শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মাজহারুল ইসলাম, সোনারগাঁ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৪, ০৩:১৬ পিএম

সফল পেঁপে চাষি রেজাউল

মাজহারুল ইসলাম, সোনারগাঁ

প্রকাশিত: অক্টোবর ৮, ২০২৪, ০৩:১৬ পিএম

সফল পেঁপে চাষি রেজাউল

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পেঁপে পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ পেপে ফলের চাহিদাও অনেক। হোক তা কাঁচা বা পাকা। সবজি জাতীয় এ ফলের কদর রয়েছে দেশজুড়ে। পেঁপে চাষে একদিকে যেমন পুষ্টির চাহিদা মেটায় অন্যদিকে অর্থনৈতিক ভাবেও সাবলম্বী হওয়া সম্ভব। তেমনি একজন সফল চাষী হিসেবে আলোচনায় এসেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ পৌরসভার বালুয়া দীঘির পাড় এলাকার মৃত খাদেম আলীর ছেলে রেজাউল করিম।

কৃষক রেজাউল করিম দীর্ঘদিন ধরেই লিচু ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলো। পাশাপাশি তিনি সারা বছরই কৃষিকাজ করতেন। ১৫ হাজার টাকা খরচ করে গড়ে তোলা পেঁপে বাগান থেকে এরই মধ্যে লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করা হয়েছে। আরও পেঁপে বিক্রি করা যাবে বলে আশা করছেন তিনি। এতে করে ১ বছরে খরচ বাদে তার লাভ হবে প্রায় ২ লাখ টাকার ও বেশি। সফল এ পেপে চাষী রেজাউল করিমের মুখে এখন ফুটেছে হাসি হয়েছেন সফল লাখপতি। তার সফলতা দেখে গ্রামের অনেকেই পেঁপে বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। সারি সারি পেঁপে গাছ। প্রতিটি গাছে অসংখ্য কাঁচা পেঁপে ঝুলে আছে। গাছ থেকে পেঁপে তুলে বিক্রি করলেও গাছের পেঁপে যেন শেষই হচ্ছে না। বাড়ির পাশে প্রায় ৫৫ শতাংশ জমিতে পেঁপে চারা রোপণ করে তিনি এ পেঁপে বাগান গড়ে তুলেছেন।

পেঁপে চাষী রেজাউল করিম আরো জানান, দীর্ঘদিন ধরেই পেঁপে চাষ শুরু করি। এবছরও ব্যাপকভাবে পেঁপে চাষ করি। ৫৫ শতাংশ জমি অন্যের কাছ থেকে বাৎসরিক ভাবে ভাড়া নিয়ে প্রায় ৩‍‍`শ এর বেশি পেঁপে চারা রোপন করি। চারা রোপণের পর নিয়মিত পরিচর্যা ও সার-সেচ দেয়ায় প্রতিটি গাছে ফলন আসে ৭০ থেকে ৮০ টিরও অধিক পেঁপে। পরিপূর্ণ অবস্থায় প্রতিটি পেঁপের ওজন হয় প্রায় ২ কেজি। সবোর্চ্চ একটি পেঁপের ওজন হয় ৩ কেজি।

স্থানীয় অনেক পাইকার ও ব্যবসায়ীরা তার বাগান থেকে কাঁচা ও পাকা পেঁপে নিতে আসেন। তিনি আরও বলেন, চারা লাগানোর ৩ মাসের মাথায় গাছে ফল ধরলেও তা ছিঁড়ে দেই। পরে আবারও ফল ধরলে ৮ মাসের মাথায় গাছ থেকে পেঁপে তোলা শুরু করি। বাজারে কাঁচা পেঁপের তুলনায় পাকা পেঁপের চাহিদা বেশি। দামও বেশ ভালো। তার নিজের বাগান থেকে পেঁপে বীজ সংগ্রহ করা হয়। তার বাগানে পেঁপে বেশ সুমিষ্ট হওয়ায় বাজারে এর চাহিদাও ব্যাপক এমনটি জানিয়ে তিনি বলেন, পেঁপে বিপণন ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী হওয়া উচিত। বিশেষ করে ব্যাপকভাবে বাজারজাত করা গেলে স্থানীয় কৃষক পেঁপে চাষে আগ্রহী হবে। তিনি তার পেঁপে বাগানের পেঁপে ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। স্থানীয় অনেকে তার বাগান থেকে পেঁপে নিয়ে যান। তিনি আগামীতে আরো দ্বিগুনভাবে এ পেঁপে চাষ বাড়ানোর কথা জানান।

তিনি আরো বলেন, এ পেঁপে চাষে কোন প্রশিক্ষন নেননি। তিনি নিজে নিজে এ পেঁপে চাষ শিখেছেন। বাগান পরিচর্যা তিনি নিজেই করেন। তিনি জানান, বাগানে পেঁপে গাছের চারা রোপণের সময় সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হলেও এখন সম্পূর্ণ জৈব সারই ব্যবহার হয়ে থাকে। স্থানীয় কৃষি অফিস তাকে সব সময় সহযোগিতা করেন। তারা পরামর্শ, সার, কীট নাশক প্রদান করেন। পেঁপে চাষে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন রেজাউল। তিনি সফলও হয়েছেন। রেজাউলের সফলতা দেখে গ্রামের অন্যরাও পেঁপে চাষে উৎসাহ হয়ে পেঁপে বাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। অনেকেই সফল হয়েছেন।

রেজাউল করিম জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে পুষ্টিমানসমৃদ্ধ পেঁপে চাষে ভাগ্য বদলে ফেলা যায়। পেঁপে চাষে অর্থনৈতিকভাবে সরকারি সহযোগিতা পেলে দেশের অনেক বেকার সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।

তিনি মনে করেন, বেকার যুবকরা যদি চাষে অগ্রসর হয় তাহলে তারাও লাভবান হবেন। তিনি এ পেঁপে চাষ করে খুব অল্প সময়ে অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হয়েছেন। তার কর্মজীবন বলতে কৃষিকাজ। তিনি এ পেঁপে চাষের পাশাপাশি তার এ পেঁপে বাগানেই মরিচসহ বিভিন্ন শাক সবজিও চাষ করেন। এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেন পেঁপে চাষ করে। তার বাগানে কালী ও স্থানীয় দেশী জাতের পেঁপে চাষ হয়।

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা জানান, উঁচু জমিতে পেঁপে চাষ করতে হয়। পেঁপে চাষী রেজাউল করিমের সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এখন পেঁপে চাষে ঝুঁকছেন। আমাদের কৃষি অফিস তাকে উদ্বুদ্ধসহ বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকে। পেঁপেতে প্রচুর পুষ্টি উপাদান রয়েছে। পেঁপে চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়াতে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া পেঁপে বাগান করে খুব অল্প সময়েই লাভবান হওয়া যায়।

আরবি/জেডআর

Link copied!