অভিভাবকহীন যশোর চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচনের দাবিতে এক মাসের আল্টিমেটাম বেধে দিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দাবি বাস্তবায়ন না হলে অন্দোলনের হুশিয়ারিও দেন তারা।
যশোরের ব্যবসায়ীদের বৃহৎ সংগঠন জেলা চেম্বার অব কমার্স। নেই প্রশাসকও। এ সুযোগে কয়েকজন কর্মকর্তা নানা অনিয়ম করছেন।
অন্যদিকে, এ সংগঠনের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দফায় দফায় নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি শেষ হলেও ঠিক নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ক্ষমতাসীন নেতারা সাজানো মামলা দায়ের করেছেন। ব্যবসায়ীদের সমস্যা সমাধানে কোনো কাজেই আসেনা প্রতিষ্ঠানটি। ১০ বছরের বেশি সময় ধরেই চলছে এ ধরনের অনিয়ম। কিন্তু এবার নির্বাচনের দাবিতে ব্যবসায়ীরা একজোট হয়েছেন। সোমবার তারা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। একইসাথে এক মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যথায় এবার তারাও আন্দোলনে নামার আলটিমেটাম দিয়েছেন।
ব্যবসায়ীদের সাথে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক রফিকুল হাসান। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহির দায়ান আমিন।
আলোচনার শুরুতে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শান্তনু ইসলাম সুমিত বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব ও মামলাবাজদের তৎপরতায় এক যুগ নির্বাচন হয় না যশোর চেম্বার অব কমার্সে। ১০ বছর ধরে প্রশাসক নিয়োগ করে ব্যবসায়িদের এই শীর্ষ সংগঠনটির কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। কার্যত এখন যশোরের ব্যবসায়ীরা অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছেন। যে কারণে অবিলম্বে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার মাধ্যমে সংগঠনটির দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার নিরসন প্রয়োজন।
সংগঠনের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, দীর্ঘদিন নির্বাচন হচ্ছিল না। সর্বশেষ গত বছরের ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন ধার্য করা হয়। এরমাঝে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে তাকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের হুকুমে আটক করা হয়। নির্বাচনের তিনদিন আগে তিনি জামিন পান। এরমাঝে ৪ জানুয়ারি তার প্রতিপক্ষদের ইন্ধনে মেহেদী হাসান নামের একজন ব্যবসায়ী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। বিচারক সাময়িক স্থগিতাদেশ দেন। পরবর্তীতে মামলাটি ১৫ জানুয়ারি খারিজ করে দেন আদালত। একইসাথে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসকের মেয়াদ বৃদ্ধি ও স্থগিত হওয়া নির্বাচন দ্রুত শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত নির্বাচনের জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ সুযোগে অসাধু কর্মকর্তারা ফায়দা লুটছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, তৎকালীন সময়ে রফিকুল হাসান নিজেই প্রশাসক ছিলেন। ফলে তার পক্ষে কাজটা আরও দ্রুত সম্ভব। তিনি এক মাসের মধ্যে নির্বাচনী কাজ শুরু করার দাবি জানান। ওই দুই ব্যবসায়ী নেতার বক্তব্য শেষে স্থানীয় সরকার বিভাগ যশোরের উপপরিচালক রফিকুল হাসান বলেন, সেসময় আমাদের চেষ্টা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে প্রশাসকের মেয়াদ শেষ হওয়ায় আর সম্ভব হয়নি। তবে, এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনী কর্মকান্ড শুরুর আশ্বাস দেন তিনি।
স্মারকলিপি প্রদানকালে আরও উপস্থিত ছিলেন তানভিরুল ইসলাম সোহান, কাসেদুজ্জামান সেলিম, মো. শুলশান, সাকির আলী, সোহেল মাসুদ টিটো, নেছার আহম্মেদ মুন্না, তন্ময় সাহা, এজাজ উদ্দিন টিপু, বিশ্বনাথ দত্ত, মুনলাইট, শেখ শওকত আলী রনি, ইদুল চাকলাদার, এসআর আজাদ এবং খাইরুল কবীর চঞ্চল।
আপনার মতামত লিখুন :