নানা সমস্যায় জর্জরিত গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল। কাটাছেড়া করতে হলে সুই সুতোর দাম দিতে হয় । রয়েছে দালালদের দৌরাত্ব। আছে অনিয়ম দুর্নীতি ও ঐষধ সংকট। রোগীদের খাবারের মান নেই বললেই চলে। কারন ঠিকাদার নাকি সাবেক এমপির লোক । তাই কমকতারও ঠিকাদারকে কিছু বলার সাহস পান না। এ অবস্থায় খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে হাসপাতাল। নেই আইসিইই । আধুনিক যন্ত্রপাতি, ডাক্তার, নার্সসহ জনবল সংকট প্রকট আকার ধারন করছে। ফলে দুরদুরন্ত থেকে রোগীরা হাসপাতালে তাদের চাহিদা মতো চিকিৎসা পাচ্ছেনা। হাসপালে সুচিকিৎসা, ওষধ সরবরাহ ও খাদ্যের মান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগ করে আসছেন স্থানীয়রা।
কিন্তু কোন কাজ হয়নি।
গাইবান্ধা নাগরিক কমিটির নেতা মিহির ঘোষ বলেন,অনেক আন্দোলন হয়েছে হাসপাতাল নিয়ে। হাসপাতালের খাবার নিয়ে কথা হয়েছে অনেক । কিন্তু কোন পরিবতন হয়নি। জরুরী বিভাগে কাটা বা ক্ষত স্থানে সেলাই দিতে গেলেও গুনতে হয় টাকা । টাকা না হলে বলা হয় ভালো সুতো নেই। সুতো বাহির থেকে কিনতে বাধ করা হয় রোগীদের। বন্ডেজ করতে গেলেও দিতে হয় মোটা অকের টাকা। টাকা না দিলে বিলম্ব করা হয় সেলাই বা বান্ডেজ করতে। এই হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সংকট রয়েছে। সে কারনে সামান্য কোন রোগ নিয়ে এলেও রোগীকে রেফার করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে । হাসপাতালে নেই কোন আইসিইউ ইউনিট। ফলে হার্টের কোন রোগী এলে হয় মরতে হয় না হয় রংপুরে যাওয়ার পথে রাস্তায় জীবন নিভে যায় সেই রোগীর। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে দুটি ভেন্টিলেটর মেশিন থাকলেও সেগুলো বিশেষজ্ঞে ডাক্তারের অভাবে চালু করা হচ্ছে না। ফলে মুল্যবান মেশিন গুলো যেমন নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে রোগীরা সেবা পাচ্ছেনা।
জাসদ সাধারন সম্পাদক জিয়াউল হক জনি বলেন, যতোদিন না হাসপাতালে আত্বীয়দের পভাব থাকবে ততদিন সমসার সমাধান করা মুশকিল। হাসপালে ভর্তি রোগীদের নানান অভিযোগ। বিজলী বাতি নেই বললেই চলে। গোটা হাসপাতালের রোগীদের ওয়ার্ড জুড়ে মাত্র ২ থেকে ৩ টি বাল্ব জালানো হয়। ফলে অন্ধকারে ডুবে থাকে হাপাতালের অধিকাংশ ওয়ার্ড । খাবার মান নিয়ে দীর্ঘদিনের অভিযোগ। একেবারে ভালো নয়। রোগীদের দেয়া হয় নিন্মমানের পাউরুটি, কলা, ডিম, দুধ, ভাত ও তরকারী। দুধের অবস্থা যেনো সাদা পানি । আর ডিম কলা দেখলে মনে হবে কোথাও থেকে বিনা পয়সায় নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে অনেক রোগী তার আত্বীয় স্বজনদের দিয়ে বাইর থেকে খাবার কিনে হাসপাতালে খাচ্ছেন। খাবারের ঠিকাদার নাকি সাবেক এমপির সাগরেদ । সে কারনে হাসপাতাল কতপক্ষও বিরক্ত। হাসপাতাল জুড়ে অপরিস্কার অপরিচ্ছন্ন । চারপাশে ময়লার স্থুপ জমে থাকলেও তাদের চোখে পড়ে না । পানি ও পয়:নিস্কাশন ব্যবস্থার বেহাল দশা । করনাকালীন হাত ধোয়ার জন্য হাসপাতাল চত্তরে পানি সরবরাহ ব্যবস্থা করা হয়। সেটি এখন হয়েছে অপরিস্কার পানির হাউস। রোগীদের স্বজনরা কোথাও পানি না পেয়ে ওই হাউসেই কাপড় কাচা থেকে শুরু করে খাবার পানি পর্যন্ত সংগ্রহ করেন ।
এই বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো.মাহবুবুর রহমান বলেন, হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: মাহবুবুর রহমান জানান,হাসপাতালটি ২ শ বেড ঘোষনা দিলেও ২ শ বেডের রোগীদের চিকিৎসার জন্য জনবল দেয়া হয়নি। ৪২ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও মাত্র ১৮ জন ডাক্তার দিয়ে চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। মেডিসিন, ইএনটি, চক্ষু, কার্ডিওলজী, চর্ম ও যৌন রোগ, সার্জারীসহ বিভিন্ন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে। এখানে দুটি এক্সরে মেশিন থাকলেও একটি বিকল অপরটিতে রেডিও লজিস্টের অভাবে কাজ হয়না।
হাসপাতালে একটি আল্টাস্নোগ্রাম থাকলেও সনোলজিস্ট ডাক্তার না থাকায় সপ্তাহে মাত্র ৩ দিন এ মেশিনটি চালু রাখা হয় কোনরকমে। ফলে রোগে অসুস্থ ব্যক্তিরা বিশেষ করে মহিলা রোগীরা চরম বিপাকে পড়ছেন।
ক্লিনারের পদ ১৫ জনের থাকলেও কর্মরত রয়েছে মাত্র ৪ জন। হাসপাতালের বিভিন্ন পদে ১শ ৮৭ জন কর্মচারী থাকার কথা । কিন্তু বর্তমানে কর্মরত রয়েছে মাত্র ৬৫ জন।
আপনার মতামত লিখুন :