ঢাকা বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

মোবাইল ফিক্সারের মালিকে‍‍`র বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ

এনামুল হক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪, ১১:২৫ পিএম

মোবাইল ফিক্সারের মালিকে‍‍`র বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মোবাইল ফিক্সার কোম্পানির মালিক সজিব জমাদ্দার ওরফে আহমেদ বিন সজিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দায়ের করেছেন কামরুল ইসলাম নামের মোতালিব প্লাজার একজন ব্যবসায়ী।
আজ সোমবার দুদকে এই অভিযোগটি জমা দেওয়া হয়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, এই সজিব একজন মধ্যবৃত্ত পরিবারের ছেলে। বিগত ৪/৫ বছর আগে রাজধানীর হাতিরপুল মোতালিব প্লাজা শপিং কমপ্লেক্সে বিভিন্ন দোকানে মোবাইল ইলেট্রেশিয়ান হিসেবে চুক্তি ভিক্তিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সাম্প্রতিক সময়ে সজিব জমাদ্দারের বেশ কিছু বিলাসী কর্মকাণ্ড আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা রীতিমতো হাতিরপুল মোতালিব প্লাজা মার্কেটের দীর্ঘদিনের পুরানো ব্যবসায়ীদের মাঝে হইচই ফেলে দিয়েছে। যা দেখে রীতিমত সবাই অবাক হয়ে গেছেন। মার্কেটের পুরানো ব্যবসায়ী যখন বৈধভাবে ব্যবসা করে ভাঙা সাইকেল ও মোটরসাইকেল নিয়ে মার্কেটে আসেন ঠিক সেই সময়ে ৪ বছরে সজিব জমাদ্দার মাজেন্ডা ব্র্যান্ড, হেরিয়ার ব্র্যান্ড ও স্পোর্টসের মতো বিলাস বহুল গাড়ি নিয়ে মার্কেটে প্রবেশ করেন।

লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, সজিব জমাদ্দার প্রতিটি গাড়ি নিজ নামে ক্রয় করেছেন, যার গড় মূল্য ৬০ লক্ষ টাকা। সজিব নিজ নামে কোম্পানিও খুলেছেন। যার নাম দিয়েছেন মোবাইল ফিক্সার। এরই মধ্যে সজিব নিজ কোম্পানির নামে মোতালিব প্লাজা শপিং কমপ্লেক্সে ১০টির অধিক দোকান ভাড়া নিয়েছেন। প্রতিটি দোকান ভাড়া নিতে এ্যাডভান্স বাবদ সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। শুধু মোতালেব প্লাজায় নয় বসুন্ধরা সিটি এবং যমুনা ফিউচার পার্কেও দোকান রয়েছে তার। সব দোকান ভাড়া বাবদ এ্যাডভান্স করেছে মোট তিন কোটি টাকারও বেশি। এছাড়াও চট্টগ্রামের তার দোকান রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সজিব মোতালিব প্লাজায় নিজস্ব আলিশান ফ্ল্যাটে থাকেন। সজিব  ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদির মাধ্যমে সমালোচিত সাবেক ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদের সাথে সক্ষতা গড়ে। বিভিন্ন সময়ে ডিবি সদস্যদের দ্বারা জব্দকৃত মোবাইল সজিব নিয়ে এসে টার্স ডিসপ্লে খুলে অধিক দামে বিক্রি করে রাতারাতি শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। শুধু রাজধানীতে নয় সজিব তার নিজ এলাকায়ও করেছেন বিলাস বহুল বাড়ি, ক্রয় করেছেন অনেক জায়গা জমি।

ক্ষমতাশীন আওয়ামী লীগ সরকার থাকাকালীন সময়ে মাদারীপুরের সাবেক নৌ-মন্ত্রী শাহজাহান খানের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় গড়েছেন অঢেল সম্পদ। রাজধানী ঢাকাতে সজিব বিতর্কিত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ছত্রছায়ায় চলতেন। গোলাম রাব্বানীর নাম পরিচয় ব্যবহার করে সজিব ইতিমধ্যে শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সজিব ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কারণে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার যৌক্তিক আন্দোলনকে প্রতিহত করতে গোলাম রাব্বানীর দলকে মোটা অংকের টাকাও দিয়েছেন বলে শুনা যায়।

সজিব মোবাইল ফিক্সার নামে যে কোম্পানিটি খুলেছেন যা লিমিটেড বলা হলেও আদৌ সেটা লিমিটেড কি না, আদৌ সেটা সরকারী সকল নিয়ম নীতি মেনে পরিচালনা করছে কি না তা দুদকের অভিযানে প্রতিয়মান হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে লিখিত অভিযোগে।

দুদকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে দুদক।

দুদকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় সজিব জমাদ্দার ওরফে আহমেদ বিন সজিবের সঙ্গে। তিনি তার নামে যমুনা ফিউচার পার্কে একটি দোকান, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স‍‍`এ একটি দোকান,ও মোতালেব প্লাজ চারটি দোকান থাকার কথা স্বীকার করেন। তার ব্যবহৃত বিলাস বহুল গাড়ির বিষয় জানতে চাইলে, তার ব্যক্তিগত দুটি গাড়ি আছে বলে জানান।

আরবি/জেডআর

Link copied!