ঢাকা শনিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৪

টাকার গাছ ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী, ফল ছিল ঘনিষ্ঠজন

মো. বাবুল মিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৪, ০৬:৩১ পিএম

টাকার গাছ ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী, ফল ছিল ঘনিষ্ঠজন

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। নিজ নির্বাচনী এলাকা কসবা-আখাউড়াতে গিয়ে বিভিন্ন  সভা-সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় আনিসুল হক প্রায়ই বলতেন, ‘মন্ত্রী হয়ে আমার লোকসান হয়েছে। আমার আয় কমে গেছে। আগে আদালতে গিয়ে আইনজীবী হিসেবে পেশাগত কাজ করতে পারলেও এখন সেটা করতে পারি না।

 তবে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কথা ও বাস্তবতা ভিন্ন রকম। কথায় আয় কমলেও তাঁর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছে দ্বিগুন। তিনি দুটি ব্যাংকের মালিকানায় নাম লিখিয়েছেন। সিটিজেন ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংকে তাঁর বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি টাকা।

যদিও স্থানীয় একাধিক সূত্রের দাবি, সিটিজেন ব্যাংকটির মালিক মূলত আনিসুল হক। তাঁর মা বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহানারা হকের নামেই ব্যাংকের অনুমোদন করানো হয়। বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর আনিসুল হক এখন জেলহাজতে আছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আনিসুল হকের এক গৃহকর্মী বলেন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ছিল টাকার গাছ। আর কসবা আখাউড়ার স্থানীয় নেতার ছিল ফল। অনেক নেতাকর্মীরা এক সময় কোনো রকম টেনে টুনে সংসার চালাতো। কিন্তু বছর পাচেক যাওয়ার পরেই একেক জন কোটিপতি।

এদিকে আনিসুল হকের ঘনিষ্ঠজন  তার মন্ত্রীত্বকে কেন্দ্র করে স্থানীয় অনেক নেতাকর্মীও বনেছে শত কোটি টাকা। নিয়োগ বাণিজ্য, চোরাচালান, ক্ষমতার জোরে ভূমি দখল ও মন্ত্রীর ভয় দেখিয়েও হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি টাকা। আনিসুল হককে কেন্দ্র করে কেউ কেউ শুন্য থেকে শতকোটি টাকার মালিকও বনে যান। 

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক পিএস রাশেদুল কায়সার ভূঁইয়া জীবন, মন্ত্রীর খুবই ঘনিষ্টজন আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল ও তাঁর আপন ভাই ফোরকান আহমেদ খলিফা, আখাউড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. মুরাদ হোসেন, আনিসুল হকের পিএ মো. আলাউদ্দিন বাবু, শফিকুল ইসলাম সোহাগ বিভিন্ন দুর্নীতি ও চোরাচালান এবং চাকরি বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন।

সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক পিএস রাশেদুল কায়সার ভূঁইয়া জীবন গত ১৪ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের এক জনসভায়  তারা একে অপরের মাদক সিন্টিকেটের কথা তুলে ধরেন। ওই সভায় এক ইউপি চেয়ারম্যান বলেছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাবেক এপিএস ও কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদুল কাউসার ভূঁইয়া জীবন মাদকের সিন্ডিকেট ও মাদক ব্যবসায়ীদের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতা।

উল্লেখ্য, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মন্ত্রীত্বকে কাজে লাগিয়ে কসবা-আখাউড়ার অনেক আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী হয়ে উঠেন টাকার গাছের ফল। হয়েছেন শুন্য থেকে কোটিপতি, ভাগ্যের চাকা যেন তাদের আলাদিনের চেরাগ।

আরবি/জেডআর

Link copied!