ঢাকা মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪

নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু রেলসেতুতে পরিক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: নভেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৭:২৫ পিএম

নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু রেলসেতুতে পরিক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দীর্ঘ অপেক্ষার পর যমুনার নদীর ওপর নবনির্মিত বঙ্গবন্ধু রেলসেতুতে পরিক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। আজ সকালে একটি ট্রেন পরিক্ষামূলক ভাবে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর পূর্বপাড় থেকে ছেড়ে এসে সিরাজগঞ্জ পশ্চিম পাড়ে এসে শেষ হয়। ট্রেনটি পরিক্ষামূলক চালু হওয়ায় উচ্ছোস্তিত যমুনা নদী পাড়ের দুইজেলার মানুষ। ট্রেনটি চালু হলে একদিকে যেমন পরিবহন ব্যবস্থার উন্নতি হবে অন্যদিকে উত্তরবঙ্গের অর্থনৈতিক সূচকও শক্তিশালী হবে।

প্রকল্প সুত্রে জানা যায়, ১৯৯৮ সালে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ায় উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সাথে সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু হয়। তবে ২০০৮ সালে বঙ্গবন্ধু সেতুতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ট্রেনের গতি কমিয়ে দেওয়া হয়। এতে উত্তরবঙ্গের মানুষের ট্রেন পরিবহন সময় অবচয় ও ভোগান্তির কারন হয়ে দাড়ায়। তাই সমস্যা সমাধানে জাপান ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের বঙ্গবন্ধু  রেল সেতু নির্মান করার উদ্যেগ নেওয়া হয়। ২০১৬ সালে একনেকে সভায় অনুমোদনের পর ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতুর ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হয়। যার ব্যয় ধরা হয়েছিলো ৯হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। পরে প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। এতে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। ডুয়েল গেজ ডাবল লাইনের দীর্ঘতম এই সেতু নির্মান ব্যয়ের ৭২ শতাংশ অর্থ ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেটিভ এজেন্সি (জাইকা)। এবং নির্মান ব্যয়ের ২৮ শতাংশ সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে। রেলসেতুটি চালু হলে ১২০ কিলোমিটার বেগে প্রতিদিন অন্তত ৮৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। এতে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন চলাচলে অন্তত ২ ঘন্টা সময় সাশ্রয় হবে। উত্তরবঙ্গের ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন আসবে।

এছাড়াও সেতুটি সার্ক, বিমসটেক, সাসেকসহ অন্যান্য আঞ্চলিক ও উপআঞ্চলিক এবং ট্রান্স এশিয়ায় রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হবে। তৈরি হবে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পন্য পরিবহনের সুযোগও। ফলে উত্তরের জনপদের ব্যবসা বানিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। শক্ত হবে উত্তরাঞ্চলের অর্থনৈতিক সূচক।

প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম বলেন, সেতুর ওপর রেললাইনের কাজ সম্পূর্ণ করা হয়েছে। প্রতিটি স্প্যানের ওপর জাপানি অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রেললাইন বসানো হয়েছে। এই রেলসেতুতে ১২০ কিলোমিটার বেগে প্রতিদিন ৮৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে।

পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক শাহ সুফি নূর মোহাম্মদ জানান, যমুনা সেতুর ওপর নির্মিত রেলসেতুতে আজ পরিক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হলো। রেলসেতুটি পুরোপুরি চালু হলে উত্তর ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের সাথে ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে। সেই সাথে উত্তরবঙ্গ অর্থনৈতিক ভাবে বেশ শক্তিশালী হবে। ব্যবসা বানিজ্যর প্রসার ঘটবে। সহজেই উত্তরবঙ্গের পন্য রাজধানীতে অল্প সময়ে আমদানী রপ্তানি করা যাবে। 


 

আরবি/জেডআর

Link copied!