সম্প্রতি গাজীপুরের পূবাইলের মনোরম লোকেশনে রাজীব মণি দাসের রচনা এবং নাজনীন হাসান খানের পরিচালনায় নির্মিত হয়েছে তিনটি একক নাটক। নাটকগুলো তিনটি হচ্ছে ‘জামাই ৪২০’, ‘মাথা গরম পরিবার’ ও ‘কিস্তি নিলে জামিন নাই’। নাটকগুলোতে অভিনয় করেছেন সময়ের সুপার কমেডি শক্তিশালী অভিনেতা তারিক স্বপন, আঁখি চৌধুরী, আমিন আজাদ, সীমানা শিলা, শাহেলা আক্তার, ফরিদ হোসেন, এবি রশিদ, গালিব প্রমুখ।
এ প্রসঙ্গে নাট্যকার রাজীব মণি দাস বলেন, ‘সময়ের চাহিদা ও দর্শকদের কথা বিবেচনা করে এবার একটু স্যাটায়ার ধাঁচের গল্প লেখা। প্রতিটি গল্পই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ধারণ করে লেখা। যেখানে শুধু কমেডি করা হয়নি, বলা হয়েছে সমাজের গল্প।’
নির্মাতা নাজনীন হাসান খান বলেন, ‘দর্শকরা আনন্দ পাক, সেটা সব পরিচালকই চায়। যদিও সামাজিক এবং সিরিয়াস গল্প আমার বেশি পছন্দ, তবুও এবার নির্মাণে কমেডির ছোঁয়া বেশি রয়েছে। পরিবর্তনশীল সমাজ ব্যবস্থায় দিনশেষে দর্শকের রুচির কথাও বিবেচ্য। বরাবরই নির্মাণের ক্ষেত্রে সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি আমার ফার্স্ট প্রায়োরিটিতে থাকে। এবারও সেটি আছে এবং ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে।’
অভিনেতা তারিক স্বপন পরিচালক এবং নাট্যকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘এতদিন সহ-অভিনেতা হিসেবে দর্শকদের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। প্রথমবার এককভাবে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করলাম, আসলে আমি আমার অনুভূতির কথা কি বলব, এক কথায় অসাধারণ। যারা আমাকে এই ভালোবাসা দিয়েছেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আর সবার কাছে দোয়া ও ভালোবাসা চাচ্ছি। যেন ভবিষ্যতে আরও ভালো কাজ উপহার দিতে পারি।’
জামাই ৪২০ গল্পে দেখা যায়, টাকা-পয়সা থাকা সত্ত্বেও পুরনো কিপ্টামির অভ্যাস ছাড়তে পারে না জামাই। বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করে দেশে এসেও শ্বশুর বাড়িতে খালি হাতে যায় তারিক স্বপন। একমাত্র শালীর জন্য কিছু না নেওয়ায় শালী সকলের সামনে লজ্জা দেয় দুলাভাইকে। এতেও দুলাভাইয়ের বিবেকবোধ জাগ্রত হয় না। নানান চড়াই উৎরাইয়ের পর সে তার কিপ্টামির অভ্যাস থেকে বের হয়।
মাথা গরম পরিবার গল্পে দেখা যায়, শান্তশিষ্ট ছেলেটি হঠাৎ করেই শুধু শুধু বউয়ের সাথে ঝগড়া লাগে। বউও তার ছেড়ে কথা বলে না। একের পর এক ঝগড়া থেকে হাতাহাতি, মাথা ফাটাফাটি পর্যন্ত ঘটে যায়। বিচার যায় চাচার কাছে। চাচী আবার প্যাচ লাগায়। এত কিছুর পরও তাদের মধ্যে ভালোবাসার বোধ খুবই টানে নিজেদের। তবুও কেন ঝগড়া হয় সেইটা বুঝতে পারে না। বিচার কার্য করতে গিয়ে চাচা জানায় এইটা তাদের বংশীয় কারণ হতে পারে। তার বড় ভাইয়েরও নাকি মাথা গরম ছিল। ভাতিজা-ভাতিজা বউ তাদের ভুল বুঝতে পারে এবং অনুশোচনা বোধ করে নিজেরাই লজ্জিত হয়।
কিস্তি নিলে জামিন নাই নাটকের গল্পে দেখা যায়, প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে গ্রামের মানুষ কিস্তি নেয়। কিন্তু দেয়ার বেলায় অবহেলা করে। কিস্তির স্যার কাসেম তার দায়িত্বে যথেষ্ট সচেতন এবং সৎ। সে চেষ্টা করে কিস্তির টাকা যেন সবাই যথাযথ স্থানে ব্যবহার করে স্বাবলম্বী হতে পারে। কিন্তু কে শুনে কার কথা। লোকজন তার কিস্তির টাকা ঠিক মতো দেয় না, আর তাই সেও বাধ্য হয়ে ছাগল গরু নিয়ে আসে বাড়ি থেকে। গ্রামের এক চাচী তো টাকার চাপে স্ট্রোক করে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
চারিদিকে রটে যায় চাচী মারা গেছে। আর এলাকার জনগণ ক্ষিপ্ত হয়ে কাসেমকে গাছের সাথে বেধে রেখে বেধড়ক পিটায়। এমনকি ভালোবাসার মানুষও তাকে ভুল বুঝে। একপর্যায়ে চাচী ঘুম থেকে উঠে এসে কাসেমের এই অবস্থা দেখে সবাইকে বকাবকি করে জানায় যে, তার হাই প্রেসার হইছিল, আর সময় মতো কাসেম যদি তার সেবা যতœ না করতো, সে এতোক্ষণে মারাও যেতে পারতো। কথাগুলো শুনে গ্রামের সবার ভুল ভাঙ্গে এবং কাসেমের কাছে ক্ষমা চায়।
আপনার মতামত লিখুন :