ঢাকা বুধবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০২৫

ইউএনও অফিসে চুরি, চাকরি গেল সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তার

নজরুল ইসলাম দয়া, বগুড়া

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০২৫, ০৮:৩২ পিএম

ইউএনও অফিসে চুরি, চাকরি গেল সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তার

সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিরব মিয়া। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ইউএনওর নাম ভাঙিয়ে দুর্নীতি করতেন সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিরব মিয়া। সরকারি দপ্তরে চুরি, গোপনীয় নথিপত্র গায়েব এবং ঘুষের টাকার পরিবর্তে ইট নিয়ে ধরা খেয়ে স্বীকারও করেছেন। বগুড়ার শাজাহানপুর ইউএনও অফিসের দুর্নীতির হিরো বনে যাওয়া নিরব মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

মঙ্গলবার শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাইফুর রহমান জানান, তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা এই অফিস আদেশ দেন। তবে বরখাস্তকৃত সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিরব মিয়া বিধিমোতাবেক খোরাকি ভাতা পাবেন। 

জেলা প্রশাসকের অফিস আদেশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত এপ্রিল মাসে শাজাহানপুরের তৎকালীন ইউএনও তাহমিদা আক্তারকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে বদলি আদেশের পর বিদায় প্রাক্কালে তার কার্যালয়ে রহস্যজনক চুরির ঘটনা ঘটে। চারটি কম্পিউটার, একটি ল্যাপটপ ও হার্ডডিক্সসহ দুটি সিসি ক্যামেরা চুরি হয়। সুরক্ষিত এই কার্যালয়ে প্রহরী থাকার পরও চুরির ঘটনায় রহস্যের সৃষ্টি হলে প্রশ্নের মুখে পড়েন বিদায়ী ইউএনও। কোনো গুরুত্বপূর্ণ দুর্নীতির তথ্য গায়েব করতেই চুরির ঘটনা হতে পারে বলে সেসময় ধারণা প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। 

সূত্র জানায়, চুরির ঘটনার আগে বৃহস্পতিবার অফিস শেষে তৎকালীন ইউএনও তাহমিদা আক্তারের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। পরদিন শুক্রবার অফিস বন্ধ ছিল। শনিবার দুপুরে অফিসের উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তার কক্ষ খোলা থাকার খবর পেয়ে নিজ দপ্তরে যান ইউএনও। এরপরই চুরির বিষয়টি প্রকাশ্য হয়। 

প্রাপ্ততথ্যে জানা গেছে, সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিরব মিয়া দুপচাঁচিয়ার মেসার্স সিদ্দিক ব্রিকসের মালিককে ইট পোড়ানোর লাইসেন্স নিয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেয়। সেখান থেকে ঘুষের টাকার পরিবর্তে এক হাজার ইট নেন। ওই কর্তার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অফিসের গোপনীয় নথিপত্র পাচার অপচেষ্টার অভিযোগ উঠে। এনিয়ে তদন্ত শুরু করে জেলা প্রশাসন। অভিযুক্ত সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিরব মিয়া স্বীকারোক্তিমূলক লিখিত জবাব দেন। অভিযোগের সত্যতার প্রমাণ মিললে পদক্ষেপ নেন জেলা প্রশাসক। চুরি ও নানা দুর্নীতিতে জড়িত থাকায় নিরব মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। 

অফিস আদেশে বলা হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩ (খ) ও ৩ (ঘ) বিধিমতে অসদাচরণ ও দুর্নীতি পরায়ণতার অভিযোগে বিভাগীয় মামলার কার্যধারা সূচিত হয়েছে। বিধিমালা ২০১৮ বিধি ১২ (১) মোতাবেক সরকারি চাকরি হতে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এছাড়া সাময়িক বরখাস্তকালে বিধিমোতাবেক তিনি খোরাকি ভাতা পাবেন।

এদিকে সদ্য বরখাস্তকৃত সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা নিরব মিয়ার দাবি তিনি চক্রান্তের শিকার। তাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছে। 

আরবি/জেডআর

Link copied!