বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৪, ১২:৪০ পিএম

ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে রায়গঞ্জের জয়সাগর দীঘির

রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ২০, ২০২৪, ১২:৪০ পিএম

ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে রায়গঞ্জের জয়সাগর দীঘির

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের নিমগাছিতে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জয়সাগর দীঘি। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই দীঘির পাড়ে ঘুঁড়তে আসেন অসংখ্য দর্শনার্থী। অথচ সংস্কারের অভাবে দীঘির পাড় বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া চারপাড়ে ২৮ টি বাধা ঘাট থাকলেও এখন এর কোনো চিহ্ন নেই। সবমিলে বর্তমানে দীঘিটি হারাতে বসেছে তার নিজেস্ব ঐতিহ্য। দীঘিটির সংস্কার বা উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় দর্শনার্থীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানান, দীঘিটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ছিল আধা মাইল, আয়তন প্রায় ৫৮ একর। এই দিঘীটি নিয়ে অনেক লোককথা প্রচলিত রয়েছে। সেন বংশীয় রাজা অচ্যূত সেন গৌড়াধিপতি ফিরোজ শাহর করদ রাজা ছিলেন। তার রাজধানী ছিল কমলাপুর। ফিরোজ শাহের পুত্র বাহাদুর শাহ অচ্যূত সেন রাজার কন্যা অপরূপ সুন্দরী ভদ্রাবতীকে দেখে মুগ্ধ হন। তিনি তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন। কিন্তু রাজা অচ্যূত সেন সম্মত না হওয়ায় বাহাদুর শাহ কমলাপুর আক্রমণ করে ভদ্রাবতীকে অপহরণ করে নিমগাছিতে নিয়ে যান। রাজা অচ্যূত সেন তার সৈন্যবাহিনীসহ বাহাদুর শাহকে আক্রমণ করেন। নিমগাছিতে উভয়ের মধ্যে ব্যাপক যুদ্ধ হয়। বাহাদুর শাহের মুষ্টিমেয় সৈন্য সেনরাজের বিরাট সৈন্যবাহিনীর কাছে যুদ্ধে (১৫৩২-৩৪ খ্রিষ্ট্রাব্দ) পরাজিত হন। এ বিজয় গৌরবের স্মৃতি হিসেবে এবং পরকালের কল্যাণের জন্য তিনি নিমগাছির কাছে ‘জয়সাগার’ নামে এক দীঘি খনন করেন।

যুদ্ধজয়ের কারণেই দীঘিটির নাম হয় জয়সাগর। জয়সাগরের ৪ পাড়ে ২৮টি বাধা ঘাট দিয়ে জয়সাগর দীঘি তৈরি করা হলেও, বর্তমানে এ ঘাটের কোনো চিহ্ন নেই। বিশাল দীঘিটির ভেতরে রয়েছে ছোট ছোট কয়েকটি দীঘি। অতীতের জয়সাগরের জৌলুস আগের মতো আর নেই। সংস্কারের অভাবে দীঘির পাড় বিলীন হয়ে যাচ্ছে। দীঘি এলাকায় অবাধে গবাদি পশু চড়ানোর কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ।

জয়সাগরের পূর্বপাশে দর্শনার্থীদের বসার জন্য সিমেন্টের চেয়ার এবং টয়লেট রয়েছে। কিন্তু অযত্মের কারণে সেগুলিও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দর্শনার্থীদের জন্য কোনো সুযোগ সুবিধা না থাকায় দিন দিন ঐতিহ্য হারাচ্ছে প্রাচীন এ দর্শনীয় স্থান। বিগত বছরগুলোতে শীত মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি জয়সাগরে ভীড় করত। কিন্তু পরিবেশ বিপর্যয় ও শিকারিদের উৎপাতে অতিথি পাখিরা আর আসে না এখানে। কয়েক বছর ধরে সেখানে বিরানভাব বিরাজ করছে।

উপজেলার একমাত্র পর্যটন স্থান হওয়া সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত এ দীঘিটির উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণের তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। কয়েক শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এ দীঘিটির সংস্কার ও উন্নয়নে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হলে জয়সাগর তার হারানো জৌলুস ফিরে পেয়ে হয়ে উঠতে পারে জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান।

দীঘিতে বেড়াতে আসা শামীম উদ্দিন খান জানান, আগে জয়সাগর দেখার জন্য নানা জায়গা থেকে দর্শনার্থী আসত। কিন্তু এখন  ঐতিহ্য না থাকায় দিন দিন দর্শনার্থী আসা প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জয়সাগরকে রক্ষার জন্য সরকারি উদ্যোগের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. হাফিজুর রহমান জানান, ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে মৎস্য বিভাগকে হস্তান্তর করা হয়েছে। সেই থেকে জয়সাগরের পারে অবস্থানকারীদের সংগঠিত করে সমিতির মাধ্যমে মাছ চাষ করা হচ্ছে। এতে সমিতিভুক্ত সদস্যরা আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছে।  

এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান জানান, ঐতিহ্যবাহী জয়সাগরকে তার পুরানো ঐতিহ্য ফিরে আনতে আগামীতে একটি প্রকল্প নেওয়া হবে।

Link copied!