বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম

বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত দুই শিক্ষক

বর্গা শিক্ষক দিয়ে চালাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের পাঠদান

আকাশ মারমা মংসিং, বান্দরবান

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪, ০৪:২৯ পিএম

বর্গা শিক্ষক দিয়ে চালাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের পাঠদান

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রুমা সদর থেকে মাত্র নয় কিলোমিটার দূরে হমক্রী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেই বিদ্যালয় আবার সদর ইউনিয়নের অবস্থান। কাছে থেকেও দীর্ঘ মাস ধরে বিদ্যালয়ে যান না দুই সহকারী শিক্ষক। বরংচ মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকে নিয়মিত বেতন তুলে নিচ্ছেন। তাদের বদলে রাখা হয়েছে বর্গা শিক্ষক। এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই বিদ্যালয়ে সহকারী দুই শিক্ষক হ্লানুচিং খিয়াং ও অংক্যজাই খিয়াং বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, বান্দরবানের রুমা উপজেলাতে ইউএনডিপির স্কুল নামে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ২৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণের জন্য ২০১৭ সালে ২০ ফেব্রুয়ারি ঘোষনা করেন সরকার । তারমধ্যে রয়েছে রুমা সদর ইউনিয়নের হুমক্রী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও একটি। এরপর চলতি বছর জানুয়ারি মাসে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে এই দুই শিক্ষককে পদন্নোতি দেওয়া হয়। বর্তমানে দুই শিক্ষকসহ বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা দাঁড়ায় মোট পাঁচজন। কিন্তু পদন্নোতি পেলেও আরো বাড়তে থাকতে বিদ্যালয়ে পাঠদানে অবহেলা আর অনুপস্থিতির সংখ্যা।

অভিযোগ আছে, এই দুইজন শিক্ষক বান্দরবান থেকে বদলি হয়ে হমক্রী পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগ দিয়েছে। যোগদানে জানুয়ারি মাস থেকে  প্রথম দিকে দুই একদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। তারপর হতে এই দুই শিক্ষকের আর কোনো হদিস নেই। বিদ্যালয়ের দীর্ঘমাস অনুপস্থিত থেকেও ঠিকই সময়ে বেতন উত্তোলনের পাশাপাশি বর্গা শিক্ষককে দিয়ে ক্লাসে পাঠদান করান প্রতিনিয়ত। যার ফলে গত এক যুগের বেশি সময় ধরে ওই বিদ্যালয় থেকে এখনো পঞ্চম শ্রেণি পাশ করেনি কোন শিক্ষার্থীরা।

এলাকাবাসী অভিযোগ, রুমা বাজার হতে বিদ্যালয়ে যেতে কোনো নদী পারাপার হতে হয়না। মুল ফটক সড়ক দিয়ে সরাসরি বিদ্যালয়ে আসা যায়। কিন্তু নানান অজুহাতে বেশিরভাগ সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত থেকেন নাহ শিক্ষকরা। উপস্থিতি দেখাতে ফাঁকি দিয়ে পালাক্রম করে যান দৈনিক একজন করে। পরবর্তীতে সেসব শিক্ষকদেরও আর দেখা নাই। এতে অধিকাংশ সময় বন্ধ থাকে বিদ্যালয়টি। শিক্ষকদের অবেহেলায় পাঠ গ্রহন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অত্যন্ত দরিদ্র পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা।

এদিকে পাহাড়ের শিক্ষার সমস্যা নিয়ে বারবার সংবাদ প্রকাশিত হলেও উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের নাই কোন পদক্ষেপ । অভিযোগ বিষয়ে আশ্বাস দেয়া হলেও সরেজমিনে তদন্ত না গিয়ে বরংচ মোটা অংকের মাধ্যমে চুপসে যান উপজেলা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারা। যার ফলে দুর্গম শিক্ষকরা সুযোগ পেয়ে পাহাড়ের শিক্ষার্থীদের অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছেন বলে মনে করছেন অভিভাবকরা। তাছাড়া শিক্ষা কর্মকর্তার এমন যোগসাজশের কর্মকান্ডে সন্দেহ দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রুমা সদর থেকে বিদ্যালয়ে যেতে সময় লাগে মাত্র আধা ঘন্টা। সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সংখ্যা মাত্র ১০ জন। শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে উপস্থিতি দেখা গেলেও নাই কোন শিক্ষকের উপস্থিতি। কিন্তু কক্ষে শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠদান দিচ্ছেন বেতন দিয়ে রাখা বর্গা শিক্ষক দিয়ে। তাছাড়া বিদ্যালয়ে বছরে দুবার বিদ্যালয় মেরামতে বরাদ্ধ  দিলেও সেসব চিত্র অন্ধহীন।

বিদ্যালয়ে বর্গা শিক্ষক মেনপ্রে ম্রো (২৩) বলেন, দুই শিক্ষক বিদ্যালয়ে না এসে টাকা দিয়ে রেখেছে। মাসে সাত হাজার টাকায় ছেলে মেয়েদের পড়িয়েছেন। তবে আগস্ট মাস থেকে টাকা দেয়াই শিক্ষার্থীদের পড়াবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি সিংওয়াই ম্রো বলেন, এই দুই শিক্ষক ১০ হাজার টাকা দিয়ে বর্গা শিক্ষক রেখেছেন। কিন্তু  বিদ্যালয়ে নিয়মিত না আসায় অনুপস্থিতি  দুই শিক্ষকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা কেও চিনেন না এবিং দেখেননি।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয় বিদ্যালয়ে সহকারী দুই শিক্ষক হ্লানুচিং খিয়াং ও অংক্যজাই খিয়াং সাথে। তারা জানান, বিদ্যালয়ে প্রতিনিয়ত যান বলে দাবি করে। তাছাড়া বিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও সাঙ্গু নদীতে পানি বেশি থাকায় বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন নাহ অজুহাত দেখান দুই শিক্ষক।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বলেন, শিক্ষকদের অনুপস্থিতি বিষয়ে অভিযোগটি বারবার আসছে। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হলো এ বিষয়ে উপজেলায় এটিও কাছে অবগত করা হলেও তারা পরে উত্তর দিচ্ছেন নাহ। যাইহোক যেহেতু অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে দেখা হবে।

জেলা প্রশাসক শাহ মোহাজিদ উদ্দিন বলেন, পাহাড়ে শিক্ষা নিয়ে আমরাও খুবই চিন্তিত। কেননা পাহাড়ে সব থাকা শর্তেও নানা অবহেলা কারনে এই অবস্থা। তাছাড়া জেলা পরিষদ ন্যস্ত বিভাগে অধীনে তাই আমরাও বলতে পারছি নাহ। তবে সঠিক তথ্য থাকলে ব্যবস্থা নেয়া আশ্বাস দেন তিনি।

আরবি/জেডআর

Link copied!