সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ০৭:৫১ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

সাতক্ষীরায় প্রচন্ড খরায় আম বাগান থেকে ঝরে পড়ছে চাষিদের স্বপ্ন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ, প্রচণ্ড খরা ও পোকার উপদ্রবে ঝরছে সাতক্ষীরার আম চাষিদের স্বপ্ন। কীটনাশক ও পানি দিয়ে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ফলাফল। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় বৃষ্টির অভাবে এমন অবস্থায় ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এদিকে দিনদিন দাবদাহ যতোই বাড়ছে আম চাষিদের কপালে চিন্তার ভাজ ততই স্থায়ী হচ্ছে। আর জেলা কৃষি বিভাগ বলছেন, টানা তীব্র গরমে আম টিকিয়ে রাখতে বাগান মালিকদের সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। তবে কী পরিমাণ আমের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটি এখন পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে বলতে পারেনি জেলা কৃষি বিভাগ।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ভৌগোলিক কারণে সাতক্ষীরার আম আগে পাকে। তাপমাত্রা বাড়ে যাওয়ায় টানা তীব্র গরমের ফলে এবার কালবৈশাখীর কবলে পড়তে পারে আমবাগান। গত এক সপ্তাহ ধরে সাতক্ষীরায় গড় তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪২ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে অনাবৃষ্টি। ফলে তীব্র খরায় আম বাগান গুলোতে দেখা দিয়েছে পানিশূন্যতা। এরইমধ্যে বিভিন্ন বাগানে ঝরে পড়ছে আম।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলার আম চাষি  শেখ ইজার আলী, মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, চলমান তীব্র তাপপ্রবাহ, প্রচণ্ড খরা ও পোকার উপদ্রবে ঝরছে আম চাষিদের স্বপ্ন। কীটনাশক ও পানি দিয়ে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ফলাফল। এমন অবস্থায় ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দাবদাহ যতোই বাড়ছে আম চাষিদের কপালে চিন্তার ভাজ ততই স্থায়ী হচ্ছে।তবে বৈরী আবহাওয়ার কারনে এবছর আমের ফলন বিগত কয়েক বছরের তুলনা অনেক কম। এরপর বৃষ্টি না থাকায় আমের কিছু রোগ দেখা দিচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে আম গাছের এক ধরনের সাদা পোকা। এই পোকা গুলো থাকলে আমের ক্ষতি হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, তবে তাপপ্রবাহের কারণে কয়েকদিন থেকে গাছের গোড়ায় পানি দিচ্ছি। কিছু কিছু আমের গুটি গাছেই শুকিয়ে ঝরে পড়েছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের অফিসার ইনচার্জ জুলফিকার আলী রিপন বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে সাতক্ষীরায় গড় তাপমাত্রা ৩৯ থেকে ৪১ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে অনাবৃষ্টি।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, টানা তীব্র গরমে ঝরে পড়ে যাচ্ছে, আম টিকিয়ে রাখতে বাগান মালিকদের গাছের গোড়ায় সেচ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা আম চাষিদের সঙ্গে কাজ করছেন।

তিনি আরও বলেন, চলতি মৌসুমে জেলার সাত উপজেলায় ৪ হাজার ১১৮ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। চলতি বছর ৫০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।  লক্ষ্যমাত্রা ব্যহাত হওয়ার কোন আশংকা নেই।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট সাতক্ষীরার উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শিমুল মন্ডল বলেন, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে আমের বোটার আঠা শুকিয়ে ঝরছে আমের গুটি। গুটি ঝরা রোধে সেচের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

মন্তব্য করুন