শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ০৯:০৮ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

শ্রীপুরে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সিজারিয়ানি প্রসুতির মৃত্যু

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গাজীপুরের শ্রীপুরের বরমী বাজারের নাগরিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় সিজারিয়ান অপারেশনে কামরুন্নাহার নামের এক প্রসুতির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতালে স্বজনরা এ ঘটনার বিচার দাবি করে বিক্ষোভ করে। শনিবার সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে গত শুক্রবার রাতে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয় এ প্রসুতির। 

অপারেশনের পর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে মূমুর্ষ অবস্থায় শনিবার ভোর রাতে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে রেফার্ড করে নাগরিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম সরকার ও চিকিৎসক ইশরাত জাহানকে অভিযুক্ত করে  অভিযোগ দায়ের করেছে নিহতের পরিবার। নিহত কামরুল নাহার ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার সাধুয়া গ্রামের সাইফুল ইসলাম মীরের স্ত্রী।

নিহতের দেবর দিদার মীরের ভাষ্য, তার ভাবির পূর্বেও এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে, গত শুক্রবার তৃতীয় সন্তান জন্মের জন্য তারা হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাতে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। সিজারের অপারেশন করেন চিকিৎসক ইশরাত জাহান। অপারেশনের পরে রক্তক্ষরণ হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তেমন গুরুত্ব দেয়নি। সিজারের পর চিকিৎসককে ডেকেও আর পাওয়া যায়নি। গভীর রাতে রোগীর অবস্থা অবনতি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত এম্বুলেন্স ডেকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে সকালে মারা যায় সে।

নিয়তি স্বামী সাইফুল ইসলাম মীর বলেন, সিজারিয়ান অপারেশনের পর রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তারা গুরুত্ব দেয়নি৷ তারা বলেছে ডাক্তার চলে গেছে সকালে আসবে।এর মাঝেই অবস্থার অবনতি হতে থাকে, পরে আমরা থাকি ময়মনসিংহ নিয়ে যাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় আমার স্ত্রী মারা গেছেন, আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। 

এ বিষয়ে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম সরকার বলেন, রোগীর সিজারের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়, একপর্যায়ে অবস্থার অবনতি হতে থাকলে আমরা তাকে ময়মনসিংহ পাঠিয়ে দেই, এখানে আমাদের কোন অবহেলা ছিল না আমরা রক্তক্ষরণ বন্ধের অনেক চেষ্টা করেছি। এ ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ইসরাত জাহানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে আর পাওয়া যায়নি।

গাজীপুরের সিভিল সার্জন মাহমুদা আক্তার বলেন, এভাবে একের পর এক প্রসূতি মারা যাওয়া সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছি দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে গত ৩১ শে মার্চ মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ইয়াসমিন আক্তার নামে এক প্রস্তুতি মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতাল থেকে কার্যক্রম বন্ধ করেন সিভিল সার্জন । 

মন্তব্য করুন