সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিটি স্ক্যান মেশিন সাড়ে তিনমাস ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। এতে সাধারণ রোগীরা ব্রেইনসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে এটি মেরামত করতে খরচ হবে ৫৮ লাখ টাকা হবে জানান মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের পরিচালক।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের পরিচালক ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা বলছেন, সিটি স্ক্যান মেশিনটির কুলার ও দুটি হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়েছে। আর হাসপাতালের পরিচালক বলছেন, সিটি স্ক্যান মেশিন জরুরী মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি দিয়ে জানানোর পরও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছেনা।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের পরিচালকের কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জাপান থেকে আমদানি করা হয় ১০ কোটি টাকা মূল্যের সিটি স্ক্যান মেশিন। সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে স্থাপন করা হয়। সাতক্ষীরাসহ জেলার বাইরে থেকে সাধারণ রোগিরা ব্রেইনসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। কিন্তু মেশিনের ত্রুটি দেখা দেওয়ায় ৩০ আগস্ট থেকে মূল্যবান সিটি স্ক্যান মেশিনের সবধরনের পরীক্ষা করা বন্ধ রয়েছে। জরুরী ভাবে মেরামত করা না হলে অন্যান্য মূল্যবান পার্টসও নষ্ট হতে পারে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা সাধারণ রোগীরা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, সাতক্ষীরা জেলার সাধারণ মানুষের সরকারী খরচে উন্নত চিকিৎসার জন্য এই মেডিকেল কলেজ হাসপাতালই আসেন। কিন্ত সরকারী এই প্রতিষ্ঠানের সিটি স্কান মেশিনটি একটানা সাড়ে মাস নষ্ট হয়ে পড়ে থাকবে তা ভাবা যায়। তিনি সাধারণ রোগিদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত মেশিনটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহবান জানান।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের টেকনোলজিষ্ট মো. আব্দুল হালিম জানান, সিটি স্ক্যান মেশিনটি স্থাপনের পর একটানা ৭ বছর সার্ভিস দিয়েছে। যদিও এর ওয়ারেন্টি ছিলো পাঁচ বছরের। সে হিসাবে দুই বছর আগেই মেশিনটির মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। তার পরও ভালো সার্ভিস দিচ্ছিলো।
তিনি আরো বলেন, মেশিনটিতে খুবই কম খরচে সাধারণ রোগী ব্রেইন, বুক ও পেটের পরিক্ষা করতে পারতেন। কিন্ত মেশিনের কুলার ও দুটি হার্ডডিস্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ায় গত ৩০ আগস্ট থেকে বন্ধ আছে। তিনি আরো বলেন, জরুরী ভাবে এটি মেরামত করা না গেলে অন্যান্য মুল্যবান পার্টসও নষ্ট হতে পারে।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ কুরতই-খোদা জানান, সিটি স্ক্যান মেশিনটি ত্রুটি দেখা দেয়ায় গত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে। এটি দ্রুত মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়কে একাধিকবার জানানো হয়েছে। এমনকি আমি নিজেও দুই তিনবার স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে গিয়ে জানিয়েছি দ্রুত মেরামত করার জন্য। কিন্ত তাতেই কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এতে করে প্রতিদিন দুর-দুরন্ত থেকে আশা সাধারণ রোগী এসে ফিরে যাচ্ছেন। তবে এটি মেরামত করতে খরচ হবে ৫৮ লাখ টাকা।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোস্তাক আহমেদ জানান, সিটি স্ক্যান মেশিনটি সাড়ে তিন মাস বন্ধ রয়েছে তা তিনি জানতেন না। তবে হাসপাতালের তত্ববোধায়কের সাথে কথা বলে দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নিবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।
সাধারণ মানুষের উন্নত চিকিৎসার বিষয়টি বিবেচনা করে সরকার সিটি স্ক্যান মেশিন দ্রুত মেরামত করবেন এমনটাই প্রত্যাশা সাতক্ষীরাবাসির।
আপনার মতামত লিখুন :