গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। যেখানে সপ্তম শ্রেণির ‘ইংলিশ ফর টুডে’ বইয়ে রাখা হয়েছে নতুন এক অধ্যায় ‘অ্যা নিউ জেনারেশন’। সেই অধ্যায়ে রয়েছে আলোচিত দুই তরুণ র্যাপার হান্নান হোসাইন শিমুল এবং মোহাম্মদ সেজানের নাম। আর এটি নিয়েই সম্প্রতি বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, জুলাই-আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের এই দুই শিল্পী তাদের গানের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের জনপ্রিয় গান ‘কথা ক’ এবং ‘আওয়াজ উডা’ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের প্রেরণা জুগিয়েছে এবং তাদেরকে আরও পরিচিত করেছে।
সম্প্রতি পাঠ্যবইয়ে হান্নান-শিমুলের বিষয়টি গণমাধ্যমে উঠে আসে। এরপর চলতি বছরের জাতীয় শিক্ষাক্রমের সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবই - ‘ইংলিশ ফর টুডে’ তে দেখা যায়, সেখানে ‘নতুন প্রজন্ম’ অধ্যায়ের ‘জেনজি বিপ্লব’ শিরোনামে উঠে এসেছে র্যাপার হান্নান ও সেজানের নাম। বইয়ের ৩০ নম্বর পাতার সেই অনুচ্ছেদের তাদের সম্পর্কে লেখা হয়েছে, ‘আপনি কি সেজানের ‘কথা ক’ গানটি শুনেছেন? আগের প্রজন্মের শিল্পীরা গানকে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ব্যবহার করতে ভয় পেলেও সেজান ও হান্নানের মতো শিল্পীরা সে সাহস দেখিয়েছেন।’
অনুচ্ছেদে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘তাদের র্যাপ গানগুলো ২০২৪ সালের জুলাই বিদ্রোহের সংগীতে পরিণত হয়েছিল। নতুন প্রজন্ম আর ভয় পায় না; তারা সাহসী এবং ব্যতিক্রম।’
পাঠ্যবইয়ের নাম আসার খবরে ‘গর্ববোধ’ করছেন বলে জানান ‘আওয়াজ উডা’ র্যাপার হান্নান। শুক্রবার একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘খুবই ভালো লাগার একটি মুহূর্ত। আমরা আগে বইয়ে অনেককে নিয়ে জানতে পারছি। পরের প্রজন্ম আমাদের নিয়ে পড়াশোনা করবে, এটা আমাদের জন্য গর্বের মুহূর্ত।’
‘আওয়াজ উডা’ প্রকাশের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছিল র্যাপার হান্নানকে। ১২ দিন জেল খেটেছেন নারায়ণগঞ্জের এই র্যাপার। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ৬ আগস্ট মুক্তি পান এই তরুণ র্যাপার। বিরুদ্ধ সময়ে ‘কথা ক’ প্রকাশের পর আত্মগোপনে থাকতে হয়েছিল সেজানকে।
সেজান ও হান্নান নিয়মিত কনসার্টে পারফর্ম করছেন। গত বছরের শেষের দিকে তারা ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টে গান পরিবেশন করেন। বর্তমানে তারা নতুন অ্যালবামের কাজ নিয়ে ব্যস্ত, যা শিগগিরই ঘোষণা করবেন।
তবে পাঠ্যবইয়ে র্যাপার সেজান ও হান্নানের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বেশিরভাগ মন্তব্যে দেখা গেছে নেতিবাচক কথা। যেখানে অনেকেই লিখেছেন, ‘বিষয়টি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ঠিক নয়।’ আবার অনেকে এটি বাদ দিয়ে পাঠ্যবই সংশোধন করারও দাবি তুলেছেন।
আপনার মতামত লিখুন :