ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
ঢাকায় দুই ডজন বাড়ি ও অর্ধশতাধিক ফ্ল্যাট হারুনের

অভিনব কায়দা অকল্পনীয় কৌশলে দুর্নীতি

মোস্তাফিজুর রহমান সুমন

প্রকাশিত: আগস্ট ৩০, ২০২৪, ০১:০২ এএম

অভিনব কায়দা অকল্পনীয় কৌশলে দুর্নীতি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ঢাকা: গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভাতের হোটেল খুলে দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনার ঝড় তোলা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ চাকরি জীবনের শুরু থেকেই নানা অনিয়ম, প্রতারণা ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের কারণে সমালোচিত। ডিবি হারুন নামে অধিক পরিচিত এ পুলিশ কর্মকর্তা বছরের পর বছর অপরাধ করলেও কখনো শাস্তি পাননি। উল্টো পদোন্নতি পেয়ে বসেছেন পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ সব ইউনিটে। এমনকি পিতার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট নিয়ে সরকারি চাকরিতে যোগদান করেছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

নিয়োগ বাণিজ্য, নারী কেলেঙ্কারি, ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, জমি দখল, গুম, খুন, অর্থ পাচারসহ এমন কোনো অপরাধ নেই, যেখানে হারুনের নাম নেই। বছরের পর বছর অনিয়ম আর দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।

রাজধানীর উত্তরা, গাজীপুর ও কিশোরগঞ্জে হারুনের অন্তত হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। নামে-বেনামে অন্তত তিনটি রিসোর্টের মালিকানা আছে হারুনের। রয়েছে একাধিক আবাসিক হোটেল।

আরও অন্তত ১০টি কোম্পানির মালিক তিনি। শুধু ঢাকাতেই আলিশান বাড়ি করেছেন দুই ডজনেরও বেশি। এর বাইরে আছে অর্ধশতাধিক প্লট ও ফ্ল্যাট। সম্পদে সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদকেও ছাড়িয়ে গেছেন তিনি।
জানা গেছে, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের আশকারায় হয়ে ওঠেন বেপরোয়া। সিনিয়র অফিসারদের পাত্তা দিতেন না।

উত্তরায় কয়েকটি স্থানে সরেজমিন গিয়ে তার সম্পদের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। কিছু সম্পদ আত্মীয়ের নামে কিনেছেন তিনি। কিছু সম্পদ দখল করার অভিযোগ রয়েছে।

এত অনিয়ম অপরাধ করেও হারুন বরাবরই থেকে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। কেউ তার বিরুদ্ধে টুশব্দটিও করতে পারেননি। কিন্তু সরকার পরিবর্তনের পর হারুন অর রশীদও লাপাত্তা হয়ে যান। এ সুযোগে মানুষজন তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে। তিনি ডিবিতে থাকাবস্থায় কীভাবে নিরীহ বিত্তবান ব্যবসায়ীদের ধরে সামারি করতেন, নির্যাতন, ভয়-ভীতি দেখিয়ে, জেলে পুরে। ইতোমধ্যে সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

হারুনের তথ্য চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। গত মঙ্গলবার দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, পাসপোর্ট, নির্বাচন কমিশনসহ অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

হারুন দুর্নীতি করেছেন অভিনব কায়দায়, অকল্পনীয় কৌশলে। যেমন- দেশের টাকা পাচার করতে তিনি প্রতিষ্ঠিত করেন মানি এক্সচেঞ্জ। যার মাধ্যমে নিরাপদে টাকা পাচার করলেও কেউ ধরতে পারেনি। আবার নিজ এলাকা ভাটিতে বেকারত্বের অভিশাপ ঘোচানোর জন্য গড়ে তোলেন প্রেসিডেন্ট পার্ক নামের বিশেষ ট্যুরিস্ট স্পট। বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স এনে বৈধ আয় দেখানোর জন্য নিউইয়র্ক দুবাই ও জেদ্দায় গড়ে তোলেন সুরম্য অট্টালিকা, হোটেল ও সোনার ব্যবসা। নিজের নামে যৎসামান্য কিছু রেখে সবই করেছেন স্ত্রী, শ্বশুর, ভাই ও বন্ধুর নামে।

মানুষের সম্পত্তি দখলের পর তা বিক্রি এবং সেই টাকা দেশের বাইরে পাঠানোর দায়িত্ব পালন করতেন ডিবির খিলগাঁও জোনের এডিসি সাইফুল। বিদেশে অর্থ পাচারের সুবিধার জন্য গড়ে তোলা হয় নিজস্ব মানি এক্সচেঞ্জ। ঢাকায় এই প্রতিষ্ঠানের অফিস পুরানা পল্টনের আজাদ প্রোডাক্টসের গলিতে।

কার্যক্রম পরিচালনায় দুবাইয়ে আছে আরেকটি অফিস। এই মানি এক্সচেঞ্জ পরিচালনা করেন এডিসি সাইফুল ইসলামের দুই ভাই। একজন থাকেন দেশে, আর আরেক ভাই রিফাত অবস্থান করেন দুবাই।

ডিবি ও দুদক সূত্র জানায়, হারুনের অর্জিত অর্থের ফিরিস্তি দেখলে বোঝা যাবে এই দুর্নীতি এতটাই সূক্ষ্ম কায়দায় করা হয়েছে যে তদন্তেও এর কোনো মাথামন্ডু পাওয়া যাবে না।

মামলা দায়ের করা হলেও মেরিটের অভাবে সেটার চার্জশিট দেওয়াও কঠিন হবে। দেশের সম্পদের না হয় একটা কূল-কিনারা করা যাবে- কিন্তু বিদেশে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা কিংবা লগ্নিকে আইনের আওতায় আনা খুবই কঠিন হয়ে যাবে। গায়ের জোরে ওপর মহলের নির্দেশে মামলা করে গোঁজামিলের চার্জশিট দিলেও আদালতে সেগুলো টিকবে না- যদি না আদালতেও হস্তক্ষেপ করা হয়।

কাজেই এগুলো এখন মানুষের মুখরোচক খবর হয়েই থাকবে। আর কৌতূহল ও বিস্ময়ের সৃষ্টি করবে কিভাবে গ্রামের একজন কৃষকের ভুয়া, মুক্তিযোদ্ধার কোটায় চাকরি নিয়ে রাতারাতি উঠে গেছে অর্থের পাহাড়ে।

পুলিশের সাবেক উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হারুন অর রশীদ ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার। এর আগে ছিলেন ডিএমপির গোয়েন্দাপ্রধান। গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন। চাকরির জীবনে তাকে পেছনের দিকে তাকাতে হয়নি।

যেখানে হাত দিয়েছেন ‘সোনা’ ফলেছে। সূত্রমতে, যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) সুপারিশে তার স্ত্রীর নামে থাকা ১ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা আটকে গেছে।

অথচ তার গ্রামে গিয়ে মানুষের মুখে শোনা যায়, নানা রকম চকমপ্রদ কাহিনী। ঢাকার অদূরে ভাটি এলাকা কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থানার হোসেনপুর গ্রামের এক গরিব চাষি আবুল হাশেমের ছেলে হারুন অর রশীদ। দুর্গম যাতায়াত ব্যবস্থায় কিশোরগঞ্জ শহর থেকে তাদের গ্রামে যেতে হলে নৌকায় লাগত কয়েক ঘণ্টা। এখন যোগাযোগের বিস্ময়কর উন্নতির দরুন সেখানে মাত্র এক ঘণ্টায় যাওয়া সম্ভব। এমন অনুন্নত ভাটি এলাকার ছেলে হারুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আশপাশের মানুষের সহযোগিতা নিতেন।

হারুনের এক সহপাঠী জানান, একাত্তরের যুদ্ধের সময় তার বাপ, দাদা ও চাচাদের ভূমিকা ছিল খুবই জঘন্য। সে সময় তার বাবা আবুল হাশেম, চাচা সোলেমান এবং কুরবান আলী, বাদশা মোল্লার নেতৃত্বে পাকিস্তানি মিলিটারিদের সহযোগিতা করতেন। তাদের নেতৃত্বে মিঠামইন থানার জনৈক শাহেদ সাহেবের বাড়িতে পাকিস্তানি মিলিটারিসহ আক্রমণ করে ১৮ জন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়।

তবে ১৯৯৩-৯৪ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। তখন অর্থের অভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৯৯৯-২০০০ সালের দিকে সালসাবিল বাসের টিকিট চেকারের চাকরি নিয়েছিলেন। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে হারুন তার বাবার মুক্তিযোদ্ধা সনদ বানিয়েছিলেন। সেটি ব্যবহার করেই বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুলিশের চাকরি পান।

সারদায় ট্রেনিংয়ের সময় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে চাকরিচ্যুত হন। এরপর মার্কেন্টাইল ব্যাংকে চাকরি করেন।

পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ছাত্রলীগ করার কারণে হারুন পুলিশের চাকরি ফিরে পান। তারপর আর তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি।

রাতারাতি বিস্ময়কর উত্থান ঘটতে থাকে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে লালবাগ এলাকার ডিসি থাকাবস্থায় বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন ফারুককে রাজপথে লাঞ্ছিত করে রাতারাতি আলোচনার শীর্ষে চলে আসেন। তারপর গোটা পুলিশের আলোচিত চরিত্রে পরিণত হন।

গত পনেরো বছরে একের পর এক পদোন্নতি পেয়েছেন হারুন। বিশেষত তার এলাকার নেতা আব্দুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর থেকে আরও বিশেষ নেক নজরে ছিলেন পুলিশের শীর্ষ মহলের। এ ধারায় সর্বশেষ তিনি পেয়ে যান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান। যা পুলিশের ডিআইজি পদমর্যাদার। এ পদে তার সর্বসাকুল্য বেতন-ভাতাদি মিলে লাখ টাকার মতো পেতেন। অথচ এই টাকার একজন পুলিশ কর্মকর্তা এখন দেশের অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তিতে পরিণত হয়ে গেলেন। কিন্তু কিভাবে? এটাই কোটি টাকার প্রশ্ন। মোটা দাগে যার উত্তর হচ্ছে- তিনি চাকরিতে থাকাবস্থায় কোনোকিছুরই তোয়াক্কা করেননি। ধরাকে সরাজ্ঞান করাই ছিল তার অবৈধ আয়ের প্রধান উৎস।

যখন যেখানে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেখানেই নানান অনিয়মে জড়িয়েছেন। প্রতিটি ধাপে প্রতারণা ও উচ্ছৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে জড়ালেও তাকে কখনো শাস্তি পেতে হয়নি। বরং পদায়ন করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ সব ইউনিটে। ডিবি কার্যালয়ে নায়িকাদের এনে ফটোশুট করে আলোচনায় থাকতেন। তার একটি অশ্লীল ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে।

নায়িকা-মডেলদের হারুনের ডেরায় যাতায়াত ছিল নিয়মিত। কেউ আসতেন সইচ্ছায় আকার কেউ আসতেন বাধ্য হয়ে। তবে সুবিধা পেতেন সবাই। এক কথায় ডিবি কার্যালয় হারুন রঙ্গমঞ্চ বানিয়ে ফেলেছিলেন।

হারুনের যত সম্পদ: রাজধানীর উত্তরায় হারুনের বহুতল একাধিক বাড়ি, ফ্ল্যাট ও প্লটের তথ্য পাওয়া গেছে। ৩ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর রোডে (লেকপাড়ের রোডে) রয়েছে ‘পার্ক লেক ভিউ’ নামে ৬ তলা একটি আলিশান বাড়ি। এটি গেস্ট হাউস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। একই রোডের মাথায় ৮ তলা আরেকটি বাড়িতে সপরিবারে থাকতেন তিনি। ৩ নম্বর সেক্টরের ৭ নম্বর রোডে ১০ কাঠা জায়গার ওপর হারুনের শ্বশুরের নামে একটি ১০ তলা মার্কেট। চার রাস্তার মোড়ে জমিসহ এই ভবনটির বাজারমূল্য শতকোটি টাকার বেশি।

১২ নম্বর সেক্টরের সোনারগাঁও জনপথ রোডের ২১ নম্বরে ৬ তলা একটি বাড়ি বন্ধক রেখে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন হারুন।

১৩ নম্বর সেক্টরের শাহ মখদুম এভিনিউয়ে ১২ নম্বর প্লটটির মালিক হারুন। এখানে কয়েকটি দোকান ভাড়া দেওয়া আছে। একই সেক্টরের সোনারগাঁও জনপথ রোডের ৭৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের একটি প্লট জজ মিয়া নামের এক ব্যক্তির কাছে ভাড়া দেওয়া আছে। এছাড়া ৩ নম্বর সেক্টরে ১৫ নম্বর রোডের ২৩ নম্বর হোল্ডিংয়ে ১৪ তলা বাণিজ্যিক ভবন, ১৩ নম্বর সেক্টরে ৩ নম্বর রোডের ৪৯ নম্বর বাড়িতে ৬ তলা ভবন, ৩ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডের ১ নম্বর হোল্ডিংয়ে ৭ কাঠার বাণিজ্যিক প্লট, ১০ নম্বর সেক্টরের ১১ নম্বর রোডের ৩৯ নম্বর হোল্ডিংয়ে ৫ কাঠার একটি প্লটের মালিক হারুন।

৫ নম্বর সেক্টরে ৬ নম্বর রোডে ২৯ ও ৩০ নম্বর হোল্ডিংয়ের ১০ কাঠার দুটি প্লটের একটিতে টিনশেড ঘর বানিয়ে ভাড়া দেওয়া এবং অন্যটি গোডাউন।

১৪ নম্বর সেক্টরের ২০ নম্বর রোডের ১৭ ও ১৯ নম্বর প্লট চারটি কোম্পানির শোরুম হিসেবে ভাড়া দেওয়া। ১০ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাড়ির ৫ তলায় কথিত মামা জাহাঙ্গীরের অফিস। এই অফিসেই হারুনের সব সম্পত্তির কাগজপত্র রক্ষিত থাকে বলে জানিয়েছে জাহাঙ্গীরের ঘনিষ্ঠ সূত্র।

উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ৯ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর প্লটটি হিরন নামে এক ব্যক্তির কাছে ৩২ কোটি টাকায় বিক্রি করেছেন হারুন। ৩ নম্বর সেক্টরের সাবেক ৯ নম্বর রোডে ৭ কাঠার ৪১ নম্বর প্লটটি মাসিক ১৪ লাখ টাকায় ভাড়া দেওয়া আছে। ১১ নম্বর সেক্টরে ৫ কাঠার আরেকটি প্লট ভাড়া দেওয়া আছে। এ ছাড়া ১৩ নম্বর সেক্টর, জম টাওয়ারের পাশে, উত্তরা থার্ড ফেইসে, পূর্বাচলে কয়েক ডজন ফ্ল্যাট রয়েছে হারুনের। বনানী কবরস্থানের দক্ষিণ পাশে ২০ কাঠার প্লট দখল করে একটি কোম্পানির কাছে ৭০ কোটি টাকায় বিক্রি করেন হারুন। টঙ্গীর সাতাইশ মৌজায় ৮ বিঘা জমিতে কোনো অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ করা হচ্ছে ‘জেএইচ-জিওটেক্স লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

টঙ্গীর গুশুলিয়া মৌজায় ছায়াকুঞ্জ-৫ আবাসিক প্রকল্পের ভেতরে ১২ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হচ্ছে, আবাসিক হোটেল। অভিযোগ রয়েছে, গাজীপুরের পুলিশ সুপার থাকার সময় ওই এলাকার ভূমিদস্যু কামরুজ্জামান ওরফে কামরুল ওরফে মাউচ্ছা কামরুলের সঙ্গে সখ্য ছিল হারুনের। কামরুলের ভূমিদস্যুতার রক্ষক ছিলেন এই পুলিশ সুপার। সম্প্রতি কামরুলের ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানেও হারুনের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। বহুল আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ। সরকার পতনের পর তার থেকে এই প্রভাবশালী কর্মকর্তার হদিস নেই। হারুনের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছে ভুক্তভোগীসহ অনেকে। টানা চার বছর গাজীপুর জেলায় এসপি থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে রয়েছে অসংখ্য অভিযোগ। টাকার জন্য এমন কিছু নেই যা তিনি করেননি। সত্যকে মিথ্যা, মিথ্যাকে সত্য বানিয়ে বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও বোকা বানিয়েছেন। তার অত্যাচার থেকে রেহাই পায়নি সাংবাদিকরাও। যারা তুলে নিয়ে যাচ্ছিল তাদের তিনি জিজ্ঞাসা করেছিলেন কেন তাকে নেওয়া হচ্ছে। ডিবির সদস্যরা জবাব দেন এসপি হারুনের নির্দেশে তাকে নেওয়া হচ্ছে।

আরবি/জেডআর

Link copied!