যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসন ৫ বাংলাদেশি সহ ৪ শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থীর স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে গিয়ে তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন।
শুক্রবার ( ০৪ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্ক রুবিও এই তথ্য প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, অধিকাংশ শিক্ষার্থী সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের চিহ্নিত করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তই নেননি বরং তারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ার পরও ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করায় চাকরির ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন।
এই শিক্ষার্থীরা গত ২ বছর ধরে ফিলিস্তিনে ইসরাইলের বর্বর হামলা ও হত্যাযজ্ঞের বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় ৫ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভিসা বাতিলের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জন সিলেট, ২ জন ঢাকা এবং ১ জন বগুড়া জেলার। এই খবরটি ছড়িয়ে পড়ার পর তারা ব্যাপকভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
বাংলাদেশি আমেরিকান অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী বলেন, তিনি একজন ছাত্রের বিষয়ে জানেন, যার স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল হয়েছে এবং তিনি তার বিরুদ্ধে আইনি সহায়তা প্রদান করছেন। এই শিক্ষার্থী ভিসা বাতিলের বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি একটি সংকটপূর্ণ সময়। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আইনভঙ্গের আশঙ্কা এড়িয়ে চলতে হবে এবং তাদের স্টুডেন্ট ভিসার মেয়াদ নিয়মিতভাবে নবায়ন করতে হবে।’
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় এর ৩ ছাত্র ও ২ সদ্য গ্রাজুয়েটের ভিসা বাতিল করেছে এবং তাদের গ্রেফতার করে ডিপোর্টেশনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে এবং এর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এছাড়া কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব অ্যাক্রন সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরও ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, সরকার এ ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের আগে তাদের জানায়নি। বিদেশি শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ভিসা বাতিলের ফলে তাদের ভবিষ্যৎ জীবন অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলো।
ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করার জন্য এ ধরনের পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের বিরুদ্ধে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এতে আইনগত ও মানবাধিকার বিষয়ক প্রশ্ন উঠেছে।
আপনার মতামত লিখুন :