নেত্রকোণার দুর্গাপুরে বিরিশিরি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ঢাকা এর আয়োজনে গারো সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী ওয়ানগালা উৎসব পালিত হয়েছে।
এ উপলক্ষে শুক্রবার বিকেলে একাডেমি হলরুমে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এ অনুষ্ঠানে গারোরা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে উৎসবে যোগ দেন। গারো নারী-পুরুষের কারও কারও মাথায় ‘খুতুপে’ নামের নানা কারুকাজ করা পাগড়ি। কেউ কেউ ওই খুতুপে গুঁজেছেন মোরগের পালক দিয়ে তৈরি দমি নামের বিশেষ অলংকার। পরনে গারোদের ঐতিহ্যবাহী দকমান্দা, দকসারির মতো নানান রঙের পোশাক।
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও একাডেমি নৃত্য শিক্ষক মালা মার্থা আরেং এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন,বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
স্বাগত বক্তব্য দেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির পরিচালক গীতিকার সুজন হাজং। বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উপপরিচালক এস এম শামীম আকতার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাভিদ রেজওয়ানুল কবীর, সহকারি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আক্কাস আলী, দুর্গাপুর অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন তাহমিদুল আলম নোমান, প্রিন্সিপাল মণীন্দ্রনাথ মারাক, ফাদার পাওয়েল, কবি জন ক্রসওয়েল খকশি প্রমুখ।
প্রধান অতিথি বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শব্দটি অসম্মানজনক। আমরা তাদের আত্মপরিচয়ের জায়গাটি সাংবিধানিকভাবে সম্মানের সাথে আদিবাসী হিসেবে রাষ্ট্রের কাছে উপস্থাপন করতে চাই। এই ধরনের আয়োজন সম্প্রীতির মেলবন্ধন তৈরীতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী উৎসবসমূহ দেশব্যাপী পালনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
গারো জাতিগোষ্ঠীর বিশ্বাস, শস্যদেবতা `মিশি সালজং`র ওপর ভরসা রাখলে ফসলের ভালো ফলন হয়। এই দেবতাকে নতুন ফসলের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এবং নতুন ফসল খাওয়ার অনুমতি চেয়ে তারা পালন করে থাকে ওয়ানগালা উৎসব। পরবর্তী বছর যেন আরও ভাল ফলন পাওয়া যায় এই প্রার্থনাও করা হয় এই উৎসবে।
আলোচনা শেষে সন্ধ্যায় গারো সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির কথা তুলে ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক দল সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করেন। এছাড়াও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্লীরা নৃত্য পরিবেশন করে।
আপনার মতামত লিখুন :