মাদক সেবনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় শিক্ষার্থীদের শাসালেন অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনীতি-শান্তি হলে এই ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীর নাম রাবিনা ঐশি ও লাবিবা ইসলাম।
সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) মাদক সেবনের সংবাদ প্রকাশের পর সন্ধ্যা ৬টায় হলের সি ব্লকের কয়েকটি রুমে যান তারা দুজন। এসময় তারা শিক্ষার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে চান, অভিযোগপত্রে কে কে সাক্ষর করেছে। শিক্ষার্থীরা ‘হ্যাঁ’ সূচক স্বীকারোক্তি দেন। তখন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী লাবিবা ইসলাম ও একই বিভাগের রাবিনা ঐশি তাদের হুমকি-ধামকি দেন।
হুমকির রেকর্ড প্রতিবেদকের কাছে এসেছে। রেকর্ডে লাবিবাকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি ছাত্রলীগ করে খেলে আসছি, এখনও খেলে দিবো, আসো। তোদের মতো পতিতা না মেয়ে নিয়ে রুমে রুমে যাবো। তোদের সবাইকে দেখে নিবো, সব বের করবো।’
তাঁর সাথে থাকা রাবিনা ঐশি বলেন, ‘গাঁজা লাগবে গাঁজা? গাঁজা দিতে আসছি।’
তাদের এমন উদ্ধত আচরণে হলের শিক্ষার্থীরা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমি রুমে ঘুমাচ্ছিলাম। উঠে দেখি তারা দুজন চিৎকার করছে। সবাইকে শাসাচ্ছেন। তাদের ভয়ে সবাই রুম বন্ধ করে বসে ছিলো। এসব আচরণে আমাদের হলের পরিবেশ নষ্ট হয়। অনেকে সন্ধ্যার পড়াশোনা করে বা বিশ্রাম নেয়। আজকে তাদের আচরণে মনে হয়েছে পুরো হলে বড় কিছু হয়ে গিয়েছে।’
এই বিষয়ে অভিযুক্ত লাবিবার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে হুমকি দিইনি, আমি বাহিরে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলাম। আমার সাথে একজন একটু উল্টাপাল্টা কথা বলছিল, আমি তার সাথে চিল্লাপাল্লা করেছি। আমি হলের কোনো মেয়েদের সাথে চিল্লাপাল্লা করিনি।’
অভিযুক্ত রাবিনা ঐশী বলেন, ‘আগামীকাল আমার পরীক্ষা। আমার পাশের ব্লক থেকে আমার বন্ধুরা আসছিলো। আমাদের মধ্যে নিউজটা নিয়েই কথা হচ্ছিলো। আমি সার্কাস্টিকভাবে জোরে জোরে বলেছিলাম, ‘আমরা তো গাঁজা খাই। গাঁজা লাগবে, গাঁজা?’। তখন আর আমি এক্সাক্টলি কী বলেছি সেটা মনেও নেই।’
এর আগে হলের শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত দুজনসহ চারজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ করেন। হলের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্রে সুনীতি-শান্তি হলের ২১৪ নং কক্ষ দখল করে মাদক সেবনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। অভিযুক্ত অন্য দুজন হলেন ফার্মাসি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আতেফা লিয়া ও একই শিক্ষাবর্ষের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাইশা রহমান রোদিতা।