ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

প্রথমবারের মতো অস্কারে ‘সেরা স্টান্ট’ ক্যাটাগরি, আলোচনায় ‘আরআরআর’

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৬, ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
আরআরআর ছবির পোস্টার। ছবি: সংগৃহীত

২০২৮ সালে অনুষ্ঠিতব্য ১০০তম অস্কার পুরস্কারে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে ‘সেরা স্টান্ট ডিজাইন’ বিভাগ। চলচ্চিত্রের শুরু থেকেই স্টান্ট শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এতদিন তা অস্কার মঞ্চে স্বীকৃতি পায়নি। এবার সেই অবহেলার অবসান ঘটাতে যাচ্ছে আয়োজক সংস্থা অ্যাকাডেমি অব মোশন পিকচার আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস (এএমপিএএস)।

অ্যাকাডেমির প্রধান নির্বাহী বিল ক্রেমার ও সভাপতি জ্যানেট ইয়াং এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘সিনেমার ইতিহাসে স্টান্ট ডিজাইনের ভূমিকা অপরিসীম। এ শিল্পের পেশাদারদের উদ্ভাবনী কাজকে আমরা সম্মান জানাতে চাই।’

মার্কিন গণমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘোষণাটি প্রকাশ্যে আসতেই চলচ্চিত্র জগতে ব্যাপক ইতিবাচক সাড়া পড়ে।

‍‍‘দ্য ফল গাই‍‍’ সিনেমার পরিচালক ডেভিড লিচ নিজেও একজন প্রাক্তন স্টান্ট পারফর্মার। স্টান্টশিল্পীদের স্বীকৃতির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে তিনি সরব ছিলেন। 

এএমপিএএস সূত্রে জানা গেছে, এ বিভাগ চালুর পেছনে লিচসহ হলিউডের একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। অভিনেত্রী ইভা মেন্ডেস ইনস্টাগ্রামে স্বামী রায়ান গসলিংয়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে লেখেন, ‘দ্য ফল গাই‍‍’ সিনেমার মাধ্যমে রায়ান স্টান্ট পারফর্মারদের যে সম্মান দেখিয়েছেন, তারই প্রতিফলন আজকের এ স্বীকৃতি।

অ্যাকাডেমির বিবৃতিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে ভারতীয় সিনেমা আরআরআর-এর কথা। এস এস রাজামৌলি পরিচালিত এ সিনেমায় স্টান্ট ও অ্যাকশন দৃশ্য বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছে। স্টান্ট ডিজাইনকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ায় আরআরআর-কে ‘অনুপ্রেরণাদায়ী উদাহরণ’ আখ্যা দিয়েছে অ্যাকাডেমি।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আরআরআর এমন একটি সিনেমা, যেখানে স্টান্ট ডিজাইন ও ভিজ্যুয়াল গল্প বলার ধরন একসঙ্গে মিশে গেছে। এ ধরনের সিনেমাই আমাদের এ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে।’ 

চলচ্চিত্র বিশ্লেষক কেভিন পোল্যান্ড Awards Radar-কে বলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত মূলত আরআরআর–এর মতো সিনেমার জন্যই। তারা স্টান্ট ডিজাইনের মাধ্যমে গল্প বলার পদ্ধতিকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে।’

এ ছাড়া ‍‍‘মিশন : ইম্পসিবল–ডেড রেকনিং‍‍’ ও ‍‍‘এভ্রিথিং এভ্রিহোয়ার অল এট ওয়ান্স‍‍’–এর মতো সিনেমার স্টান্ট দৃশ্যও এ বিভাগ চালুর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে বলে জানায় অ্যাকাডেমি।

চলচ্চিত্র বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ নতুন বিভাগ চালু হওয়ায় ভবিষ্যতে আরআরআর-এর মতো সিনেমার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পথ আরও প্রশস্ত হবে। ২০২৮ সালের অস্কারে আরআরআর–এর মতো সিনেমাগুলো এ বিভাগে জয়ের অন্যতম দাবিদার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ নতুন বিভাগ চালুর মাধ্যমে চলচ্চিত্র নির্মাণের কারিগরি ও সৃজনশীল দিকগুলোর প্রতি অস্কারের স্বীকৃতি আরও বিস্তৃত হলো।

বহুদিন পর স্টান্টশিল্পীরা তাঁদের প্রাপ্য সম্মান পেতে যাচ্ছেন—এমন খবরে সিনেমাপ্রেমীরা উচ্ছ্বসিত। অ্যাকাডেমির যুগোপযোগী সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে পরিচালক ডেভিড লিচ অ্যাওয়ার্ড র‍্যাডার-এ বলেন, ‘এ শিল্পে যারা জীবন বাজি রেখে কাজ করেন, তাঁদের কাজকে স্বীকৃতি দিতে পেরে অ্যাকাডেমির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’

দীর্ঘদিন ধরে স্টান্ট পারফর্মাররা অস্কারে স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এবার সেই দাবি বাস্তবে রূপ পেল। এখন প্রশ্ন, ২০২৮ সালের অস্কারে নতুন এ বিভাগে প্রথম পুরস্কার কার হাতে উঠবে? তার উত্তর জানতে আরও তিন বছর অপেক্ষা করতে হবে। তবে আরআরআর–এর স্টান্ট টিম এরই মধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।