সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ঝাঞল ইউনিয়নের পাইকশা গ্রাম। যেখানে গ্রামের প্রত্যেকে গামছা উৎপাদনের সাথে প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। এই গ্রামের মানুষের রুজি রুটির একমাত্র ভরসা গামছা শিল্প। এইখানকার উৎপাদিত গামছার সুনাম দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও ছড়িয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকাররা এসে পাইকশা গ্রামের গামছার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাই স্থানীয়রা একে গামছার গ্রামও বলে থাকে। প্রতি সপ্তাহে এই গ্রামে ১লাখ থেকে দেড় লাখ থান গামছা উৎপাদন করা হয়। এইখানকার উৎপাদিত গামছা দেশের বৃহৎ কাপড়ের হাট টাঙ্গাইল করটিয়া হাট, শাহজাদপুর হাট, নরসিংদীর বাবুরহাট সহ দেশের বড় বড় হাটে বিক্রি হয়ে থাকে। এছাড়াও ভারত, সৌদি আরব, ডুবাই, মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। আকারভেদে প্রতি থান গামছা বিক্রি করা হয় ২শ থেকে ৬শ টাকা পর্যন্ত। তবে বর্তমানে রং ও সুতার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় তেমন লাভের মুখ দেখছেন না ব্যবসায়ীরা।
পাইকশা গ্রামের তোতা উইভিং কারখানার মালিক তোতা মিয়া বলেন, আমাদের পাইকশা গ্রামের গামছার বেশ সুনাম রয়েছে। দেশের বড় বড় হাটে আমাদের উৎপাদিত গামছা বিক্রি করা হয়। তবে রং সুতার দাম বৃদ্ধি, শ্রমিকদের মুজুরি দিয়ে বর্তমানে তেমন লাভ হয় না।
তোতা উইভিং কারখানার শ্রমিক আতাউল হোসেন বলেন, প্রতিদিন ৭/৮ থান গামছা উৎপাদন করতে পারি। এতে প্রতিদিন আমরা ৫/৬ শ টাকা পাই। আমার মতো এই গ্রামের সবাই এই কাজের সাথে যুক্ত।
আরেক ব্যবসায়ী হাসেম আলী বলেন, আমাদের উৎপাদিত গামছার চাহিদা দেশজুড়ে। এছাড়াও আমাদের উৎপাদিত গামছা ভারত, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ডুবাই সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। এই গ্রামের সবাই এই গামছা শিল্পের সাথে জড়িত। বর্তমান ব্যবসা তেমন ভালো না। তাই সরকার যদি এই তাঁত শিল্পের দিকে নজর দেয় তাহলে তাঁতশিল্প আরো উন্নত হবে।
পাইকশা গামছা গ্রামের ঐতিহ্য ধরে রাখতে নতুন উদোক্তা তৈরি সহ নানা উদ্যেগের কথা জানান কামারাখন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন সুলতানা।
তিনি জানান, পাইকশা গ্রামের ঐতিহ্য ধরে রাখতে কামারখন্দ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তরুণ প্রজন্মকে উদোক্তা হতে উৎসাহ প্রদান, তাতবোর্ডের মাধ্যমে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান, নানা প্রশিক্ষনসহ সকল সহযোগিতা করা হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী গামছার গ্রাম পাইকশায় ছোট বড় ৫শ কারখানা রয়েছে। ৫শ কারখানা থেকে সপ্তাহে ১লাখ থেকে দেড় লাখ থান গামছা উৎপাদন করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :