উল্লাপাড়া পৌরসভার নেওয়ারগাছা খালের উপর নির্মাণ করা হয়েছে পাশাপাশি দু’টি সড়ক সেতু। কিন্তু এক যুগেও সেতুর দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। আর এতে এলাকার ৫টি গ্রামের মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। সেই সাথে সংকটে পড়েছে সংশ্লিষ্ট গ্রামগুলোর ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী। ২০১২ সালে জহুরা মহিউদ্দিন স্কুল-চর নেওয়ারগাছা সড়কে উল্লাপাড়া পৌরসভা থেকে এ সেতু দুটি নির্মান করা হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, উক্ত সড়ক হয়ে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নেওয়ারগাছা, চর নেওয়ারগাছা, শ্রীফলগাঁতী, চর শ্রীফলগাঁতী ও নন্দীগ্রামের অন্ততঃ ১৫ হাজার মানুষ উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশন, পৌর বাজার ও বাস স্ট্যান্ড ও উপজেলা সদরে যাতায়াত করে থাকেন। সেই সাথে এসব গ্রামের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী জহুরা মহিউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়, খন্দকার আব্দুল মজিদ উচ্চ বিদ্যালয়, নেওয়ারগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উল্লাপাড়া ডিগ্রি কলেজে লেখাপড়া করতে কথিত সড়ক পথে চলাচল করে থাকে।
নেওয়ারগাছা খালের উপর নির্মিত সেতুতে সংযোগ সড়ক না থাকায় তাদেরকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ ঘুরে নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলাচল করতে হয়। আর এতে চরম দুর্ভোগের শিকার হয় শিক্ষার্থী ও গ্রামের লোকজন। তারা এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বার বার আবেদন জানালেও তা কোন কাজে আসেনি। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অবিলম্বে সেতুর অবশিষ্ট কাজ সম্পন্ন ও দু’পাশে সংযোগ সড়ক নির্মানের জন্য পৌরসভার প্রতি আবেদন জানান তারা।
নেওয়ারগাছা গ্রামের বাসিন্দা সাহানেওয়াজ খান রানা জানান, এক যুগ আগে তাদের দাবির প্রেক্ষিতে নেওয়ার গাছা খালের উপর সেতু নির্মানের উদ্যোগ নেয় পৌরসভা। এসময় পাশাপাশি
দু’টি ছোট আকারের সেতু নির্মান করা হয়। একটির উপরের পাটাতন দেওয়া হলেও অপর সেতুর পাটাতন নির্মান কাজ করা হয়নি। একই সঙ্গে দুপাশের সংযোগ সড়কও নির্মাণ করা হয়নি। ফলে এক যুগ ধরে এ এলাকার মানুষ তাদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। সেতু দু’টিও কোন কাজে আসছে না।
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (পিএনও) মো. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, তিনি দু’বছর ধরে এখানে এসেছেন। এ কারণে এই সেতুটির কাজ কেন সম্পন্ন হয়নি তা ভালোভাবে বলতে পারেন না।
উল্লাপাড়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিউল কবির জানান, তিনিও এখানে নতুন এসেছেন। মূলতঃ এসব কাজ তার দপ্তর থেকেই করা হয়ে থাকে। কিন্তু গত জুলাই মাসে উল্লাপাড়া
পৌরসভার অফিসটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে পৌরসভার সকল কাগজপত্র ফাইল পুড়ে যায়। ফলে ১২ বছর আগে এই সেতুটির ঠিকাদার কে ছিল বা কত টাকা বরাদ্দ ছিল অথবা কী কারণে সেতুটির কাজ পুরোপুরি শেষ করা সম্ভব হয়নি তা বলা সম্ভব নয়।
উল্লাপাড়া পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত জানান, তিনি এই কর্মস্থলে নতুন এসেছেন। বিষয়টি এখনও জানেন না। তবে দ্রুত তদন্ত
করে সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের দুর্ভোগ নিরসনে কথিত সেতু দু’টির অসম্পন্ন কাজ এবং দু’পাশের সংযোগ সড়ক নির্মানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন এই প্রশাসক।
আপনার মতামত লিখুন :