ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো ওসি সায়েদ পলাতক, যোগ দেননি নতুন কর্মস্থলে

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৪, ১০:৩৩ পিএম

আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানো ওসি সায়েদ পলাতক, যোগ দেননি নতুন কর্মস্থলে

ওসি সায়েদ। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার আশুলিয়ায় গণহত্যার পর মরদেহ ভ্যানে তোলা ও আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় একে একে বের হয়ে আসছে আড়ালে থাকা কুশীলবদের নাম। এনটিভির নিজস্ব অনুসন্ধানে মিলেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলা এই ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে উঠে এসেছে আশুলিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদের নাম।

নিজের দায় এড়িয়ে ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে নানা কৌশল ও ছলনার আশ্রয় নিলেও শেষ পর্যন্ত ফেঁসেই যাচ্ছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ওসি এএফএম সায়েদ।

গ্রেপ্তার আতংকে ইতোমধ্যে গা ঢাকা দিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। খোদ পুলিশের একটি সূত্র বলছে, নিজেকে আড়াল করতে নানা কৌশল খাটিয়েও শেষ রক্ষা না হওয়ায় যে কোন মুহূর্তে অবৈধ পথে দেশত্যাগের পরিকল্পনা করছেন এএফএম সায়েদ। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ইতিমধ্যেই ইমিগ্রেশনসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে তার বিষয়ে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।

সূত্রমতে, ২০০৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী এসআই (নিরস্ত্র) পদে পুলিশে যোগ দেয়া এএফএম সায়েদ খুলনা মহানগরের ৪ নং মিয়া পাড়া মহল্লার মো. ইসমাইলের ছেলে। তার পুলিশ পরিচিতি নং -বিপি-৮০০৬১৪৫৩৩৬।

৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের মধ্য দিয়ে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের।

জানা গেছে, সেদিন বিকেলে লাশের স্তূপে আরো লাশ তোলা এবং পরে পোড়ানোর একাধিক ভিডিও প্রকাশ্যে এলে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, বীভৎস ও নারকীয় ওই ঘটনার নির্দেশদাতা হিসেবে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

সেদিন ঘটনাস্থলে থাকা পরিদর্শক, উপ-পরিদর্শক এবং কনষ্টেবল পদের প্রত্যক্ষদর্শী চার পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় এনটিভির। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, লাশ ভ্যানে তোলার পূর্বপর ঘটনা জুড়ে যা কিছু ঘটেছে সকল কিছুর নেতৃত্বে ছিলেন আশুলিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ।

তার নির্দেশেই লাশ পড়ানোর জন্য পেট্রোল জোগাড় করেছিলেন আশুলিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের তৎকালীন ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত উদ্দিন ও আশুলিয়া থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই ) মনির।

প্লাস্টিকের বোতলে করে আনা হয়েছিলো পেট্রোল। তিন দফায় গাড়িটিতে ছিটানো হয় পেট্রোল।

পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশ্নের জবাব এতদিন ওসি এএফএম সায়েদ বলে আসছিলেন, ঘটনার সময় তিনি ছিলেন থানার অভ্যন্তরে। পরণে ছিলো পুলিশের পোশাক। লাশের স্তূপ এমনকি লাশ পোড়ানো ঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানতেন না। অথচ সাক্ষ্য প্রমাণ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণীতে উঠে আসছে উল্টো চিত্র।

আরবি/জেডআর

Link copied!