ঢাকা বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে কান মনোনয়ন পেল রাজীবের ‘আলী’

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২৫, ০৭:৪১ পিএম
কান-এ মনোনয়ন পেয়ে উচ্ছ্বসিত নির্মাতা আদনান আল রাজীব। ছবি: সংগৃহিত

আঠারো বছরের পথচলার সোনালি ফল মিলল অবশেষে। পরিচালক আদনান আল রাজীবের  ‘আলী’ জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ কান চলচ্চিত্র উৎসবের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে। এটাই প্রথমবার, কোনও বাংলাদেশি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের এমন অভূতপূর্ব সাফল্য! 

সিনেমা ‘আলী’-এর দৈর্ঘ্য ১৫ মিনিট। শুটিং হয় গত ডিসেম্বর, সিলেটের মনোরম লোকেশনে। টানা পাঁচ দিন কাজ করে তৈরি হয় এই স্বপ্নপোতা গল্প।

নির্মাতা আদনান আল রাজীব জানান, এই সিনেমাটি বানানো হয়েছিল উৎসবের লক্ষ্য মাথায় রেখেই, তবে কান যে আসবে—তা ভাবেননি কখনো। বলেন, ‘আমরা শুধু ভালো একটা কাজ করতে চেয়েছিলাম। পরে ভাবলাম, একটা ভিন্ন কিছু বলা যাক, যেটা আমাদের নিজেদের কথাও বটে।’

এই সিনেমা হল রাজীব ও তার সঙ্গীদের প্রতিষ্ঠিত নতুন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘ক্যাটালগ’-এর প্রথম কাজ। ফেব্রুয়ারিতে জমা পড়ে কান উৎসবে। এরপর যা ঘটে, তা যেন রূপকথা। শুক্রবার যখন কানের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে ‘আলী’-এর নাম আসে, সঙ্গে সঙ্গেই তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা ফিল্মপাড়ায়। অভিনন্দনের জোয়ারে ভেসে যান আদনান।

এই খবর জানার পর আনন্দ আর ধরে রাখতে পারেননি রাজীবের দীর্ঘদিনের পথপ্রদর্শক, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।

এক আবেগঘন পোস্টে তিনি লেখেন, ‘প্রায় ১৮ বছর আগে একদিন আদনান মহাখালীতে আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। তার চোখে ছিল স্বপ্ন, যা ছুঁয়ে গিয়েছিল আমায়। কাল যখন সে ফোন করে জানাল “আলী” কান-এ নির্বাচিত হয়েছে, তখন মনে হয়েছিল আমি চাঁদ ছুঁয়ে ফেলেছি।’

এই সাফল্য উদ্‌যাপন করতেই সোমবার ‘আলী’-এর টিমকে ডেকে নেয় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সেখানে ফারুকী বলেন, শর্টফিল্ম  ‘আলী’ দিয়ে আমরা একটি সফট পাওয়ারের সূচনা করতে চাই। পৃথিবীর যেসব দেশ কানে শর্টফিল্ম পাঠায়, তারা প্রতিনিধিদল নিয়ে যায়, নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। আমরাও ধীরে ধীরে সে পথে এগুতে চাই।’

মন্ত্রণালয় জানায়, ‘আলী’-এর সদস্যদের যাতায়াত ও থাকা–খাওয়ার ব্যয় তারা বহন করবে। এমনকি সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করা আলআমিনের যাতায়াতের ব্যবস্থাপনায়ও সহায়তা করছে তারা, যদিও তা সরকারি নয়, বেসরকারি উদ্যোগে হচ্ছে।

মঞ্চের আড়ালে যারা থাকেন, তাদের কৃতজ্ঞতা জানাতেও ভোলেননি রাজীব। এক মন্তব্যে তিনি লেখেন, ‘আপনি আমাকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শেখার সুযোগ না দিলে এটা হতো না। আজ যা হয়েছি, সবই আপনার দিকনির্দেশনার ফল।’

এভাবেই যেন গুরু–শিষ্যের সম্পর্ক ছুঁয়ে যায় সিনে-আকাশের এক নতুন নক্ষত্রে। এখন শুধু অপেক্ষা, ২৪ মে কানের আকাশে বাজে কি না ‘আলী’-এর জন্য বিজয়ের সুর।