নাটোরের গর্ব, ভাষা সৈনিক ফজলুল হক আর নেই। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি।
মরহুমের ছেলে ওয়াসিফ-উল-হক তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) বাদ যোহর নাটোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজা শেষে তার দাফন সম্পন্ন হবে।
১৯৩৮ সালে নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার দমদমা গ্রামে জন্মগ্রহণ করা ফজলুল হক জীবনের শুরুতে মাতৃভাষার জন্য রাজপথে নেমে এসেছিলেন। ১৯৫২ সালে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তিনি স্থানীয় জিন্না স্কুলের (বর্তমানে নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়) শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে শহরে মিছিল ও সমাবেশ করেন। "রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই" স্লোগানে মুখরিত সেই আন্দোলনের কারণে তাকে হুলিয়া মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছিল।
ফজলুল হক তার কর্মজীবনে নাটোর জেলা বোর্ডের সেকশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি নাটোর শহরে ইউনাইটেড মেডিকেল হল নামে ওষুধ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন।
ভাষা আন্দোলনে অসামান্য ভূমিকা রাখলেও ফজলুল হক রাষ্ট্রীয় কোনো স্বীকৃতি পাননি। ২০১০ সালে নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উৎসবে তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছিল।
তার মৃত্যুতে নাটোরবাসী একজন গুণী মানুষকে হারালো। ভাষা আন্দোলনের অবদান স্বরণীয় রেখে তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই।
আপনার মতামত লিখুন :