সারাদেশে গত কয়েক দশক ধরে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের চর্চাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পঙ্গু করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কেবল দলীয়করণ নয়, বরং দুর্বৃত্তায়নও হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতাম তখন শিক্ষক নিয়োগে নিয়মনীতি মানা হতো। কিন্তু গত কয়েক দশকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রভাষক নিয়োগের প্রচণ্ড অনিয়ম শুরু হয়েছে। শুধু দলীয়করণ নয়, দুর্বৃত্তায়ন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পঙ্গু করে দিয়েছে।
রোববার (২২ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে প্রথম বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা সম্মেলন ২০২৪-এ প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
দেশের উচ্চশিক্ষায় বিদ্যমান কিছু সমস্যা তুলে ধরে ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানের ভিন্নতা আছে। আমাদের উচ্চশিক্ষায় যে বড় সমস্যা আছে তা বোঝা যায় যখন উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে শিক্ষার্থীরা যাদের সামর্থ্য আছে তারা বিদেশে চলে যায়। দেশে উচ্চশিক্ষা শেষেও শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ কর্মহীন থেকে যায়। উচ্চশিক্ষিত বেকারের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমস্যা আছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চ শিক্ষার পরিবেশ নেই। এসবের কারণ সবার জানা, দলীয়করণ ও দুর্বৃত্তায়ন। জুলাই-অগাস্টের অভ্যুত্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অভিভাবক শূন্য হয়ে পড়েছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, এ থেকে বোঝা যায় কিভাবে দলীয়করণ হয়েছে। এত অনিয়মের পরও পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বহু শিক্ষক আছেন যারা আন্তর্জাতিক মানের গবেষক।
শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি, উচ্চ শিক্ষায় দলীয়করণ ও অপরাজনীতির উদাহরণ হলো শিক্ষাঙ্গনে মেধার অবমূল্যায়ন। জামাল নজরুল ইসলামের মত আন্তর্জাতিক মানের বিজ্ঞানী যখন কেমব্রিজ ছেড়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে সারাজীবন কাটিয়ে দিলেন, আমরা কী তাকে মূল্যায়ন করতে পেরেছি?
শিক্ষায় বাজেট বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, হঠাৎ করে সেটি হবে না। কাদের দিয়ে শুরু করব? প্রাইমারি শিক্ষা? নাকি বেসরকারি খাতের এমপিওভুক্ত শিক্ষক যারা ১২ হাজার টাকা বেতন পেয়ে বাড়ি থেকে দূরে থাকেন। নাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান বাড়াবো!
আপনার মতামত লিখুন :