বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে উপহার পাওয়া বসবাসরত পরিবারগুলো পড়েছেন চরম বিপাকে, সরকারি ঘর নির্মাণ কাজে করেছ হরিলুট প্রায় সবগুলো ঘর থেকেই বৃষ্টির পানি পড়ে। জানালা দরজা খুলে যাচ্ছে, ধ্বসে পড়ছে ঘরের দেয়ালের পলেস্তার।
উল্লেখ্য, মুজিববর্ষের ঘর প্রদানের ৫ম পর্যায়ের দ্বিতীয় ধাপে ফকিরহাট উপজেলায় ১৫০ টি ঘর বরাদ্দ হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি বছরের গত ১১ জুন অনেকটা ঢাক ঢোল পিটিয়ে জুম কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশের সাথে ফকিরহাটের এসব ঘরেরও উদ্বোধন করেন। অথচ অদ্যাবধি এ ঘরগুলো ভূমিহীনদের কাছে হস্তান্তর করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। নির্মাণাধীন এসব ঘর নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ।
স্থানীয়দের মতে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে যেনতেন ভাবে এসব ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে, সিডিউল অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়নি সিমেন্ট, বালু, রড। আর বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের কাঠ। যার স্থায়ীত্ব নিয়ে সন্দিহান এলাকাবাসী। তারা বিষয়টি তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
তবে পিআইও দপ্তর বা উপজেলা প্রশাসন ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করলেও বিস্তারিত কোন তথ্য দিতে বা এর দায় নিতে চাচ্ছে না। তবে এলাকার সচেতন মহলের মতে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঘর প্রদান কর্মসূচির শুরু থেকে এ পর্যন্ত একাধিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার দায়িত্ব পালন করেছে। আর যখন যে এসেছে তখন সে এ প্রকল্প থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যে কারনে এ উপজেলার ঘরগুলোর মান এতো নিম্ন।
অন্যদিকে হস্তান্তর করা মুজিববর্ষ উপলক্ষে এ ঘর গুলোর নির্মাণকাজও সম্পন্ন করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। ভূমিহীনদের মাঝে জমিসহ ঘরের চাবি হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করলেও কবে নাগাদ এ ঘরে তারা বসবাস করতে পারবে এ নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তায়।
এদিকে যেসব ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে সেখানকার বসবাসরত পরিবারগুলো পড়েছেন চরম বিপাকে। এসব ঘরের নির্মাণ কাজ এতো নিমন্মানের যে বছর না ঘুরতেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সম্পপ্রতি সরেজমিন কথা হয় উপজেলার নলধা মৌভোগ প্রকল্পে বসবাসকারী বলছেন, ভাড়ার ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে ভালই ছিলাম। সরকারি ঘরে এসে আমাদের কষ্টের সীমা নেই। এক বছর না যেতেই চালের ছিদ্র দিয়ে পানি পড়ছে। জানালা দরজা খুলে যাচ্ছে, ধ্বসে পড়ছে ঘরের দেয়ালের পলেস্তারা। চলাচলের রাস্তাও পানিতে নিমজ্জিত, ফলে উক্ত ঘর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাঈদা দিলরুবার সাথে একাধিকবার সাক্ষাতে তথ্য উপাত্ত চাইলেও তিনি কোনো তথ্য উপাত্ত দিতে রাজি হননি। এছাড়া এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
ফকিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান এগুলো আমার পূর্বতন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সময় নির্মিত। লিখিত কোন অভিযোগ পেলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
আপনার মতামত লিখুন :