শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ২০২০ সালে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগপন্থি একজন ব্যবসায়ী নেতা এবং এফবিসিসিআই ও বিজিএমইর সাবেক সভাপতি হওয়ায় দেশের অর্থনীতি ধ্বংসের মূল পরিকল্পনাকারী ।
হাজারীবাগ, ধানমন্ডি ও নিউমার্কেট এলাকায় আধিপত্য বিস্তার থেকে শুরু করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে ছিলেন ঢাকা-১০ আসনের সাবেক এমপি ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। তাকে ধরার পর গোয়েন্দা পুলিশ এসব তথ্য জানায়।
পুলিশ বলছে, এমপি মহিউদ্দিন ৫ আগস্টে ছাত্র হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। এই আন্দোলনের সময় তিনি বিভিন্ন তথ্য দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে দিতেন এবং তার কথামতো ছাত্র আন্দোলনের সময় গুম, খুন ও হত্যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত।
অভিযোগ রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর ভাড়াটে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের দিয়ে হাজারীবাগ, ধানমন্ডি ও নিউমার্কেটসহ বেশকিছু এলাকায় গুলি চালান। তা ছাড়া দীর্ঘদিন শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন দখল করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করে দেশ-বিদেশে পাচার করেছেন।
সম্প্রতি তিনি গ্রেপ্তারের পর সরকারি বিভিন্ন সংস্থা তার দুর্নীতির আমলনামা নিয়ে কাজ শুরু করে। ইতিমধ্যে তারা বেশকিছু তথ্য-প্রমাণও পেয়েছে।
বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন এবং বিজিএমইএ (বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি) সূত্র জানায়, সম্প্রতি দেশের পোশাকশিল্পে অস্থিরতার পেছনের চাবিকাঠি নেড়েছেন ফ্যাসিবাদের দোসর এই মহিউদ্দিন। তা ছাড়া, বিগত সরকারের সময় দেশের পোশাকশিল্পে চলমান অস্থিরতা ও শ্রমিক অসন্তোষের পেছনেও ছিলেন তিনি।
পোশাকশিল্প দেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় ও একক খাত। এই খাত ধ্বংসের পেছনে ফ্যাসিবাদের দোসর মহিউদ্দিনের নাম বারবার উঠে আসছে। আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের গত ১৬ বছর বিজিএমইএ-তে ভোটবিহীন আওয়ামী নেতাদের পুনর্বাসন ও লুটপাটের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করা হয়; আর এ সবের পেছনে ছিলেন সাবেক এই এমপি।
সূত্র জানায়, এমপি মহিউদ্দিন মূলত আওয়ামী লীগ সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণপন্থি একজন ব্যবসায়ী নেতা। তিনি এফবিসিসিআই ও বিজিএমইর সাবেক সভাপতি হওয়ার সুবাদে আওয়ামী লীগের অনেক এমপি-মন্ত্রীদের ডোনার ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :