ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
শেখ পরিবার

মামলা হলেও তদন্তে অগ্রগতি নেই

মোস্তাফিজুর রহমান সুমন

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪, ০৯:০০ পিএম

মামলা হলেও তদন্তে অগ্রগতি নেই

ফাইল ছবি

ঢাকা: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর তার আত্মীয়স্বজনের বিরুদ্ধে সারাদেশে ডজন-ডজন মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হননি। শেখ পরিবারের সদস্যদের মামলা হলেও তদন্তে তেমন কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছেনা।

হাসিনার দেশ ত্যাগের সঙ্গে সঙ্গে গত দেড় দশকের ক্ষমতাশালী আত্মীয়স্বজনরাও যেন হারিয়ে গেছেন। গুঞ্জন রয়েছে, বেশির ভাগ স্বজন হাসিনার আগেই দেশ ছেড়েছেন। আবার অনেকে দেশেই গা-ঢাকা দিয়েছেন। এদিকে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় হওয়া হাসিনার স্বজনদের মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই বললেই চলে।

কোটা সংস্কার থেকে হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাজপথে নেমে আসা ছাত্র-জনতার ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ও দলের নেতাকর্মীদের গুলিতে শত শত মানুষের প্রাণহানি হয়। আহত হয় ২০ হাজারের বেশি মানুষ। প্রায় ১ হাজার মানুষ চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায়। চোখ হারায় হাজারখানেক মানুষ।

হাসিনার দোসররা বল প্রয়োগ করে ছাত্র-জনতাকে দমিয়ে রেখে আন্দোলন রুখে দিতে চেয়েছিল। স্বৈরাচারী হাসিনার মতো তার আত্মীয়স্বজনরাও দেশব্যাপী হত্যাযজ্ঞের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল।

শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকেই দলের মন্ত্রী-এমপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা কেউ দেশ ছেড়েছেন, কেউ আছেন আত্মগোপনে। ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন হাসিনার সহচর ৩৩ জন মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও এমপি। এ ছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ের গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের সংখ্যা ১০০ পার হয়েছে বলে পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। তবে শেখ হাসিনার আত্মীয়স্বজনদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। যদিও হাসিনা-রেহানা এবং তাদের সন্তানেরা ৫ আগস্টের আগে থেকেই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

জানা গেছে, শেখ পরিবাররে সদস্যদের মধ্যে যারা দেশে আত্মগোপনে তাদের অনেকেই গোপালঞ্জ জেলায় আবার অনেকেই রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাদের আত্মগোপনে থাকতে গোয়েন্দা সংস্থা বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন সদস্যদের শেল্টারে রয়েছেন। গুঞ্জন রয়েছে অনেকে ক্যান্টনমেন্টে আশ্রিত অবস্থায় আছেন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ৫০০ অধিক রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রাণহানির ভয়ে সেনাবাহিনীর আশ্রয় পান। সেনাপ্রধান আশ্রয় নেওয়াদের সংখ্যা বললেও তাদের নাম প্রকাশ করেনি।

শেখ হাসিনার দেড় দশকের ক্ষমতার আমলে তার পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনরা হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন, অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ বিদেশে পাচার করেছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে শেখ হাসিনা আর এটিকে ব্যবহার করে তারই আত্মীয়স্বজনরা মন্ত্রী-এমপি হয়েছেন। ঘুষ, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, নিয়োগ-বদলি বানিজ্য করে মালিক হয়েছেন অবৈধ সম্পদের। দেশের বিভিন্ন স্থানে হাসিনার আত্মীয়স্বজনদের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের অভিযোগ পুরোনো। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দিনের পর দিন অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়লেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয়নি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ মদদে দেশজুড়ে তারা রামরাজত্ব কায়েম করেছিল।

 

আরবি/এস

Link copied!