ঢাকা রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

অসহায়দের বিয়ের আয়োজনের পাশে ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ

ইমদাদুল হক মিলন, মাদারীপুর

প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৪, ০৪:১৫ পিএম

অসহায়দের বিয়ের আয়োজনের পাশে ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মাদারীপুর: মাদারীপুর সদরের এ্যাডভোকেট দলিল উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী উর্মি আক্তার (১৮)। ঘটমাঝি এলাকায় নানা বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করতেন। গত কোরবানীর ঈদে ফরিদপুর থেকে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান ব্যবসায়ী বাবা উজ্জল হাওলাদার। বাবা মারা যাওয়ার পর আর স্কুলে যাওয়া হয় নি উর্মি আক্তারের। উর্মি আক্তারের বাড়ি কালকিনির আলীনগর ইউনিয়নের টুমচর চর হোগলপাতিয়া গ্রামে। দারিদ্র পরিবারে আছেন মা, দুই বোন ও এক ভাই। পরিবারের বড় মেয়ে উর্মি আক্তার। বিয়ের বয়স ছুই ছুই। সাধারণ মানুষের সাহায্য সহযোগিতা চলে পরিবার। এরই মধ্যে তার বিয়ে ঠিক হয় একই উপজেলার কাশিমপুর এলাকার সাইদুর রহমান সিপাহীর ছেলে সাজ্জাদ হোসেন সিপাহী (২৬) এর সাথে। সাজ্জাদ হোসেন পেশায় এসির টেকনিশিয়ান। এদিকে উর্মির পরিবারের চিন্তা মেয়ের বিয়ের আয়োজন কিভাবে করবে? কোথায় এতো টাকা। বিয়ের বিষয়টি সদস্যদের মাধ্যমে জানতে পারে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ। উর্মির বিয়ের আর্থিক সব দায়িত্ব নেন ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ। 

শুক্রবার (৩০) দুপুরে ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিয়ের কার্ড, গেট নির্মাণ থেকে শুরু করে খাট শোকেস, আলমারী, লেপ তোষক, ২০০ অতিথির আতিথিয়েতাসহ বরের জন্য হাতঘড়ি, শার্ট প্যান্ট, কনের জন্য উপহার সামগ্রীসহ যাবতীয় সকল আয়োজন। সামাজিক বিয়ের মত এই আয়োজনে কোন কমতি ছিল না।

এই বিয়ের আয়োজনের অনুভূতি জানতে চাইলে উর্মি আক্তার, বাবার কথা মনে করে আবেগ আপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তখন তিনি বলেন, আমার বাবা
বেঁচে থাকলে আজকের এই আয়োজন করতেন। কিন্তু বাবা না থাকলেও সেই আয়োজন করছেন ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
এলাকাবাসী এই বিয়ের আয়োজন দেখে অবাক। খুব ভালো কাছ করছে ইয়ুথ ফর বাংলাদেশ। সকলেই সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন। এছাড়া এই আয়োজনে সন্তুষ্ট, ধন্যবাদ ও
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন উর্মির মা।

ইয়ুথ ফর বাংলাদেশের পরিচালক আরিফুর রহমান জানান, মেয়েটির বাবা নাই, তাদের কোন আয়ের উৎস নাই। আজ বাবা বেঁচে থাকলে ধুমধাম করে বিয়ে হতো। সেই আক্ষেপ যাতে না থাকে। সেজন্য আমরা বিয়ের আয়োজন করেছি। আয়োজনে কোন কমতি রাখিনি। যাতে করে সামাজিকভাবে মেয়েটি বা পরিবারের কোন কষ্ট না থাকে। আসলে আমাদের প্রত্যেকেরই যার যার অবস্থান থেকে এমন মানবিক কাজে এগিয়ে আসা উচিত। এছাড়া আমরা বিভিন্ন মানবিক কাজে সম্পৃক্ত রয়েছি। আমরা ভালো কাজের হোটেল, স্বর্নিভর প্রকল্প কার্যক্রম ইত্যাদি। তিনি আরো বলেন, সারাদেশে আমাদের মেম্বার রয়েছে। তাদের মাধ্যমে জানতে পারি এবং এই ধরণের বিভিন্ন আয়োজন করে থাকি।

আরবি/জেডআর

Link copied!