চার গ্রামের মানুষের ভরসা বাঁশের সাঁকো

মাদার নদীর ওপরে বাঁশের সাঁকোটি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার চার গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ উপজেলার তারানিপুর, ভবানীপুর, সৈদালীপুর ও মানিকপুর গ্রামের মানুষেরা প্রতিনিয়ত এই মাদার নদীর উপরে নির্মিত সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। এলাকাবাসী নদীর উপরে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করার কথা দীর্ঘদিন বলে আসলে ও তা কার্যকর না হওয়ায়  এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থানীয় তপন কুমার মন্ডল জানান, এলাকাবাসীর  এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াতে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে, রাতের আঁধারে কোন অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারে না তারা, ভারি কোন মালপত্র নিয়ে আসতে পারে না বাজার থেকে বাড়িতে, ছোট ছোট বাচ্চা ও প্রতিবন্ধী মানুষেরা এই সাকোর উপর দিয়ে  নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে না।

এদিকে গ্রামবাসীরা জানান সরকারিভাবে মাদার নদীর উপরে ব্রিজ নির্মিত না হওয়ার কারণে আমারা চার গ্রামের মানুষ  আমাদের এলাকা থেকে শহরে যাতায়াতের জন্য  স্থানীয়ভাবে  কোন রকমে একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে শ্যামনগর সদর সহ দেশের  বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াতের ব্যবস্থা করে থাকি। তখন আমরা ভেবেছিলাম পরবর্তীতে আমাদের কষ্ট দেখে সরকার একটি ব্রিজ তৈরি করে দেবে কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও সরকারের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত ব্রিজ নির্মাণ হয়নি। জারকারনে একটি ব্রিজের অভাবে আমরা চার গ্রামের প্রায় দুই হাজার মানুষের  কেউ অসুস্থ হলে শহরের ভালো  হাসপাতাল ও আমাদের ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার জন্য ভালো কোন স্কুল, কলেজে পড়াশোনার জন্য শহরে যাতায়াতের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিজেদের তৈরি করা বাসের সাঁকো  দিয়ে যাতায়াত করতে হয়, আমরা বড় বা ভারি কোন জিনিস এই সাঁকোর উপর দিয়ে আনা নেওয়া করতে পারিনা। কিন্তু  দেখার যেন কেউ নেই।

শ্যামনগর পৌরসভার  সাবেক কাউন্সিলর  এস কে সিরাজ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার মানুষ একটি ব্রিজের দাবি করে আসছে, কিন্তু আজও তাদের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি।

ওই এলাকার  ইউপি মেম্বর আবু বক্কর জানান, দীর্ঘদিন ধরে মাদার নদীর উপরে তাদের যাতায়াতের জন্য একটি ব্রিজের দাবি করে আসতেছে এলাকাবাসীরা তবে আজও তাদের দাবি এখনো পূরণ হয়নি।

তিনি আরো বলেন, জরাজীর্ণ বাসের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত মানুষের প্রতিটি মুহূর্ত আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়, বিশেষ করে বাচ্চাদের ও বয়স্ক মানুষের জন্য খুবই বিপদজনক সাঁকোটি, রাতে নেই কোন আলোর ব্যবস্থা, সংকীর্ণ সাঁকো দিয়ে উপজেলার চার গ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে  জাতায়াতা করে। আর এতে করে যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে অসংখ্য প্রকাশ করছেন এলাকার  ভুক্তভোগী লোকজন। এলাকার সচেতন মহলসহ স্থানীয় জনগণ দ্রুত মাদার নদীর ওপর একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।