ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪

যেমন বাংলাদেশ চান তারকারা

রুহুল আমিন ভূঁইয়া

প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২৪, ০৪:০১ পিএম

যেমন বাংলাদেশ চান তারকারা

মুক্তি, সিয়াম ও নওশাবা । ছবি: সংগৃহীত

ভোটাধিকার, বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত, মানবিক ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিপ্লব করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে তরুণরা। নতুনভাবে জেগে ওঠা অন্যরকম এক বাংলাদেশ। দুর্নীতি, অর্থ পাচার, বৈষম্য, হানাহানি আর রাজনৈতিক দ্বন্ধে যখন পুরো বাংলাদেশ বিপর্যস্ত তখনই হারকিউলিস বেশে ত্রাতা বাংলার ছাত্র-জনতা। হয়েছে তারুণ্যের জয়। নতুন ভোর, নতুন সূর্য। বহুল প্রতীক্ষিত জয়ে যেমন বাংলাদেশ চান তারকারা।

শান্তিময় বাংলাদেশ চাই
জনপ্রিয় অভিনেতা অমিত হাসান। অভিনয় ক্যারিয়ারের পার করেছেন ৩৩ বছর। এখনো নিয়মিত অভিনয় করছেন তিনি। সমৃদ্ধ আগামীর বাংলাদেশের প্রত্যয় নিয়ে এই অভিনেতা বলেন, আমাদের দেশের নাম বাংলাদেশ। আমরা সবাই বলি সোনার বাংলাদেশ। যেখানে কোনো হিংসা-বিদ্বেষ থাকবে না। সবাই বুকে বুক মিলিয়ে কাজ করতে পারব। শান্তিময় বাংলাদেশ চাই। চাই সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশে জনগণ হবে সব ক্ষমতার উৎস। শান্তিময় বাংলাদেশ চাই। চাই সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশে জনগণ হবে সব ক্ষমতার উৎস। গণতান্ত্রিক সুশাসন চাই। দলমত নির্বিশেষে একটা সুন্দর দেশ হবে একজন নাগরিক হিসেবে এটাই কাম্য।

দুর্নীতিমুক্ত নিরাপদ বাংলাদেশ চাই
ঢালিউডের নন্দিত অভিনেত্রী রুমানা ইসলাম মুক্তি। বেশ কিছু চলচ্চিত্র ও নাটকে সাবলীল অভিনয় করে মন জয় করে নেন দর্শকদের। নিরাপদ, সুখী, সুন্দর, উন্নত, সমৃদ্ধ ও একটি শান্তির বাংলাদেশের প্রত্যাশা জানিয়ে ‘চাঁদের আলো’খ্যাত এই চিত্রনায়িকা বলেন, দুর্নীতি, সন্ত্রাস-মাদকমুক্ত মানবিক বাংলাদেশ চাই। প্রতিটি ঘরে ঘরে শান্তি বিরাজ করবে এমন বাংলাদেশ দেখতে চাই। দেশের জন্য উপযুক্ত একজন সরকার চাই। যে দেশের উন্নয়নের কথা চিন্তা করবে। যেই ক্ষমতায় থাকুক না কেন প্রতিটি সেক্টর ঘুষ মুক্ত করতে হবে। ঘুষ শব্দটাই যেন মানুষ ভুলে যায় এমন বাংলাদেশ চাই। দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে হবে। খুন-রাহাজানি কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। সবাই যাতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারে। মোট কথা মানুষের বাকস্বাধীনতা, যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মের অধিকার, ক্রয়ক্ষমতা থাকতে হবে সবার আয়ত্তের মধ্যে। সবক্ষেত্র দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। এমন একটি নিরাপদ বাংলাদেশ চাই।

দেশ হোক জনগণের
ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই সরব ছিলেন চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ। অন্তর্জালের পাশাপাশি প্রতিবাদে রাজপথেও নেমেছিলেন তিনি। দেশ হোক জনগণের জানিয়ে তিনি বলেন, এতদিন আমরা যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখতাম সেটি গড়ার এখনই সময়। যেখানে দুর্নীতি থাকবে না। নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে দেশর স্বার্থের কথা চিন্তা করবে। সবাই নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবে এমন একটি বাংলাদেশ চাই। দেশ হোক জনগণের জন্য, জনগণের উন্নয়নে। সমৃদ্ধি ও উন্নয়নের পথে দেশ এগিয়ে চলুক নব নব সম্ভাবনায়।

চলচ্চিত্র হোক স্বাধীন
চিত্রনায়ক কায়েস আরজু বলেছেন, সব ধর্মের মানুষ স্বাধীন ভাবে বাঁচতে পারবে এমন সুন্দর একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই। যেখানে সবার মনের কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে। আর হিংসা ভেদাভেদ চাই না। যোগ্যরাই একমাত্র যোগ্য পদে থাকার স্বাধীনতা পাবে। আমার চলচ্চিত্র অবহেলিত। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে গল্প বলার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা সীমিত হয়ে গিয়েছিল। একজন নির্মাতা যেভাবে সিনেমার গল্প বলতে চান, সেটি অনেক সময় করা যায়নি। একজন শিল্পী বা নির্মাতা কোথায় শেষ করবেন, সেটি তার স্বাধীনতা। গল্প বা চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে তিনি যে কোন চরিত্র সংযোজন বা বিয়োজন করতে পারেন। কিন্তু চলচ্চিত্রে বাকস্বাধীনতা ছিল না। এখন গল্প বলতে আর বাঁধা থাকবে না। বিবেকবান, সত্য ও ধর্ম নিরপেক্ষ মানবিক দেশ গড়ার কারিগর হয় এমন বাংলাদেশ দেখতে চাই।

উৎকণ্ঠা দূর করতে হবে
অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। তিনি একাধারে মঞ্চ, নাটক, বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তার এক যুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ার। তিনি বলেন, তারুণ্যের জয় দিয়েই আজকের বাংলাদেশের সূচনা হয়েছিল। এখনকার জয়ও তারুণ্যের। তারুণ্য বলতে বয়সসীমা দেখছি না। সব শ্রেণির মানুষের মনের ভেতরে যে তারুণ্যের দেশ প্রেম রয়েছে আমি সেটা বুঝি। সেটি আমার মা, মেয়ে এবং রাস্তায় এতদিন নিরলশ ভাবে নিরাপত্তা দিয়েছেন তারা। এই তারুণ্যতা আমি সকলের ভেতরই দেখি। অভ্যন্তরীণ জয়ের কথা বলি। সেই তারুণ্যের জয় ছিল, আছে ও থাকবে। সেটি আরও একবার প্রমাণিত হয়েছে। এই জয় ধরে রাখাটাও একটা যুদ্ধ। সেটি আরও বেশি জটিল ও সংবেদনশীল। সেই সময়ের ভেতর দিয়ে আমরা যাচ্ছি। এই জয়ে সাধারণ মানুষের মতো আমিও আনন্দিত এবং গর্বিত। ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছি। এটি আমাদেরই ধরে রাখতে হবে। অগ্রজতের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ করতে হবে। সংবেদনশীল ও সহমর্মী বাংলাদেশ চাই। যেখানে আমার বাকস্বাধীনতা থাকবে। অবাদ মত প্রকাশ করতে পারব। প্রতিটি মানুষ তার মৌলিক অধিকার পাবে। কাউকে ভয়ে বাঁচতে হবে না। এমন একটি দেশ গড়তে হবে যাতে আমাদের দেখে অন্য দেশ অনুসরণ করতে পারে। সবার সহযোগিতায় তেমনই একটি দেশ গড়তে হবে। সকলের উৎকণ্ঠা দূর করতে হবে। কিছুদিন আগেও আমরা রাজাকার গালি শুনতাম। এমন কিছু যাতে ভবিষ্যতে আর পুনরাবৃত্তি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিল্প-সংস্কৃতিতে বাক স্বাধীনতা থাকতে হবে।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!