সিনেপ্লেক্স যুগে প্রবেশ করলো দেশের সবচেয়ে বড় প্রেক্ষাগৃহ যশোর মণিহার সিনেমা হল। সিনেমাপ্রেমীদের জন্য দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে এই প্রথম মণিহার কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৬৬ আসনের সিনেপ্লেক্স। যেটি আজ থেকে উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে দর্শকের জন্য উন্মুক্ত করা হল। শুক্রবার সকাল ১০টায় ফিতা কেটে সিনেপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন এস ইসলাম এন্ড সন্স এর পরিচালক নেহাল নাদির। আধুনিক সর্বশেষ প্রযুক্তির সিলভার স্ক্রিনে ডলবি স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেমে এ সিনেপ্লেক্সে সিনেমা উপভোগ করে তৃপ্ত হবেন দর্শকরা- বলছেন মণিরহার কর্তৃপক্ষ।
সাংস্কৃতিক তীর্থপিঠ যশোরে ১৯৮৩ সালের ৮ ডিসেম্বর “জনি” সিনেমা প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে ১৪শ’ ৩০ আসন নিয়ে যাত্রা শুরু করে মণিহার প্রেক্ষাগৃহ। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত সিনেমা হলটি দ্রুতই জনপ্রিয়তা পায়। দক্ষিণ এশিয়ার সেরা সিনেমা হলের তকমাও পায় এ প্রেক্ষাগৃহটি। সিনেমা মুক্তির দিনে হাজির হতেন জনপ্রিয় অভিনেতা, অভিনেত্রীরা। কালের বিবর্তনে সিনেমা শিল্পে ভাটার টান শুরু হলে দর্শক সংকটে পড়ে মণিহারও। সময়ের চাহিদায় টিকে থাকার তাগিদে নতুন আঙ্গিকে যশোরের ঐতিহ্যের স্মারক ১৪ শতাধিক আসনের মণিহারের মূল অবকাঠামো ঠিক রেখে দ্বিতীয় তলায় এক কর্ণারে মণিহার সিনেপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। দর্শকদের সুবিধার্থে থাকবে অনলাইন টিকিট ব্যবস্থাপনা। এছাড়া সর্বানুধিক প্রযুক্তি সংযোজিত এ সিনেপ্লেক্সে ছবি দেখে দর্শকরা পূর্ণ বিনোদন উপভোগ করতে পারবেন বলে দাবি কর্তৃপক্ষের। সফল হলে মণিহারের মধ্যে আরো দুটি সিনেপ্লেকের নির্মাণ পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন মণিহার সিনেমা হলের স্বত্ত্বাধিকারী জিয়াউল ইসলাম মিঠু।
মণিহার সিনেমা হলের ম্যানেজার ফারুক হোসেন জানান, আশাকরি আধুনিক সর্বশেষ প্রযুক্তির সিলভার স্ক্রিনে ডলবি স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেমে এ সিনেপ্লেক্সে সিনেমা উপভোগ করে তৃপ্ত হবেন দর্শকরা।
এদিকে মণিহার সিনেপ্লেক্স চালু হওয়ায় খুশি দর্শকরা। তাদের আশা সিনেমার আধুনিক সকল সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন তারা।
শুক্রবার সকাল ১০ টায় সিনেপ্লেক্সে সিনেমা দেখতে আসেন শিশির মন্ডল। বলেন, এর আগে হলে অনেক সিনেমা দেখেছি। তবে আজকের সিনেমা দেখা অন্যরকম। যেমন স্কিন। তেমন সাউন্ড সিসটেম।
শহরের নীলগঞ্জ তাঁতিপাড়া থেকে সিনেমা দেখতে এসেছেন বাবুল শিকদার। বলেন, মণিহার সিনেমা হলে প্রথম দিন জনি সিনেমা চলেছিল। সেটি দেখেছিলাম। আজ সিনেপ্লেক্সে দেখাম শাকিব খান অভিনীত ছবি দরদ। বাবুল শিকদার বলেন, ইতিহাসের অংশ হিসাবে প্রথম দিন ৩০০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ছবি দেখলাম। খুব ভালো লেগেছে।
দর্শকের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় যশোরের ২৯টি সিনেমা হলের মধ্যে ২৩টি বন্ধ হয়েছে। মণিহারসহ চালু ৬টিই দর্শক শূণ্যতার কারণে বন্ধ হওয়ার পথে। এ অবস্থায় মণিহার সিনেপ্লেক্স নির্মাণে সন্তোষ প্রকাশ করে আরো আধুনিকায়নে সহযোগিতার কথা জনিয়েছেন যশোর জেলা তথ্য অফিসের সিনিয়র তথ্য অফিসার, মো. রেজাউল করিম।
শুক্রবার সকাল ১০ টায় ফিতা কেটে সিনেপ্লেক্সএর উদ্বোধন করেন যশোর মণিহার সিনেমা হলের স্বত্ত্বাধিকারী জিয়াউল ইসলাম মিঠুর পুত্র এস ইসলাম এন্ড সন্স লিমিটেডের পরিচালক নেহাল নাদির। বলেন, আধুনিক সর্বশেষ প্রযুক্তির সিলভার স্ক্রিনে ডলবি স্যারাউন্ড সাউন্ড সিস্টেমে এ সিনেপ্লেক্সেএর মাধ্যমে দর্শকদের মনোরঞ্জন দেওয়া।
এসময় উপস্থিত ছিলেন যশোর মণিহার সিনেমা হলের স্বত্ত্বাধিকারী জিয়াউল ইসলাম মিঠু, যশোর মণিহার সিনেমা হলের ব্যাবস্থাপক ফারুক হোসেন, তোফাজ্জেল হোসেনসহ অন্যান্যরা।
যশোর শহরের পুরাতন বাস টার্মিনালে ৪ বিঘা জমির উপর দৃষ্টি নন্দন মণিহার প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণ করেন প্রয়াত ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম। আর এ প্রেক্ষাগৃহের নকশা করেছিলেন স্থপতি মোহাম্মদ হানিফ। যা এক পলক দেখার জন্য দেশ-বিদেশের মানুষ এখনও ছুটে আসেন।
আপনার মতামত লিখুন :