পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৩ জুলাই, ২০২৪, ০৮:০৯ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

তানোরে শেড ফাউন্ডেশনের পরিচালক রাজুর প্রতারণা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাজশাহীর তানোরে শেড ফাউন্ডেশনের পরিচালক রাজু আহম্মেদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত মাসের ১৩ জুন বৃহস্পতিবার পিকে এম মোজাহার উল ইসলাম লিটন বাদি হয়ে রাজু আহম্মেদকে বিবাদী করে রাজশাহী বোয়ালিয়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রাজু আহম্মেদ বিভিন্ন কৌশলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন।

জানা গেছে, তানোর উপজেলার কলমা ইউনিয়নের (ইউপি) অমৃতপুর বকরিডাঙা হঠাৎপাড়া গ্রামের মৃত বজলার রহমানের পুত্র রাজু আহম্মেদ (৪৫)। তিনি শেড ফাউন্ডেশন রাজশাহীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা পরিসেবা প্রকল্প পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন।

এদিকে রাজু আহম্মেদের বিরুদ্ধে লিটনের করা লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে-আসামী রাজু আহমেদ (৪৫) পিতাঃ মৃত বজলার রহমান, মাতাঃ লায়নী বেগম, গ্রামঃ অমৃতপুর (বরকিভাঙ্গা হঠাৎপাড়া), ডাকঘর, চন্দনকোঠা, বানা, তানোর, জেলা, রাজশাহী। তিনি স্বাস্থ্য সুরক্ষা পরিসেবা প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। রাজু আহম্মেদ তাকে ০১/১০/২০২৩ ইং তারিখে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে মাসিক ৬০,০০০/- (ষাট হাজার) টাকা বেতন ধার্য্য করে নিয়োগ প্রদান করেন। নিয়োগপত্রে বেতন উল্লেখ আছে। নিয়োগ হওয়ার দুই মাস পরে গত ২৮/১১/২০২৩ ইং তারিখে তাকে সহকারী প্রকল্প পরিচালক ও প্রশাসন হিসেবে মাসিক ৮০,০০০/- (আশি হাজার) টাকা বেতন ধার্য্য করে নিয়োগ প্রদান করেন (নতুন নিয়োগপত্রে উল্লেখ আছে)। তার ০৮ (আট) মাসে সর্বমোট বেতন ৬,০০,০০০/- (ছয় লক্ষ) টাকা যাহা আজ পর্যন্ত তাকে দেওয়া হয়নি। বেতন চাইলে রাজু তাল বাহানা করিতে থাকে। তার প্রেক্ষিতে গত ০১/০৬/২০২৪ ইং তারিখে ১৮৪ নং স্মারকে রাজু আহম্মেদকে চিঠি দেওয়া হয়েছে (চিঠি সংযুক্ত)। পরিচালক রাজু আহম্মেদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ আঞ্চলিক অফিস হইতে ১,২৩,০০০/- (এক লাখ তেইশ হাজার) টাকা লইয়াছেন যাহা লিখিত আছে। রাজশাহী প্রকল্প অফিস হইতে ৪৮,০০০/- টাকা, উপ-প্রকল্প পরিচালক মামুনুল হাসান চপলের কাছ থেকে ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা, রাজশাহী জেলা সমন্বয়কারী ওবাইদুল হকের কাছ থেকে ৪৫,০০০/- টাকা এবং তানোর থানা অফিস হইতে ৩০,০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা, তানোর অফিস কর্মকর্তা/কর্মচারী ০৩ (তিন) জন ১। মিনা খাতুন-১,০০,০০০/- (এক লাখ টাকা), ২। আরিফুল হক- ১,০০,০০০/- (এক লাখ টাকা), ৩। অন্য একজন-১,০০,০০০/- (এক লাখ টাকা) হাতিয়ে নিয়েছে যাহা ৩০০/- টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে রাজু আহমেদ এর স্বাক্ষর রহিয়াছে। সর্বমোট প্রকল্পের ৬,৫৯,০০০/- (ছয় লাখ ঊনষাট হাজার) টাকা ব্যক্তিগত ও সাংসারিক কাজে খরচ করিয়া প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করিয়াছেন।

এই মর্মে রাজুকে গত ৩০ মে তিন দিনের সময় দিয়ে ১৮২ নং স্বারকে একটি চিঠি প্রদান করা হয়। যে ০৩ (তিন) দিনের মধ্যে অফিস (প্রশাসন) এ টাকা জমা না দিলে আপনার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে। তিনি ০৩ (তিন) মাস যাবৎ অফিসে আসেন নাই। ফোনে যোগাযোগ করা হলে আজ, কাল, পরত্ব আসব বলে তাল বাহানা করেন। গত ১২ জুন ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান যে, অফিসে আসবেন না এবং টাকার কথা বললে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দেন।এদিকে রাজুর প্রতারণায় কষ্টের জমানো টাকা হারিয়ে ভুক্তভোগীরা চরম বিপাকে পড়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তারা রাজুর দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেছেন। এবিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার (দারোগা) এস আই ছয়ফল বলেন, রাজু আহম্মেদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হয়েছে, অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে।

এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তানোর শেড ফাউন্ডেশন পরিচালক রাজু আহম্মেদের মুঠোফোন (০১৮৪১-৬৮) বন্ধ থাকায় তার কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মন্তব্য করুন