রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২ মে, ২০২৪, ০২:৪৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

নিপীড়ন এবং ভয়ে আছে বাংলাদেশের পোশাকশ্রমিকেরা: অ্যামনেস্টি

ছবি সংগৃহীত

ভয় ও দমন-পীড়নের মধ্যে রয়েছে  বাংলাদেশে গার্মেন্টস শ্রমিকেরা বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। কারখানায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দায়মুক্তি পাওয়াকে এ ধরনের পরিবেশের জন্য দায়ী করেছে সংস্থাটি। 

বুধবার (১ মে) আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে এক প্রতিবেদনে এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে আন্তর্জাতিক অধিকার বিষয়ক সংস্থাটি। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি, তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড এবং ২০২৩ সালে বিক্ষোভকারী শ্রমিকদের ওপর ক্র্যাকডাউনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে সংস্থাটির প্রতিবেদনে। 

অ্যামনেস্টি উল্লেখ করেছে, গত মাসে রানা প্লাজার পতনের ১১ তম বার্ষিকী ছিল। ওই ঘটনায় এগারো শ’র বেশি পোশাকশ্রমিক মারা গিয়েছিলেন এবং আহত হয়েছিলেন কয়েক হাজার। এর ঘটনার পাঁচ মাস আগে তাজরিন ফ্যাশনস ফ্যাক্টরিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। সে সময় ফায়ার এক্সিট বন্ধ থাকা এবং তালাবদ্ধ কারখানা প্রাঙ্গণে আটকা পড়ে অন্তত ১১২ জন শ্রমিক মারা গিয়েছিলেন। 

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দুটি ঘটনাই কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ পর্যবেক্ষণে সম্পূর্ণরূপে অবহেলার কারণে ঘটেছিল। এ ধরনের ঘটনাকে ব্যবসা-বাণিজ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জঘন্য উদাহরণ চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি। 

বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এবং অন্যান্য এনজিও রানা প্লাজা এবং তাজরীন ফ্যাশনসের ঘটনায় রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি স্থানীয় ভবন ও কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করলেও ১১ বছরেও এগুলোর নিষ্পত্তি হয়নি। 

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের কম মজুরি দেওয়া হয় এবং ন্যায়বিচার, মজুরি, সুরক্ষা এবং কাজের অবস্থার জন্য বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকেরা সোচ্চার হলে তাঁদের হয়রানি, ভয়ভীতি এবং সহিংসতা সহ অসংখ্য বাধার মুখোমুখি করা হয়। 

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের (বিজিআইডব্লিউএফ) গাজীপুর জেলা কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলামের মৃত্যুকে দমন-পীড়নের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনে শ্রমিকদের জন্য বকেয়া মজুরি আদায়ের চেষ্টা করতে গিয়ে তিনি নিহত হন। একই বছরের অক্টোবর থেকে নভেম্বরের মধ্যে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নিয়ে বিক্ষোভ চলাকালে আরও অন্তত চার পোশাকশ্রমিক মারা যান। 

অ্যামনেস্টি অনুমান করছে, ২০২৩ সালে বিক্ষোভের পর থেকে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৩৫টি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় নামে বেনামে ৩৫ হাজার ৯০০ থেকে ৪৪ হাজার ৪৫০ শ্রমিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর ৩৫টি মামলার মধ্যে অন্তত ২৫টি মামলা করেছে কারখানাগুলো। এসব কারখানা বিশ্বের প্রধান প্রধান ফ্যাশন ব্র্যান্ডসহ খুচরা বিক্রেতাদের কাছে তাদের পণ্য বিক্রি করে।

মন্তব্য করুন