ঢাকা শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪

৫০ বছর প্রতিক্ষার পর স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মাণ

কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২৪, ০৬:২১ পিএম

৫০ বছর প্রতিক্ষার পর স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মাণ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের এলাকার সাধারন মানুষের নিজস্ব অর্থায়নে ও স্বেচ্ছাশ্রমে কাঁচা রাস্তায় ইট বিছানোর কাজ শুরু করেছেন। রাধা নগর গ্রামের তিন মাথা মোড় থেকে একই এলাকার এবতেদায়ী মাদ্রাসা পর্যন্ত মোট প্রায় ৩শ ফিট কাঁচা রাস্তাটিতে ইট বিছানোর কাজ চলছে।

সোমবার সকাল থেকে রাধা নগর গ্রামের বাসিন্দা সমাজ সেবক ও অধ্যক্ষ আব্দুল করিমের নেতৃত্বে ওই গ্রামের নানা বয়সী শতাধিক মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মান কাজে অংশগ্রহন করেন। রাস্তাটির নির্মান কাজ সম্পন্ন হলে আশ পাশের ৪/৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের যাতায়াতের কষ্ট লাঘব হবে বলে এলাবাসী সূত্রে জানা গেছে।

এলাকাবাসী জানান, রাধানগর, এলতা ,ইমামপুর, হাটশেখা আদর্শগ্রাম সহ গ্রামের প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষের কাঁচা রাস্তা থাকলেও তা ছিল চলাচলের অনুপযোগী। দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে এমন দূরাবস্থা থাকলও দেখার কেউ ছিল না। ফলে সঠিক সময়ে কৃষিপণ্য বাজারজাত করতে না পারায় কৃষি পণ্যের ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত ছিলেন স্থানীয় কৃষকরা। এ ছাড়া শিক্ষা ও চিকিৎসা থেকেও তারা পিছিয়ে ছিলেন বলে মন্তব্য স্থানীয়দের।

রাধা নগর গ্রামের আব্দুল হামিদ, আলম হোসেন, পার্শ্ববর্তী ইমামপুর গ্রামের হাফিজার রহমান, সাইদুর রহমানসহ অন্যন্য কৃষকরা জানান, কাঁচা রাস্তাটি বর্ষায় কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল হয় বলে তারা ধান, পাট, শাক-সবজিসহ তাদের উৎপাদিত কৃষি ফসল বাজারজাত করতে পারতেন না বলে যুগের পর যুগ তারা ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত থেকেছেন। এ ছাড়া প্রসূতিসহ জরুরী রোগীদের প্রয়োজনের সময় হাসপাতালে নিতে বিলম্ব হত।

রাধা নগর গ্রামের কলেজ শিক্ষার্থী মিম আক্তার, স্কুল শিক্ষার্থী মুরাদ হোসেন ও হোসাইন আহম্মেদসহ এলাকার শিক্ষার্থীরা জানায়, বর্ষার পূরো সময় তারা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারেনি বলে শিক্ষা গ্রহনে পিছিয়ে পরেছে। তাই এত বছরেও এ এই এলাকা থেকে আজ পর্যন্ত সরকারি কোন উচ্চ পদে কেউ চাকুরীর সূযোগ পায়নি।

দেশে সরকার ও জনপ্রতিনিধি বদল হলেও তাদের এই রাস্তাটি পাকাকরনের কেউ কোন উদ্যোগ নেননি বলে এত দিন তারা  পিছিয়ে ছিলেন। এ অবস্থায় এই রাস্তাটির অনন্ত ইট বিছানোর কাজ শেষ হলে তারাও দেশের উন্নয়নের মূল স্র্রোতে সংযুক্ত হতে পারবেন বলেও আশা করেন এলাকাবাসীরা।

বিষয়টিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে স্থানীয় প্রশাসন। কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ‘‘প্রশাসনের উদ্যোগে সাধারন মানুষকে আত্মনির্ভশীল হতে ব্যাপকভাবে সচেতন করা হচ্ছে। বিষয়টি তারই অংশ বলে স্বেচ্ছাশ্রমে যারা রাস্তাটি নির্মান করছেন তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।” সেই সাথে এ ধরনের  উন্নয়ন মূলক কর্মসূচিতে প্রশাসনের সহযোগীতা থাকবে বলেও আশ্বস্থ করেন তিনি।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!