রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ছাত্রদল ছাড়াও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাহিদুলের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এরপর তাঁরা সেখানে বিক্ষোভ করেন। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। পরে ঢাকা মহানগরের চারটি ইউনিটের নেতা-কর্মী পৃথকভাবে নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনের সড়কে মিছিলও করেন।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গ থেকে জাহিদুলের মরদেহ নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে নেওয়া হয়। সেখানে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন। জানাজা শেষে মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নেওয়া হয়।
এদিকে, পারভেজকে বেসরকারি প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় ৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া ২০ থেকে ৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। জাহিদুলের ভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে মামলা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিহত জাহিদুলের ভাই হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি ও ইংরেজি বিভাগের তিন ছাত্র মাহাথি, মেহেরাব, আবুজর গিফারী ছাড়াও আরও পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে।
ওসি সালাউদ্দিন আরও বলেন, মোট আসামি আটজন। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এ ছাড়াও এ তালিকায় অজ্ঞাত আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টাও চলছে।
গতকাল শনিবার বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সামনে ‘ইঙ্গিতপূর্ণ’ হাসাহাসিকে কেন্দ্র করে জাহিদুল ইসলামকে হত্যা করা হয়েছে। জাহিদুল বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। তিনি শাখা ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২২ বছর বয়সী এ শিক্ষার্থীর বাড়ি ময়মনসিংহে।
ছাত্রদল জানিয়েছে, জাহিদুল ইসলাম তাদের সংগঠনের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা তাঁকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছেন।
তবে ছাত্রদলের এ অভিযোগকে ‘ঘৃণ্য মিথ্যাচার’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের ফেসবুক পেজে এ অভিযোগের বিষয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলা হয়েছে, ‘এক মৃত ব্যক্তিকে ব্যবহার করে ছাত্রদল যে নোংরামি করছে, তা নতুন বাংলাদেশ ও নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কাম্য নয়।’
আপনার মতামত লিখুন :