মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে আউটসোর্সিংয়ের ৩১৪টি পদে নিয়োগের টেন্ডার ড্রপিং নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্দিষ্ট সময়ে ঠিকাদাররা টেন্ডার জমা দিতে গেলেও তাদেরটা জমা না নিয়ে গোপনে আগেই নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র জমা নেয়া হয়েছে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে দু-গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী পৌছলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই এক পক্ষের টেন্ডার জমা নেয়ায় বাকি ঠিকাদাররা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
অপরদিকে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমানকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেছেন সংস্থার বিক্ষুব্ধ কর্মীরা। কর্মীদের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও এসব পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় তাদের পক্ষে আর ধৈর্য ধরা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে অধিদফতরের আউটসোর্সিংয়ের ৩১৪ পদের নিয়োগ আটকে থাকার অভিযোগে তারা ডিজিকে অবরুদ্ধ করেছেন।
রোববার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ে ডিজিকে অবরুদ্ধ করেন আন্দোলনকারীরা। এসময় বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, নিয়োগ না হওয়ায় কর্মক্ষেত্রে চাপ ক্রমশ বাড়ছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, অথচ কর্তৃপক্ষ তাদের সমস্যার কোনও সুরাহা করছে না। সেজন্য উত্তেজিত কর্মীরা সরাসরি ডিজির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে নিয়োগের বিষয়ে পরিষ্কার জবাব দাবি করেন।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে টেন্ডার বঞ্চিত ঠিকাদররা। ঠিকাদারদের পক্ষে গালফ সিকিউরিটি সার্ভিস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বিএস খান স্বপন বলেন, অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তাদের সময় দেয়া হয়েছিল সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১ টা। তারা যথাসময়ে উপস্থিত হলে তাদের উপর হামলা চালায় একদল সন্ত্রাসী। তাদেও তাদের টেন্ডার জমা দিতে দেয়া হয়নি। আগে থেকেই তারা একটি পক্ষকে কাজ দিতে এ কাজ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মহাপিরচালকের কাছে অভিযোগ করলেও তিনি অজ্ঞাত কারণে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে তিনি বলেছেন নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেছে এখন কিভাবে নেবেন।
স্বপন বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় একটি সুরক্ষিত স্থানে মাল্টি ড্রপিং বক্স রাখার নিয়ম থাকলেও তা করা হয়নি। বরং এমন স্থানে রাখা হয়েছে যেখানে সন্ত্রাসীরা অবাধে সেখানে প্রবেশ করে তাদের বাঁধা দিয়েছে। এ ঘটনায় প্রথমে পুলিশ পরে সেনাবাহিনীকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে আসলেও কোন সুরাহা হয়নি।
তিনি বলেন, মিশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক আনিছুর রহমান তার দলবল নিয়ে ঠিকাদারদেও টেন্ডার ড্রপিংয়ে বাধা দেয়। এবং ঠিকাদারদের প্রানে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এই আনিছ আওয়ামী লীগ সরকারের লোক হলেও এখন ভোল পাল্টে আবারো সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে। অবশ্য এই অধিদপ্তরে আগের সরকারের কিছু লোক এখনো রয়েছে, তাদের মাধ্যমেই হয়তো তার প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে টেন্ডার জমা দিয়েছে। এই আনিছ কিছুদিন আগেও মানুষকে চাকরি দেয়ার কখা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিল এবং সে সাজাপ্রাপ্ত। স্বপন জানান, তাকে ফোনেও আনিছ নানভাবে হুমকি দিচ্ছে।
বলছে আর কখনো কেউ কাজ পাবেনা, একমাত্র তার প্রতিষ্ঠান মিশনই সকল কাজ পাবে। তিনি এই টেন্ডার বাতিল কওে প্রনরায় টেন্ডার আহবান ও টেন্ডার চমা দিতে বাধাঁ দিতে আসা সন্ত্রাসীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :