বাংলাদেশের সিনেমার জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেত্রী আনোয়ারার সঙ্গে দীর্ঘদিন দেখা হয় না চলচ্চিত্রের আরেক গুণী অভিনেত্রী রাশেদা চৌধুরীর। দুজনই মূলত মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেই দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। আনোয়ারা ঢাকার বনশ্রীতে বসবাস করেন তার মেয়ে চিত্রনায়িকা মুক্তির সঙ্গেই।
অন্যদিকে রাশেদা চৌধুরী ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকায় বসবাস করেন। দীর্ঘদিন তাদের একসঙ্গে দেখা হয় না, কারণ এখন আর আগের মতো সিনেমাতেও তাদের কাজ করা হয়ে উঠে না। আনোয়ারা দীর্ঘদিন সিনেমাতে কাজ করছেন না। স্ট্রোক করার পর মূলত তার মেয়ে মুক্তির পরম সেবাতেই এখন অনেকটাই সুস্থ।
যে কারণে আনোয়ারা এখন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারছেন। কিছুদিন আগেও আনোয়ারা ‘ট্র্যাব’ অ্যাওয়ার্ড ও ‘বাবিসাস’ অ্যাওয়ার্ড-এ ‘আজীবন সম্মাননা লাভ করেন। পেয়েছেন বহুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
অন্যদিকে রাশেদা চৌধুরীর মনে একটা আক্ষেপ রয়েই গেল অনেক ভালো ভালো সিনেমাতে খুব ভালো চরিত্রে অভিনয় করেও আজ অবধি তার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারই পাওয়া হলো না। দু’দিন আগেই মনের অনেক কথা শেয়ার করতেই রাশেদা চৌধুরী তার নিজের হাতে রান্না করে আনোয়ারার কাছে যেন সময় কাটাতে।
রাশেদাকে দেখেও ভীষণ খুশি হন আনোয়ারা। আনোয়ারা বলেন, ‘রাশেদাকে দেখে একটা কথাই বারবার মনে হচ্ছিল আমাদের সেই ফেলে আসা সোনালি দিনগুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেল।
তারপরেও রাশেদাকে দেখে খুব খুশি হয়েছি। তার পরম আন্তরিকতায় আগেও মুগ্ধ হয়েছি, আবারও শ্রদ্ধা ভালোবাসায় মনে শান্তি দিয়ে গেল। রাশেদা চৌধুরী বলেন,‘ শ্রদ্ধেয় আনোয়ারা আপা আমাদের সিনেমার গর্ব, জীবন্ত কিংবদন্তি তিনি। কয়েকদিন আগে মুক্তি বলেছিল বাসায় যেতে। কিন্তু তখন আমি একটু অসুস্থ ছিলাম।
তাই সময় করে আনু আপাকে দেখতে গেলাম। আমাকে দেখে খুব খুশি হয়েছেন তিনি। তিনি আমাকে খুব আদর করেন, স্নেহ করেন। আমার সৌভাগ্য যে আমি তার সঙ্গে গরিবের বউ’, ‘দুই বধূ এক স্বামী, জমিদার’সহ আরও কয়েকটি সিনেমায় কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।
আমি তারসঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করে নিজেকে সমৃদ্ধ করেছি। এমন সৌভাগ্য সবার হয় না। ধন্যবাদ মুক্তিকে এই সুন্দর আয়োজন করার জন্য। আপনু আপা, মুক্তি ও তার সন্তানের জন্য অনেক অনেক দোয়া।’
উল্লেখ্য, রাশেদা চৌধুরী অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ছিল মির্জা সাখাওয়াতের ‘ভাঙ্গন’ এই সিনেমাকে ঘিরেও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে তার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু হলো না।
এ ছাড়াও এর আগে মুক্তি প্রাপ্ত ‘বিচ্ছু বাহিনী’, ‘ক্ষুদে যোদ্ধা’, ‘ম্যাডাম ফুলি’, ‘বিদ্রোহী সালাহউদ্দিন’, ‘স্বপ্নের বাসর’সহ কাজী হায়াতের কয়েকটি সিনেমাতে অভিনয় করেও এই পুরস্কার পাওয়া নিয়ে তার প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু হলো না। এখন তো সিনেমাতেই কম অভিনয় করছেন। এ জীবনে আর প্রত্যাশা নেই তার এই পুরস্কারপ্রাপ্তির।
আপনার মতামত লিখুন :