বুধবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৫

আলিফের ঘাড়ে কোপ দেন মেথরপট্টির চন্দন

জালালউদ্দিন সাগর, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৬, ২০২৪, ১২:৩৭ এএম

আলিফের ঘাড়ে কোপ  দেন মেথরপট্টির চন্দন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালতে বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে পরিকল্পিতভাব আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের ঘাড়ে কিরিচ দিয়ে কোপ মারেন আসামি চন্দন দাস। এক কোপেই ঘাড় অর্ধখণ্ডিত হয়ে লুটিয়ে পড়েন আলিফ। মারা যান সেখানেই। বিক্ষোভকে দাঙ্গায় রূপ দিতে পরিকল্পিতিভাবে আলিফকে হত্যার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। 


গত বুধবার রাতে ভৈরব থানার পুলিশ ও সিএমপির কোতোয়ালী থানার পুলিশের যৌথ অভিযানে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব রেলস্টেশন-সংলগ্ন মেথরপট্টি থেকে চন্দন দাসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলিফ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন চন্দন দাস। 


নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) কাজী মো. তারেক আজিজ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আইনজীবী আলিফ হত্যায় সরাসরি জড়িত ছিলেন চন্দন। তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কমলা রঙের গেঞ্জি আর কালো প্যান্ট পরা ব্যক্তিটি ছিলেন চন্দন, যার কোপের আঘাতে নিহত হন আলিফ। ঘটনার সময় নিজের পরিচয় ঢাকতে মাথায় হেলমেট পরে ছিলেন চন্দন। 


নগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের ঘাড়ে কোপ মারার পর মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে জেনে আত্মগোপনে চলে যান চন্দন। আশ্রয় নেন ভৈরবে রেলস্টেশনের পাশে মেথরপট্টিতে থাকা শ্বশুরবাড়িতে। বেশ কয়েক দিন তাকে চোখে চোখে রাখার পর যৌথভাবে গ্রেপ্তারের অভিযান চালায় কোতোয়ালী থানার পুলিশ।


চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ২৫ নভেম্বর রাতে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইসকনের বহিষ্কৃত সংগঠক ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরদিন বেলা ১১টার দিকে তাকে চট্টগ্রাম আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে চিন্ময়কে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।


এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হলে বিক্ষোভ শুরু করেন ইসকন অনুসারীরা। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয়। তারই সূত্র ধরে নগরীর লালদীঘির পাড় থেকে কোতোয়ালী এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে খুন করে দুর্বত্তরা।


এ ঘটনায় আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় চন্দন দাসকে। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা, ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। 


হত্যাকাণ্ডের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে কমলা রঙের টি-শার্ট ও কালো প্যান্ট পরিহিত চন্দনকে কিরিচ হাতে আলিফকে কোপ দিতে দেখা যায়। ভিডিও ও ছবি বিশ্লেষণ করে হত্যার সঙ্গে জড়িত ১৩ জনের পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। এর মধ্যে চন্দন দাসসহ সাত আসামি আলিফ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!