‘পাগলীটাও মা হয়েছে, তবে বাবা হয়নি কেউ। পাগলী বলে যায়নি ছেড়ে, প্রসব ব্যথার ঢেউ। রাস্তায় ঘুরে কাটে দিন, আর রাস্তায় কাটে রাত। পাগলী বলে স্বামী হয়নি, পায়নি সংসার স্বাদ। পাগলীও কি করেছিল যৌন আহ্বান?’
নিলাদ্র নাজিমের জনপ্রিয় একটি কবিতার কয়েকটি লাইন বাস্তবে রূপ নিয়েছে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার নিজঠিমারা গ্রামে। কোনো এক মানুষরূপী অমানুষের লালসার শিকার হয়ে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর (৩০) কোলজুড়ে এসেছে ফুটফুটে এক ছেলে সন্তান। বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে রাস্তার পাশে সন্তান প্রসব করেন পরিবার-পরিচয়হীন মানসিক ভারসাম্যহী ওই নারী।
জানা যায়, স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় ৩০ বছর বয়সী ওই নারীকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুড়ে বেড়াতে দেখতেন। কখনো পরিবারের কথা জিজ্ঞাস করলে কিছু বলতেন না তিনি। মানসিক ভারস্যাম আর আচরণের কারণে স্থানীয়দের কাছে পরিচিতি পেয়েছিলেন ‘পাগলী’ হিসেবে। কিছুদিনে আগে সন্তান ধারণের শারিরীক পরিবর্তনও দেখেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দা আমিনা বলেন, বুধবার সকালে বাড়ির সামনের রাস্তায় এক মহিলার কান্নাকাটির শব্দ শুনতে পাই। গিয়ে দেখতে পাই একটি নবজাতক পাশে নিয়ে সে কান্নাকাটি করছেন। পরবর্তী সময়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। মা ও নবজাতক শিশুটিকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারা উভয় মোটামুটি সুস্থ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ও তার ছেলেটার যদি কেউ দায়িত্ব না নেয়, তাহলে আমি দু’জনকে বাসায় নিয়ে যাব। স্থানীয়রা এই শিশুটার নাম রেখেছে রাসেল।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাসুদ রানা বলেন, সকাল আটটার দিকে কিছু লোকজন নবজাতকসহ মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে পাথরঘাটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। মা ও শিশু দু’জনেই এখন সুস্থ আছেন।
এই বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোকনুজ্জামান খান বলেন, আমি তথ্যটি শোনার সাথে সাথে হাসপাতালে গিয়েছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাথে কথা হয়েছে। মা ও নবজাতকের চিকিৎসার সকল খরচ উপজেলা প্রশাসন থেকে বহন করা হবে। ভারসাম্যহীন নারী ও তার সন্তানের সুরক্ষায় যা যা করণীয় সে ব্যবস্থা উপজেলা প্রশাসন থেকে করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :