি বিক্রি করা হচ্ছে। একই সবজি বিক্রি করে ব্যবসায়ীরা ৮-১০ টাকা লাভ করছেন। আমরা মূলত এই সিন্ডিকেট ভাঙতে চাই। ছাত্র আশিকুর রহমান বলেন, প্রতি কেজি আলু ৬৫ টাকা, মরিচ ৯৫ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা, পেঁয়াজ ১২৫ টাকা, শসা ৪২ টাকা, পটল ৬০ টাকা, উস্তে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। যা বাজার থেকে ৫-২০ টাকা কম।
পৌরসভার দুর্গাপুর এলাকার বেসরকারি চাকুরিজীবি সাহিদা আক্তার বলেন, বাজার থেকে এক কেজি আলু কিনেছিলাম ৭০ টাকায়। ছাত্রদের কাছ থেকে কিনলাম ৬৫ টাকায়। সীমিত লাভে সবজি কিনতে পেরে খুশি তিনি।
হাফিজুর রহমান নামের আরেক ক্রেতা বলেন, বাজার থেকে কম দামে ছাত্রদের কাছ থেকে আলু, পটল, মরিচ, শসা ও শাক কিনেছি। ছাত্রদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সীমিত লাভে সবজি বেচা উচিৎ।
বাজারে প্রতিকেজি আলু ৭০, কাঁচা মরিচ ১০০, বেগুন ৮০, সিম ১০০, ফুলকপি ১০০, ঝিঙে ৪০, কচু ৭০, শসা ৫০, পেঁয়াজ ১৩০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এসময় সবজি বিক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি সবজি বিক্রি করে ৮-১০ টাকা লাভ করে। তার ভাষ্য, পাইকারীতে কেনা মালে কিছু পচা থাকে, নষ্ট হয়ে যায়। সেজন্য বেশি লাভে বিক্রি করতে হয় তাদের।
কুমারখালী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান আলী বলেন, বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে প্রতিদিন ৬৫ কেজি আলু, ২০ কেজি পেঁয়াজ, ৫ কেজি মরিচ, ৫ কেজি করে পটল, শসা, ঝিঙে ও বেগুন, ১৬ আটি করে লাল ও পুঁই শাক এবং ৩ খাঁচি করে ডিম ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
ছাত্রদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কোনো কারসাজি হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :