বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসি ও হাই ভোল্টেজ মেশিনারিজের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ ঘাটতি, অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যয় ও সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। তবে এ নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিদ্যুৎ ঘাটতি এবং বাজেটের অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যয়ের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের চাপ তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরে এসি ও হাই ভোল্টেজ মেশিনারিজ স্থাপন করা হয়েছে, যা নিয়মবহির্ভূত। এ কারণে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, বিভাগগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উন্নয়ন ফি আদায় করে থাকলেও কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই এসি ক্রয় ও ব্যবহার করা হচ্ছে, যা নিয়মবহির্ভূত। এ ছাড়া, অতিরিক্ত এসি ও হাই ভোল্টেজ মেশিনারিজ ব্যবহারের কারণে ভোল্টেজের অস্বাভাবিক ওঠানামা হচ্ছে, যার ফলে অফিসের কম্পিউটার, ল্যাবের যন্ত্রপাতি প্রায়ই নষ্ট হচ্ছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এসব বিষয় বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই স্থাপন করা এসি ও হাই ভোল্টেজ মেশিনারিজের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে সতর্ক করে বলা হয়েছে, নির্দেশ অমান্য করলে যেকোনো দুর্ঘটনার দায়ভার সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা দপ্তরের ওপর বর্তাবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
শাহেদ হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লিখেন, দেশের চলমান বিদ্যুৎ সংকটের কথা ভেবে বলতেই হয় এটা একটা শুভ উদ্যোগ। দেশ ও দশের প্রয়োজনে এভাবে স্যাক্রিফাইসিং মনোভাব নিয়ে আমাদের সকলেই এগিয়ে আসা উচিত। যেহেতু শিক্ষার্থীবান্ধব, দেশ ও সমাজ সচেতন মাননীয় ভিসি ম্যাম এ রকম একটা শুভ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তাই ওনার অফিস এবং বাসভবনের এসির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার মাধ্যমে উক্ত উদ্যোগের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করার সাদর আহ্বান জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, সমস্যা সমাধানে নিরবিচ্ছিন্ন (সামঞ্জস্যপূর্ণ ভোল্টেজের) বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হোক। নয়ত কোনো ক্লাস রুম, ল্যাব রুম কিংবা নির্দিষ্ট কোনো দপ্তর নয়; দেশের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সকল দপ্তরের এসি, হিটার বন্ধ করা হোক।
আরেক শিক্ষার্থী লিখেন, ক্লাসরুম ছাড়া অন্যান্য যত রুমে এসি আছে, সেগুলো আগে বিচ্ছিন্ন করা হোক। তবেই অধিকাংশ সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। মানে এটা একটা ফাজলামো যে, ক্লাসরুমের এসির কারণেই সমস্যা হচ্ছে! হাতে গোনা কয়েকটা ডিপার্টমেন্টে এসি আছে। সেই কয়টা আবার বিচ্ছিন্ন করতে বলতেছে। ওনারা এক একজন রাজা-বাদশা, ওনাদের রুমে এসি থাকবে। আর স্টুডেন্টরা হচ্ছে সব রাস্তার কামলা। যেসব ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকরা একটু শিক্ষার্থীবান্ধব আছে, তাদেরকেও নষ্ট বানানোর চেষ্টা আর কি।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিদ্যুৎ সংকট ও আর্থিক ক্ষতি রোধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :