ছোটপর্দার উজ্জ্বল নতুন মুখ জয়িতা আশরাফ। নাটক আর বিজ্ঞাপনের কয়েকটি কাজেই মন কাড়তে পেরেছেন দর্শকের। বড় পর্দার প্রস্তাব এলেও এখনো সেলুলয়েডের স্বপ্নপূরণ হয়নি তার।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব উপস্থিতি আর সম্পর্ক নিয়ে মন্তব্য করে এরই মধ্যে তিনি ঝড় তুলেছেন নেট দুনিয়ায়। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যক্তিগত জীবন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আর জীবনসঙ্গী নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন জয়িতা।
জীবনসঙ্গী প্রসঙ্গে জয়িতা স্পষ্ট জানান, আয় কিংবা সুদর্শন চেহারা তার কাছে মোটেও বড় বিষয় নয়। তার ভাষায়, ‘আমি এমন একজন ছেলে চাই যে আমার থেকে বেশি আমার ক্যারিয়ারকে গুরুত্ব দেবে। যে আমাকে ভালোবাসবে, আমাকে সময় দেবে এবং আমার ক্যারিয়ারকে নিজের ক্যারিয়ার মনে করে কখনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।’
জীবনসঙ্গী সম্পর্কে তার আরও দাবি, ‘তার খুব বেশি যে আয় থাকতে হবে এমনটা নয়। তাকে যে তথাকথিতভাবে খুব সুদর্শন হতে হবে এমনটাও মনে করি না। একজন ছেলে মনের দিক থেকে ভালো হলে বা একটা মেয়েকে সম্মান করতে পারলে এটাই যথেষ্ট। মেয়েরা সবসময় সম্মানটাই চায়। আস্থা চায়, বিশ্বাস চায়।’
কাজের প্রতি তার ভালোবাসা কতটা গভীর, সেটাও উঠে আসে জয়িতার কথায়। তিনি বলেন, ‘শুরুতেই আমি আমার জীবনসঙ্গীর সঙ্গে কাজের বিষয়ে কথা বলে নেব। আমি আমার কাজকে খুব ভালোবাসি। এই জায়গায় আসার জন্য আমি একা নয়, বরং আমার মা-বাবাও খুব কষ্ট করেছেন। বিশেষ করে মায়ের। এই ক্যারিয়ার গড়তে অনেক বছর ধরে প্রচেষ্টা চালিয়েছি। এত ওঠা-নামার পর আজ এই জায়গায় দাঁড়িয়ে।’
কিন্তু জীবন সবসময় এক গতিতে চলে না। সম্পর্কে সময়ের সঙ্গে মানুষের আচরণে পরিবর্তন আসতে পারে, সে বিষয়ে কী ভাবেন জয়িতা? উত্তরে তিনি জানান, ‘আমি প্রথমে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করব। আমার কঠিন সময়ের কথাগুলো তার সঙ্গে ভাগ করে নেব। সে যদি একজন সু-পুরুষ হয়ে থাকে তবে আশা করব, সে আমার দিকটা বুঝবে। তারও ধারণা থাকবে যে একটা ক্যারিয়ার গড়ে তোলা এত সহজ কথা নয়। তবে তাতেও যদি তিনি না বোঝেন তবে, আমি নিজেও একটু সময় নেব, তাকেও একটু সময় দেব, ভাবনা-চিন্তা করার জন্য। তাতেও যদি তিনি না বোঝেন, সে ক্ষেত্রে আমার মনে হয় আমাদের আলাদা থাকাই শ্রেয়।’
সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন প্রেমিকের প্রসঙ্গ উঠলে, একটু থেমে আবেগে গলা ভিজে ওঠে জয়িতার। স্মৃতি হাতড়ে তিনি বলেন, ‘তিনি দারুণ ছিলেন। তার ক্যারিয়ার, ফ্যামিলি নিয়ে খুবই সিরিয়াস ছিলেন। একজন ছেলের মধ্যে যা যা গুণ থাকা দরকার, সবটাই তার মধ্যে ছিল। কিন্তু আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা ছিল না। একটা সম্পর্কে এই জিনিসটাই থাকা সব থেকে বেশি প্রয়োজন।’ সম্পর্ক রক্ষার চেষ্টা কম ছিল না, তবে সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেলে শেষ পর্যন্ত বিচ্ছেদের পথেই হাঁটতে বাধ্য হন তিনি।
জয়িতার কথা যেন এক নিঃশ্বাসে বলা জীবনের গল্প—যেখানে স্বপ্নের সঙ্গে মিশে আছে আত্মসম্মান আর ভালোবাসার পরিশুদ্ধ আকাঙ্ক্ষা।