ঢাকা বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

সরিষার ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন

শেখ সেকেন্দার আলী, পাইকগাছা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪, ০১:১০ এএম

সরিষার ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

খুলনার পাইকগাছায় সরিষার হলুদ ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। চারদিকে শুধু হলুদ ফুলের সমাহার। সরিষা ফুল ছেয়ে গেছে দিগন্ত জোড়া মাঠ। পৌষের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। শীতের শিশির ভেজা সকালে ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়ানো উপজেলার প্রতিটি মাঠজুড়ে কেবল চোখে পড়ছে, সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ।

শীতের এই শিশির ভেজা সকালে সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুলগুলো সোনা ঝরা রোদে যেন ঝিকিমিকি করছে। এ যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যের চাদর বিছানো জমিন। যেন প্রকৃতি কন্যা সেজেছে হলুদ বরণ সাজে। জামালপুর জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গেলে এমনই চিত্র দেখা যাচ্ছে।

চারপাশে শুধু সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে মুখরিত ফসলের মাঠ। সবুজ-শ্যামল প্রকৃতির ষড়ঋতুর এ দেশে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে যেমনই প্রকৃতির রূপ বদলায়, তেমনি বদলায় ফসলের মাঠ। কখনো সবুজ, কখনো সোনালি, কখনো বা হলুদ। এমনই ফসলের মাঠ পরিবর্তনের এ পর্যায়ে হলুদ সরিষা ফুলের চাদরে ঢাকা পড়ছে এ ফসলের মাঠ। সরিষা প্রধানত আবাদ হয় দোঁআশ ও বেলে-দোঁআশ মাটিতে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় এই অঞ্চলে সরিষার বেশি আবাদ হয়। বর্তমানে সরিষা একটি লাভজনক ফসলে পরিণত হওয়ায় ধীরে ধীরে সরিষা আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গাঢ় হলুদ বর্ণের সরিষার ফুলে ফুলে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহে গুঞ্জন করছে। চলছে মধু আহরণ। মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ মাঠে নেমেছে। শীতের শিশির সিক্ত মাঠভরা সরিষা ফুলের গন্ধ ভাসছে বাতাসে। সরিষার মাঠ দেখে মনে হয়, কে যেন হলুদ চাদর বিছিয়ে রেখেছে।

হেমন্তকালের মাঠে মাঠে সবুজের অপার সমারোহ এখন আর নেই। দিগন্তজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য শোভা পাচ্ছে মাঠে মাঠে। পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের কৃষক হবিবুর রহমান জানান, গেল বছর সরিষার দাম ভালো ছিল। সরিষা অল্প খরচে বেশি লাভজনক ফসল। সরিষার চাষ পদ্ধতি খুব সহজ ও কম খরচে অল্প সময়ে খুবই লাভজনক ফসল। কার্তিক- অগ্রহায়ণ মাসে জমিতে সরিষা বীজ বপন করা হয় বলে জানান তিনি।

পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের কৃষক সবুর গাজী জানায়, দেশীয় সরিষার জাতগুলোর চেয়ে উন্নত জাতগুলো ফলন বেশি হয়। গত বছরের চেয়ে এ বছর সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। তিনি আশা করছেন, এ বছর সরিষার বাজারও ভালো যাবে। এবার ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন।
আবহাওয়া ভালো থাকলে ভালো ফসল ঘরে তুলবে বলে জানান তিনি। উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের কৃষক আমির সরদার জানান, সেচ ও সার কম লাগে। তা ছাড়া সরিষার পাতা একটি উৎকৃষ্ট জৈব সার। প্রতি বিঘায় ৪-৫ মণ সরিষা হয়ে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উপজেলায় বাড়ছে সরিষা আবাদ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইকরামুল হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩২৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এ ছাড়া সম্পূরক রবি শস্য হিসেবে সরিষা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে সরিষা বীজ দেওয়া হয়েছে।

এরই মধ্যে চাষকৃত সরিষার বেশির ভাগেই ফুল এসে গেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। এবার সরিষা আবাদি কৃষকেরা বাড়তি মুনাফা পাবে বলে মনে করেন তিনি।

আরবি/জেডআর

Link copied!