ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
সংস্কারে লাগবে ৩৩ কোটি টাকা

আগস্টের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৭৯৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪, ০৭:৫২ পিএম

আগস্টের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২৭৯৯ প্রাথমিক বিদ্যালয়

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় ২ হাজার ৭৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লোকসান হয়েছে আরও ৯৪৬টি শিখন কেন্দ্রের।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছে, বন্যায় ১১টি জেলার প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী ২ হাজার ৭৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো, আসবাবপত্রসহ বই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা সংস্কারে প্রাথমিকভাবে প্রয়োজন হবে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এটি সমন্বয় করা হবে।

বাংলাদেশের উজানে তীব্র ঢল ও অতি ভারি বৃষ্টির কারণে ২০ আগস্ট উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা শুরু হয়। পরে ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার জেলায় তা ছড়িয়ে পড়ে।

বন্যায় শিক্ষাখাতে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ ও করণীয় নির্ধারণে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সভা হয়। পরে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

সেখানে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে নোয়াখালীর ৭৬৩টি, লক্ষ্মীপুরের ৫০১টি, ফেনীর ৫৫০টি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ২২টি, কুমিল্লার ৫২৩টি, চাঁদপুরের ১৬৯টি, চট্টগ্রামের ১৬৪টি, মৌলভীবাজারের ৭৭টি, সিলেটের আটটি ও হবিগঞ্জের ২২টি স্কুলের ক্ষতি হয়েছে। খাগড়াছড়িতে কোনো বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

এছাড়া জেলাভিত্তিক ‘আউট অফ স্কুল’ শিশু শিক্ষা কার্যক্রমের শিখন কেন্দ্রগুলোর নোয়াখালী, কুমিল্লা, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলার ১৮টি উপজেলার ৯৪৬টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, ‘বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসনের সময়ে কাজগুলো জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে। সবাই মিলে কাজ করলে লক্ষ্য পূরণে সক্ষম হব।’

বিদ্যালয়ে পাঠ্যবইয়ের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফেনী, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও মৌলভীবাজারের ১ হাজার ৩২১টি বিদ্যালয়ের ১ লাখ ১৫ হাজার ৮২৩টি পাঠ্যবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২৮ হাজার ৭৩৬টি পাঠ্যবই সমন্বয় করা হয়েছে। বাকিগুলোর সমন্বয়ের কাজ চলছে।

আর ফেনী সদর, দাগনভূঞা, সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া, পরশুরাম ও ফুলগাজীর ৫৮২টি বিদ্যালয়ে ৯৭ হাজার ৫৫৩টি পাঠ্যবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার উদ্বৃত্ত পাঠ্যবই থেকে ২৪ হাজার ২৭৬টি বই সমন্বয় করা হয়েছে। বাকিগুলো সমন্বয়ের কাজ চলছে।

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২ হাজার ৩০০টি পাঠ্যবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গুদামে থাকা পাঠ্যবই থেকে সেগুলো সমন্বয় করা হয়েছে। কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ৫৫৯টি বিদ্যালয়ে ১৩ হাজার ৮১০টি পাঠ্যবই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং সেগুলো সমন্বয়ের কাজ চলছে।

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ১০০টি বিদ্যালয়ে ২ হাজার ১৬০টি পাঠ্যবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেগুলো সমন্বয় করা হয়েছে। তবে হবিগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সিলেট জেলায় বন্যায় কোনো পাঠ্যবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে মন্ত্রণালয়েল বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো, আসবাবপত্রসহ অন্যান্য দ্রব্যাদি ও বইয়ের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি এলজিইডি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, উপজেলা প্রকৌশলী, শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তারা সমন্বয়ের মাধ্যমে সঠিকভাবে নিরুপণ করবেন।

বন্যাক্রান্ত জেলাগুলোর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের পোশাক ও ব্যাগের তালিকা ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে। বিদ্যালয়গুলোতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ব্লিচিং পাউডার সংগ্রহসহ অন্যান্য জরুরি কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে হবে।

আরবি/ এইচএম

Link copied!